দাঁত সুন্দর ও সুস্থ রাখার জন্য নিয়মিত যত্ন নেওয়া জরুরি। কিন্তু অনেকেই নিয়মিত দাঁত ব্রাশ করেন না, ফলে দাঁতে পাথর জমে। দাঁতে পাথর হলো দাঁতের উপর জমে থাকা একটি শক্ত আবরণ। এটি হলুদ বা বাদামি রঙের হয়ে থাকে। দাঁতে পাথর জমলে দাঁত হলুদ হয়ে যায়, মাড়ি ফুলে যায় এবং রক্ত ঝরে। এছাড়াও দাঁতের মাড়ি থেকে দুর্গন্ধ হতে পারে। এটি ধীরে ধীরে কালচেও হয়ে যেতে পারে। এই সমস্যাকে দাঁতে পাথর হওয়া বলে। ইংরেজিতে একে বলে টার্টার বা ক্যালকুলাস।
দাঁতে পাথর জমে কেন?
দাঁতে পাথর বা টার্টার বা ক্যালকুলাস তৈরি হয় আমাদের সচেতনতার অভাবে। মূলত মুখের ভেতরটা ভালোভাবে পরিষ্কার না করার কারণে এমন সমস্যা বেশি হয়। মুখের ভেতর থাকা জীবাণু, খাদ্য কণা ও থুতুর মধ্যে থাকা প্রোটিন একসঙ্গে মিলে তৈরি করে প্লাক। এই প্লাকই ঠিকমতো পরিষ্কার না করলে মিনারেলসের সঙ্গে মিশে স্তরের উপর স্তর তৈরি করে। এটি শক্ত হয়ে টার্টার বা ক্যালকুলাস বানায়।
কাদের প্রবণতা বেশি
দাঁতে পাথর হওয়ার সমস্যা কারও কারও ক্ষেত্রে বেশি দেখা যায়। বিশেষ করে যারা মিষ্টি ও আলু বেশি খান, তাদের ক্ষেত্রে এই সমস্যা বেশি হয়। ময়দার তৈরি খাবার বেশি খেলেও দাঁতে পাথর জমতে পারে। যারা ধূমপান করেন বা তামাকজাত দ্রব্য চিবিয়ে নেশা করেন তারাও এই সমস্যা থেকে রেহাই পান না।
দাঁতে পাথর হওয়া থেকে রক্ষা পাওয়ার উপায়
দিনে দুইবার দাঁত মাজতে হবে। প্রতিবার অন্তত দুই মিনিট ধরে দাঁত মাজুন। তিন মাস পরপর টুথব্রাশ পরিবর্তন করতে হবে। ফ্লুয়োরাইড যুক্ত টুথপেস্ট এক্ষেত্রে সমস্যা দূরে রাখতে পারে। ৬ মাস পরপর দাঁতের ডাক্তারের কাছে দাঁত দেখাবেন। সেইসঙ্গে খেতে হবে স্বাস্থ্যকর খাবার। দূরে থাকতে হবে তামাকজাত দ্রব্য থেকেও।
দাঁতে পাথর জমলে কী করবেন?
দাঁতে পাথর জমলে কী করণীয় তা অনেকেই বুঝতে পারেন না। এক্ষেত্রে আপনি একজন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের কাছে গিয়ে স্কেলিং করাতে পারেন। এছাড়া ঘরোয়া কিছু উপায়েও এই সমস্যা কমানো যেতে পারে।
বেকিং সোডার মিশ্রণ ব্যবহার
বেকিং সোডা, ডেন্টাল পিক, লবণ, হাইড্রোজেন পেরোক্সাইড, পানি, টুথব্রাশ, কাপ, অ্যান্টিসেপটিক মাউথওয়াশ নিন। এবার কাপে এক টেবিল চামচ বেকিং সোডার সঙ্গে আধ চা চামচ লবণ মিশিয়ে নিন। গরম পানিতে টুথব্রাশ ভিজিয়ে বেকিং সোডা ও লবণের মিশ্রণ দিয়ে ৫ মিনিট ধরে দাঁত ব্রাশ করুন। শেষে কুলকুচি করে নেবেন।
এবার এককাপ হাইড্রোজেন পারোক্সাইডের সঙ্গে আধ কাপ হালকা গরম পানি মিশিয়ে নিন। এই পানি মুখে নিয়ে এক মিনিট রাখুন। এরপর আধ কাপ পানি দিয়ে কুলকুচি করে ফেলুন। ডেন্টাল পিক দিয়ে দাঁতের হলুদ টার্টার ধীরে ধীরে ঘষে তুলুন। মাড়ির ক্ষতি এড়াতে ডেন্টাল পিক ব্যবহারের সময়ে সাবধানতা অবলম্বন করুন। অ্যান্টিসেপটিক মাউথওয়াশ দিয়ে কুলকুচি করুন।
স্ট্রবেরি ও টমেটো ব্যবহার
স্ট্রবেরি ও টমেটো দাঁতের জন্য ভালো। টার্টার পরিষ্কার করার জন্য স্ট্রবেরি বা টমেটো দাঁতে ঘষে নিন। এভাবে ৫ মিনিট রাখুন। এতে টার্টার নরম হয়ে আসবে। তখন বেকিং সোডা মেশানো হালকা গরম পানি দিয়ে কুলি করে ফেলুন। স্ট্রবেরি বা টমেটো ছাড়াও ভিটামিন সি সমৃদ্ধ ক্যাপসিকাম, লেবু, পেঁপে ও কমলালেবু ব্যবহার করতে পারবেন।
প্রবাস টাইমে লিখুন আপনিও। প্রবাসে বাংলাদেশি কমিউনিটির নানা আয়োজন, ঘটনা-দুর্ঘটনা, প্রবাসীদের সুযোগ-সুবিধা, সমস্যা-সম্ভাবনা, সাফল্য, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের খবর, ছবি ও ভিডিও আমাদের পাঠাতে পারেন [email protected] মেইলে।
Discussion about this post