অ্যাপলের সর্বশেষ আপডেটে যোগ করা নতুন আইফোন ফিচারের কারণে প্রাইভেসি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। এই ফিচারের মাধ্যমে আইফোনের ব্যবহারকারীদের অবস্থান ট্র্যাক করা সহজ হয়ে উঠেছে বলে মনে করছেন তারা।
নতুন এ ফিচারের নাম ‘নেইমড্রপ’, যার মাধ্যমে সহজেই অনুমতি সাপেক্ষে বিভিন্ন ব্যক্তিগত তথ্য শেয়ার করা যায়। আর ডেটা চুরির মতো ঘটনা থেকে নিশ্চয়তা দিতে এর মধ্যে একাধিক সুরক্ষা ব্যবস্থাও রয়েছে। মার্কিন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর বিভিন্ন সতর্কবার্তা এরইমধ্যে ফেইসবুকের মতো সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে, যেখানে তারা আইওএস ১৭’তে আসা নতুন এ ফিচারের সম্ভাব্য ‘প্রাইভেসি ঝুঁকি’র বিষয়টি উল্লেখ করেছে।
ফেইসবুকে এ সতর্কবার্তা শেয়ার করেছেন সমগ্র যুক্তরাষ্ট্রে নিয়োজিত বিভিন্ন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর শীর্ষ কর্তারা। আর এ ঘটনা ঘটেছে থ্যাংকসগিভিংয়ের সপ্তাহ শেষে।
এ সতর্কবার্তায় উল্লেখ করা হয়, ফিচারটি ডিফল্ট হিসেবেই চালু হয়ে যায়। এর পাশাপাশি এতে পরামর্শ দেওয়া হয়েছে, অনেক ব্যবহারকারীই নিজেদের সেটিং চেক না করায় বুঝতে পারেন না যে তাদের ফোন কীভাবে কাজ করে। এ ছাড়া, ব্যবহারকারীর কাছাকাছি থাকা অন্য আইফোনের সঙ্গে ব্যক্তিগত যোগাযোগের তথ্য শেয়ার করার সম্ভাব্য ঝুঁকি নিয়েও সতর্কবার্তা দেওয়া এতে।
এতে আরও উল্লেখ রয়েছে, ব্যবহারকারী ও শিশুদের জন্য ডিফল্ট হিসেবেই ফিচারটি বন্ধ রাখা উচিৎ। ব্রিটিশ দৈনিক ইন্ডিপেন্ডেন্টের প্রতিবেদন অনুযায়ী, ফিচারটি দুটি কাছাকাছি ডিভাইসের মধ্যে যোগাযোগের তথ্য আদান প্রদানের সুবিধা দেয়, বিষয়টি সত্য হলেও এ ক্ষেত্রে কেবল কাছাকাছি নয়, বরং ডিভাইসগুলোকে একে অপরের পাশাপাশি অবস্থান করতে হয়। আর এ সুরক্ষা ব্যবস্থা ফিচারটিতে ‘বিল্ট ইন’ হিসেবেই রাখা হয়েছে।
সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হল, ব্যবহারকারী কারও সঙ্গে ডেটা শেয়ার করতে চাইলে তাকে বিশেষ এক উপায়ে নিজের ফোনকে আনলক করতে হয়। আর ফিচারটি নিজে নিজেই তথ্য পাঠায় না বলে প্রতিবেদনে লিখেছে ইন্ডিপেন্ডেন্ট। আইওএস১৭ অপারেটিং সিস্টেমে ফিচারটি চালু হয়েছে এ গ্রীষ্মে। এর উদ্দেশ্য ছিল, ব্যবহারকারীর কন্টাক্ট ও বিভিন্ন কাজ শেয়ারের উপায় সহজ করা। কাছাকাছি থাকা ডিভাইসে এর মাধ্যমে জটিলতা এড়িয়ে আগের তুলনায় দ্রুত তথ্য আদান প্রদান করা যায়।
ফিচারটি কাজ করে দুটি আইফোন, দুটি অ্যাপল ওয়াচ বা একটি আইফোন ও একটি অ্যাপল ওয়াচকে পাশাপাশি রাখার মাধ্যমে। ডিভাইসগুলোকে আনলক করে কয়েক সেন্টিমিটার দূরে রাখার পর এগুলো ভাইব্রেট করার পাশাপাশি একটি আলো জ্বলতে দেখা যায়, যার মাধ্যমে বোঝা যায় যে এগুলোর মধ্যে সংযোগ ঘটছে। আর ব্যবহারকারী কী ধরনের তথ্য শেয়ার করতে চান বা ফিচারটি থেকে বের হতে চান কি না, এমন অপশনও দেওয়া হয় এতে। এর মাধ্যমে নিজের শেয়ার করতে চাওয়া তথ্য বাছাইয়ের সুবিধা পান ব্যবহারকারী।
উদাহরণ হিসেবে ধরা যায়, ব্যবহারকারী এতে কেবল নিজের ইমেইল ঠিকানা শেয়ার করতে অথবা ডেটা পাঠানোর সুবিধা বন্ধ রেখে কেবল ডেটা গ্রহণ করতে পারেন।পরবর্তীতে ফিচারটিতে ক্লিক করে পুনরায় ডেটা শেয়ারের সুবিধাও পাওয়া যেতে পারে। আর ডিসপ্লে’র নিচের অংশ থেকে সোয়াইপ করে যে কোনো সময় ডেটা শেয়ারিং বন্ধও করা যাবে।
কোনো ধরনের ঝুঁকি থাকলে নেইমড্রপ ফিচারটি তুলনামূলক সহজ উপায়ে বন্ধ করা যায়। এর জন্য ব্যবহারকারীকে ডিভাইসের সেটিংস অ্যাপে প্রবেশ করে ‘জেনারেল’ অপশনে ক্লিক করতে হবে। পরবর্তীতে, ‘এয়ারড্রপ’ অপশন থেকে ‘স্টার্ট শেয়ারিং বাই’ অপশন বাছাই করতে হবে, যেখানে ‘ব্রিঙ্গিং ডিভাইসেস টুগেদার’ নামের অপশন থেকে এ সেটিং বন্ধ করার সুবিধা মিলবে।
প্রবাস টাইমে লিখুন আপনিও। প্রবাসে বাংলাদেশি কমিউনিটির নানা আয়োজন, ঘটনা-দুর্ঘটনা, প্রবাসীদের সুযোগ-সুবিধা, সমস্যা-সম্ভাবনা, সাফল্য, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের খবর, ছবি ও ভিডিও আমাদের পাঠাতে পারেন [email protected] মেইলে।
Discussion about this post