সংযুক্ত আরব আমিরাত থেকে নিকারাগুয়াগামী একটি রোমানিয়ান বিমানকে মানব পাচার চক্রের সন্দেহে ফ্রান্সে জরুরি অবতরণ করানো হয়েছে। বিমানে থাকা ২৬০ জন ভারতীয়সহ মোট ৩০৩ জন যাত্রীকে চার দিন আটকে রাখা হয়। পরে তাদের দেশত্যাগের ছাড়পত্র দেয়া হয়।
সেই ‘ডানকি ফ্লাইটের’ যাত্রীর তালিকায় ৬৬ জনেরও বেশি ছিলেন গুজরাটের বাসিন্দা। ভারতীয় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, যুক্তরাষ্ট্রে ঢুকতে দালালদের ৬০ থেকে ৮০ লাখ রুপি (বাংলাদেশি টাকায় ৮০ লাখ থেকে ১ কোটি টাকা) করে দিতে চেয়েছিলেন তাঁরা। ভারতীয় গণমাধ্যম এনডিটিভির এক প্রতিবেদনে খবরটি বলা হয়েছে।
অবৈধ পথে বিদেশ যাত্রার জন্য নিকারাগুয়ার মতো তৃতীয় যেসব দেশে ভ্রমণের নথি সহজেই পাওয়া যায়, সেই সব দেশের ফ্লাইট ‘ডানকি ফ্লাইট’ নামে পরিচিত।
লাতিন আমেরিকার দেশ নিকারাগুয়াগামী এয়ারবাস এ৩৪০-এর এই ‘ডানকি ফ্লাইটে’ থাকা ৬৬ জন গুজরাটের অধিবাসীর মধ্যে অভিভাবকহীন কয়েকজন শিশুও ছিল।
গুজরাট রাজ্যের ক্রাইম ইনভেস্টিগেশন ডিপার্টমেন্টের (সিআইডি) অপরাধ এবং রেলওয়ে শাখার ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা সঞ্জয় খারাত এই মামলার তদন্ত করছেন। তিনি বলেন, এই ৬৬ জন গুজরাটের অধিবাসী মূলত মেহসানা, আহমেদাবাদ, গান্ধীনগর এবং আনন্দ জেলার বাসিন্দা।
সঞ্জয় খারাত বলেন, ‘আমরা ইতিমধ্যে তাদের ৫৫ জনকে জিজ্ঞাসাবাদ করে বিবৃতি রেকর্ড করেছি। তাঁদের বেশির ভাগই অষ্টম থেকে দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত পড়াশোনা করেছেন। তাঁদের প্রত্যেকে স্বীকার করেছেন যে, দুবাই হয়ে নিকারাগুয়ায় পৌঁছানোর পর অবৈধভাবে যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশ করানোর জন্য স্থানীয় দালালদের তাঁরা ৬০ লাখ থেকে ৮০ লাখ রুপি (বাংলাদেশি টাকায় ৮০ লাখ থেকে ১ কোটি টাকা) করে দিতে চেয়েছিলেন।’
গুজরাট সিআইডি এখনো পর্যন্ত প্রায় ১৫ জন দালালের নাম ও যোগাযোগের নম্বর পেয়েছে—যাঁরা এই ৫৫ জনকে যুক্তরাষ্ট্র-মেক্সিকো সীমান্ত দিয়ে অবৈধভাবে যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশ করতে সহায়তার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল। সঞ্জয় খারাত বলেন, দালালেরা এই ৫৫ জনকে যুক্তরাষ্ট্রে পৌঁছানোর পরেই টাকা দিতে বলেছিল। যাত্রীদের নিকারাগুয়া থেকে মার্কিন সীমান্তে নিয়ে যাওয়া এবং তারপর তাদের সীমান্ত অতিক্রম করতে সহায়তা করার ব্যাপারে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল দালালেরা।
সিআইডি এক বিজ্ঞপ্তিতে বলেছে, দালালদের পরিকল্পনা অনুযায়ী, এই ৬৬ জন যাত্রী ১০ থেকে ২০ ডিসেম্বরের মধ্যে আহমেদাবাদ, মুম্বাই ও দিল্লি থেকে দুবাই পৌঁছেছিলেন। দালালদের নির্দেশ অনুসারে এই যাত্রীরা ফুজাইরাহ আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে একটি বেসরকারি বিমান সংস্থার নিকারাগুয়াগামী বিমানে উঠেছিলেন।
দালালেরা এই যাত্রীদের জন্য বিমানের টিকিট বুক করেছিল এবং যেকোনো জরুরি পরিস্থিতি মোকাবিলার জন্য প্রত্যেক যাত্রীকে ১ থেকে ৩ হাজার ডলার দিয়েছিল বলেও জানান তদন্তকারী কর্মকর্তা সঞ্জয় খারাত।
প্রবাস টাইমে লিখুন আপনিও। প্রবাসে বাংলাদেশি কমিউনিটির নানা আয়োজন, ঘটনা-দুর্ঘটনা, প্রবাসীদের সুযোগ-সুবিধা, সমস্যা-সম্ভাবনা, সাফল্য, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের খবর, ছবি ও ভিডিও আমাদের পাঠাতে পারেন [email protected] মেইলে।
Discussion about this post