বিশ্বের অন্যতম ধনী দেশগুলির তালিকায় থাকা সেই দেশে অর্থের অভাব নেই। কিন্তু, সেই দেশেই লক্ষ্মীলাভের আরও এক উৎস আবিষ্কৃত হয়েছে। এই আবিষ্কারের ফলে দেশটির অর্থনীতিতে আরও এক নতুন অধ্যায়ের সূচনা হতে চলেছে।
কথা হচ্ছে সৌদি আরবকে নিয়ে। পশ্চিম এশিয়ার অন্যতম বৃহৎ এই দেশটির অর্থনীতি যথেষ্ট মজবুত। সেই অর্থনীতির ভিত খনিজ তেল। বিশ্বের বাজারে তেল বিক্রি করেই ধনী হয়ে উঠেছে সৌদি। খনিজ তেলের বিপুল ভান্ডার রয়েছে সৌদি আরবে। তবে তার সঙ্গে সেখানে পাওয়া যায় অন্য খনিজ পদার্থও। সোনার খনিও সৌদিতে নতুন নয়। সেই সব খনিকে কেন্দ্র করে পর্যাপ্ত শিল্প গড়ে উঠেছে।
সম্প্রতি সেই সৌদিতেই আবিষ্কৃত হয়েছে আরও বড় একটি সোনার খনি। দেশের অন্যতম জনপ্রিয় খনিজ উত্তোলনকারী সংস্থা মাদিন গত বৃহস্পতিবার সে কথা ঘোষণা করেছে। মক্কায় মনসৌরি মাসারা স্বর্ণখনিতে মাদিন সংস্থার কাজ চলছে। সেখানেই আরও অন্তত ১২৫ কিলোমিটার দীর্ঘ সোনার খনির হদিস পেয়েছেন খনি শ্রমিক এবং আধিকারিকেরা।
মক্কার মাটির নীচে সোনার বৃহত্তর খনি রয়েছে বলে আগেই আন্দাজ করেছিলেন বিশেষজ্ঞেরা। সেই মতো ২০২২ সাল থেকে শুরু হয়েছিল অন্বেষণ অভিযান। এত দিনে সাফল্যে মিলেছে। মনসৌরি মাসারা স্বর্ণখনি বিশ্বের অন্যতম বড় সোনার ভান্ডার। ২০২৩ সাল পর্যন্ত সেখানে মাটির নীচে অন্তত ১,৯৮৫ টন সোনার কথা জানা গিয়েছে।
মাদিন সংস্থার উদ্যোগে প্রতি বছর ওই খনি থেকে তাল তাল সোনা উত্তোলন করা হয়। মনসৌরি মাসারার স্বর্ণ উৎপাদন ক্ষমতা বছরে প্রায় ৭,০৮৮ কিলোগ্রাম। প্রায় একই এলাকায় নতুন খনি আবিষ্কার হওয়ায় সোনার উৎপাদন আরও বৃদ্ধি পাবে বলে মনে করা হচ্ছে। বিশেষজ্ঞদের দাবি, মক্কায় প্রথম শ্রেণির স্বর্ণবলয়ের খোঁজ পাওয়া গিয়েছে।
সোনাকে কাজে লাগিয়ে অর্থনীতিতে নতুন করে জোয়ার আসতে চলেছে সৌদি আরবে। অনেকে মনে করছেন, আগামী দিনে সোনা হয়ে উঠবে সৌদির অর্থনীতির অন্যতম শক্ত ভিত। খনিজ তেলের সঙ্গেও পাল্লা দেবে হলুদ ধাতু। মাদিন সংস্থার সিইও রবার্ট উইল্ট জানিয়েছেন, সোনা নিয়ে তাদের অনেক বড় ভাবনাচিন্তা রয়েছে। ২০৩০ সালের মধ্যে স্বর্ণশিল্পকে তাঁরা সৌদির অর্থনীতির তৃতীয় স্তম্ভ হিসাবে গড়ে তুলতে চান।
২০২২ সালে মদিনা শহরে সোনা এবং তামার খনি আবিষ্কৃত হয়েছিল। বিশেষজ্ঞদের আশা, পর পর এই আবিষ্কারের ফলে সৌদির খনি শিল্পের চেহারা বদলে যেতে পারে। সৌদির সোনার ভান্ডার বিদেশি বিনিয়োগকারীদের আকৃষ্ট করবে বলে মনে করা হচ্ছে। ফলে আগামী দিনে দেশে কোটি কোটি ডলার বিদেশি বিনিয়োগ আসতে পারে।
শুধু বিদেশি বিনিয়োগ নয়, দেশের ধনকুবেরদের লগ্নির দিকেও তাকিয়ে আছে সৌদি সরকার। খনিজ তেলের সঙ্গে সঙ্গে সোনার খনিতেও তাঁরা টাকা ঢালতে চলেছেন। যা দেশের অর্থনীতিকে আরও শক্তিশালী করবে। সৌদি সরকারের আশা, সোনার খনির ফলে শিল্প প্রসারিত হলে আরও কর্মসংস্থান তৈরি হবে দেশে। বিদেশ থেকেও কর্মীরা খনিতে কাজ করতে সৌদিতে আসবেন। অর্থনীতির ক্ষেত্রে যা লাভজনক হতে পারে।
প্রবাস টাইমে লিখুন আপনিও। প্রবাসে বাংলাদেশি কমিউনিটির নানা আয়োজন, ঘটনা-দুর্ঘটনা, প্রবাসীদের সুযোগ-সুবিধা, সমস্যা-সম্ভাবনা, সাফল্য, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের খবর, ছবি ও ভিডিও আমাদের পাঠাতে পারেন [email protected] মেইলে।
Discussion about this post