ময়মনসিংহে যাওয়ার জন্য ভুলবশত লালমনি এক্সপ্রেস ট্রেনে উঠে ধর্ষণের শিকার ষষ্ঠ শ্রেণির শিক্ষার্থীকে নিয়ে আর গ্রামের বাড়িতে ফিরতে চান না বাবা। কিশোরীর বাবা বলেন, গ্রামের বাড়িতে নিয়ে গিয়ে কি করবাম মাইনষে নানা কথা কইব। এইতা কথা আমার ছেড়ি সইতে পারতো না। মাইনষের মুখ তো আর বাইন্ধা রাখতে পারতাম না। আর কিবায় মুখটা দেহাইয়াম। আমরা তো বাইচ্যাও মইরা গেছি। ছেরিডার জ্বর খালি ডরায় রাইতো ঘুমায় না। সবটাই আমারার মতন গরিবের দুর্ভাগ্য।
শনিবার (২০জানুয়ারি) দুপুরের মোবাইল ফোনে কথাগুলো বলেন লালমনি এক্সপ্রেস ট্রেনে ধর্ষণের শিকার কিশোরীর বাবা। ধর্ষণের শিকার কিশোরীর বাড়ি ময়মনসিংহ জেলার ঈশ্বরগঞ্জে।
গত মঙ্গলবার (১৬ জানুয়ারি) জয়দেবপুর রেলস্টেশন থেকে ময়মনসিংহ যাওয়ার সময় ভুলবশত লালমনিরহাটগামী লালমনি এক্সপ্রেস ট্রেনে উঠে পড়ে ওই কিশোরী। রাতে টিকিট চেকিংয়ের সময় টিকিট না থাকায় ট্রেনের অ্যাটেনডেন্ট আক্কাস গাজী তাকে ট্রেনের একটি সিটে বসিয়ে দেন।
ট্রেনের ‘গ’ বগির ৭ নং কেবিন ফাঁকা হলে সকাল সাড়ে আটটার দিকে কিশোরীকে কেবিনে নিয়ে জোরপূর্বক ধর্ষণ করেন আক্কাস গাজী। এসময় কিশোরীর ডাক চিৎকারে ট্রেনে থাকা পুলিশ এসে কিশোরীকে উদ্ধার এবং আক্কাস গাজীকে আটক করে।
এ ঘটনায় এএসআই রহুল আমিন বাদী হয়ে মামলা দায়েরের পর আক্কাস গাজীকে গ্রেফতার করে আদালতে মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। আক্কাস গাজী বরিশাল সদর উপজেলার শায়েস্তাবাদ এলাকার মৃত বজলু গাজীর ছেলে।
রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ বৃহস্পতিবার বিভাগীয় মামলা দায়েরের পর তাকে সাময়িক বরখাস্ত করে।
ভুক্তভোগী কিশোরী গত বৃহস্পতিবার দুপুরে লালমনিরহাট চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে ২২ ধারায় জবানবন্দি দিয়েছে। এর পর বিকেলে আদালতের মাধ্যমে পরিবারের সদস্যদের কাছে তাকে হস্তান্তর করে। হাসপাতালে চিকিৎসা শেষে পরিবারের সদস্যরা শুক্রবার কিশোরীকে সঙ্গে নিয়ে লালমনিরহাট থেকে জয়দেবপুর ফিরে আসে।
ধর্ষণের শিকার কিশোরীর গত দুই বছর ধরে বাবা-মায়ের সঙ্গে গাজীপুরের জয়দেবপুর বসবাস করেন। কিশোরীর বাবা শ্রমিকের কাজ করেন এবং মা ছাত্রমেসে রান্নার কাজ করেন। দুই ভাই বোনের মধ্যে ওই কিশোরী ছোট। বড় বোন জুতার কারখানায় কাজ করে। দুই ভাইয়ের মধ্যে একজন প্রতিবন্ধী তারা গ্রামের বাড়িতে থাকে।
প্রবাস টাইমে লিখুন আপনিও। প্রবাসে বাংলাদেশি কমিউনিটির নানা আয়োজন, ঘটনা-দুর্ঘটনা, প্রবাসীদের সুযোগ-সুবিধা, সমস্যা-সম্ভাবনা, সাফল্য, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের খবর, ছবি ও ভিডিও আমাদের পাঠাতে পারেন [email protected] মেইলে।
Discussion about this post