ঢাকা উত্তরের একটি আবাসিক হোটেলে অবৈধ মাদক কোকেন উদ্ধারের পর একজন তাঞ্জানিয়ান নাগরিককে গ্রেপ্তার করেছে এয়ারপোর্ট আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়নের ডগ স্কোয়াড ও মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর। বৃহস্পতিবার (২৫ জানুয়ারি) সন্ধ্যায় অভিযান চালিয়ে ওই নাগরিকের কাছ থেকে ২০০ গ্রাম কোকেন উদ্ধার করা হয়।
বিমানবন্দর আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়নের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোহাম্মদ জিয়াউল হক জানান, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে একটি যৌথ দল উত্তরার হোটেল এফোর্ড ইন এ অভিযান চালায়। এ সময় তাদের সঙ্গে বিমানবন্দর এপিবিএনের ডগ স্কোয়াড অংশ নেয়। হোটেলটির দোতলায় ১০২ নম্বর কক্ষে ছিলেন তাঞ্জানিয়ার নাগরিক মোহামেদ আলি (৫৫)। আভিযানিক দল প্রথমেই তাকে আটক করে।
এরপর তাকে মাদকের ব্যাপারে জিজ্ঞাসাবাদ করলে তিনি অস্বীকার করেন। এ সময় সঙ্গে থাকা এপিবিএন ডগ স্কোয়াডের সহায়তায় মোহাম্মেদ আলির কক্ষটিতে তল্লাশি চালানো হয়।
তল্লাশি চলাকালে এপিবিএন ডগ স্কোয়াডের ডগ অলি বিদেশির সঙ্গে থাকা কালো একটি ব্যাগে মাদক রয়েছে বলে তার হ্যান্ডলারকে সতর্ক করে। পরবর্তীতে ম্যানুয়ালি ব্যাগটি সার্চ করলে তার ভেতরে বিশেষ কায়দায় লুকায়িত অবস্থায় ২০০ গ্রাম কোকেন উদ্ধার করা হয়, যার বাজারমূল্য প্রায় ২৫ লাখ টাকা। আটককৃত মোহাম্মেদ আলি গত ২০ জানুয়ারি আদ্দিস আবাবা-দোহা হয়ে ঢাকায় আসেন।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আরও জানান, ২০১৭ সালে বিমানবন্দর এপিবিএনের ডগ স্কোয়াড হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে দায়িত্ব পালন শুরু করে। শুরুতে ৮টি ডগ দিয়ে শুরু হলেও বর্তমানে ২২টি ডগ রয়েছে এপিবিএনের। এসব ডগ বিস্ফোরক এবং মাদক উদ্ধারে পারদর্শী।
দেশের ইতিহাসে সলিড কোকেনের সবচেয়ে বড় চালান জব্দ
এর আগে গতকাল বুধবার দেশের ইতিহাসে সলিড কোকেনের সবচেয়ে বড় চালান জব্দ করেছে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর (ডিএনসি)। কাতার এয়ারওয়েজে আফ্রিকার মালাওয়ের এক নারী ৮ কেজি ৩০০ গ্রাম কোকেনের চালানটি বাংলাদেশে নিয়ে আসেন, যার আনুমানিক বাজারমূল্য প্রাায় ১০০ কোটি টাকা।
গতকাল বুধবার রাতে ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে নোমথেনডাজো তাওয়েরা সোকো নামে ওই নারীকে কোকেনের চালানসহ গ্রেপ্তার করা হয়।
পুলিশ জানায়, নোমথেনডাজো তাওয়েরা সোকো নামে এক বিদেশি নারীকে বিমানবন্দরের নিচ তলায় ভিসা অন অ্যারাইভাল ডেস্কে দীর্ঘক্ষণ অবস্থান করতে দেখা যায়। গতিবিধি সন্দেহজনক হওয়ায় তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। এ সময় লাগেজে অবৈধ মাদক কোকেন আছে বলে স্বীকার করেন তিনি। পরে তার লাগেজের ভেতরে বিশেষভাবে রাখা ৮ কেজি ৩০০ গ্রাম কোকেন জব্দ করা হয়।
এ কর্মকর্তা জানান, নোমথেনডাজো তাওয়েরা সোকো আফ্রিকান দেশ মালাওয়ের নাগরিক। তিনি প্রথমে মালাও থেকে ইথিওপিয়া যান। পরে ইথিওপিয়া থেকে যান দোহাতে। পরে দোহা থেকে কাতারের এয়ারলাইন্সের একটি ফ্লাইটে বাংলাদেশে আসেন। আগামী ৪ ফেব্রুয়ারি তার আবারও মালাও যাওয়ার কথা ছিল।
জিজ্ঞাসাবাদে সোকো জানায়, সোকো পেশায় একজন নার্স। তিনি মূলত কোকেনের এই চালানের বহনকারী। ২০২৩ সালে তিনি প্রথম বাংলাদেশে এসেছিলেন। সে সময়ের মতো এবারও তিনি বাংলাদেশের একটি গার্মেন্টসের আমন্ত্রণপত্র নিয়ে আসেন। বাংলাদেশে আরেক বিদেশি নাগরিকের কাছে চালানটি পৌঁছে দিয়ে দেশে ফেরার কথা ছিল তার।
প্রবাস টাইমে লিখুন আপনিও। প্রবাসে বাংলাদেশি কমিউনিটির নানা আয়োজন, ঘটনা-দুর্ঘটনা, প্রবাসীদের সুযোগ-সুবিধা, সমস্যা-সম্ভাবনা, সাফল্য, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের খবর, ছবি ও ভিডিও আমাদের পাঠাতে পারেন [email protected] মেইলে।
Discussion about this post