মালয়েশিয়ার উচ্চ আদালত শুক্রবার (৯ ফেব্রুয়ারি) কেলান্তান রাজ্য প্রণীত ১৬টির বেশি শরিয়াহ আইনকে অসাংবিধানিক ঘোষণা করে ঐতিহাসিক রায় দিয়েছেন। এই রায় মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশটির আইনি ব্যবস্থায় সুদূরপ্রসারী প্রভাব ফেলতে পারে বলে আশা করা হচ্ছে। খবর আলজাজিরার।
মালয়েশিয়ার আইন পরিচালিত হয় দুটি সমান্তরাল ধারায়। ধর্মনিরপেক্ষ আইনগুলোর পাশাপাশি ইসলামিক ফৌজদারি ও পারিবারিক আইনগুলো মুসলিমদের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হয়। রাজ্যের আইনসভাগুলো ইসলামিক আইন প্রণয়ন করে আর ধর্মনিরপেক্ষ আইনগুলো মালয়েশিয়ার পার্লামেন্টে পাস হয়।
ফেডারেল আদালতের ৯ সদস্যের একটি বেঞ্চের সংখ্যাগরিষ্ঠের সিদ্ধান্তের ভিত্তিতে কেলান্তান রাজ্যের ১৬টি শরিয়াহ অপরাধ আইনকে ‘অকার্যকর এবং অবৈধ’ বলে ঘোষণা করা হয়। এগুলোর মধ্যে– সমকামিতা, অজাচার, জুয়া, যৌন হয়রানি এবং উপাসনালয়কে অপবিত্র করার আইনও আছে।
মালয়েশিয়ার প্রধান বিচারপতি টেংকু মাইমুন তুয়ান মাত বলেছেন, এসব আইন প্রণয়ন করার কোনো কর্তৃত্ব কেলান্তান রাজ্যের নেই, যেহেতু ওই বিষয়বস্তু পার্লামেন্টের আইন প্রণয়ণের ক্ষমতার আওতায় ছিল। ওই বিধানগুলোর সারাংশ ফেডারেল তালিকার বিষয়গুলোর অধীন, এসব আইন শুধু পার্লামেন্ট প্রণয়ন করতে পারে বলেন তিনি। মালয়েশিয়ার উত্তরাঞ্চলীয় রাজ্য কেলান্তান থাইল্যান্ডের দক্ষিণ সীমান্তবর্তী। রাজ্যটির ক্ষমতাসীন দল মালয়েশিয়া ইসলামিক পার্টি কঠোর ইসলামিক শরিয়াহ আইন প্রবর্তনের পক্ষে।
কেলান্তানে ২০২১ সালে কার্যকর হয়েছিল এসব শরিয়াহ আইন। রাজ্যের একজন আইনজীবী এবং তাঁর মেয়ে আইনগুলোর সাংবিধানিক ভিত্তি চ্যালেঞ্জ করে মামলা করেন। রক্ষণশীল মুসলিমদের মধ্যে আলোড়ন সৃষ্টি করেছিল এই মামলা। মালয়েশিয়ায় ইসলাম বা শরিয়াহ আইনকে এই মামলা দুর্বল করতে পারে বলে আশঙ্কা ছিল তাদের।
এই রায়ের পর মালয়েশিয়ার ধর্মবিষয়ক মন্ত্রী মোহাম্মদ নাঈম মোখতার এক বিবৃতিতে বলেছেন, সরকারের ইসলামী কর্তৃপক্ষ শরিয়াহ আদালতকে শক্তিশালী করার জন্য অবিলম্বে পদক্ষেপ নেবে। ইসলামী বিচার বিভাগ ফেডারেল সংবিধানের অধীনে সুরক্ষিত রয়েছে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
প্রবাস টাইমে লিখুন আপনিও। প্রবাসে বাংলাদেশি কমিউনিটির নানা আয়োজন, ঘটনা-দুর্ঘটনা, প্রবাসীদের সুযোগ-সুবিধা, সমস্যা-সম্ভাবনা, সাফল্য, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের খবর, ছবি ও ভিডিও আমাদের পাঠাতে পারেন [email protected] মেইলে।
Discussion about this post