সিলেটের ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের আধুনিকায়নের কাজ চলছে। এর অংশ হিসেবে অ্যাপ্রোন বর্ধিত করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। কিন্তু মাটি খনন করতে গিয়ে জেট ফুয়েল সরবরাহের হাইড্রেন্ট লাইনটি উন্মুক্ত হয়ে গেছে। ফলে বিমানবন্দরে জেট ফুয়েল সরবরাহের ঝুঁকি তৈরি হয়েছে। পাশাপাশি কাটা পড়েছে ডিপোর পিএলসি সিস্টেমের অপটিক্যাল ফাইবার কেব্লও (ওএফসি)। এতে ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে বিমানবন্দরে নিরবচ্ছিন্ন জেট ফুয়েল সরবরাহ।
জেট ফুয়েল সরবরাহ বন্ধের ঝুঁকির বিষয়টি জানিয়ে ২০ নভেম্বর ওসমানী বিমানবন্দরের পরিচালককে চিঠি দিয়েছে পদ্মা অয়েল কোম্পানি লিমিটেড। পদ্মা অয়েলের ব্যবস্থাপনা পরিচালকের (এমডি) পক্ষে সংস্থার উপব্যবস্থাপক (এভিয়েশন) মো. আনোয়ার সাদাত ওই চিঠি দেন।
চিঠিতে বলা হয়, সম্প্রতি বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ (বেবিচক) কর্তৃক ৪ নম্বর বোর্ডিং ব্রিজসংলগ্ন এলাকায় অ্যাপ্রোন বর্ধিতকরণ কাজে এক্সকাভেটরের মাধ্যমে মাটি খননের সময় পদ্মা অয়েল কোম্পানি লিমিটেড পরিচালিত জেট এ-১ হাইড্রেন্ট লাইনটি উন্মুক্ত হয়ে যায়। এ সময় ডিপোর পিএলসি সিস্টেমের ওএফসি কেব্ল কাটা পড়ে। যার ফলে অ্যাপ্রোন এলাকায় ইমার্জেন্সি শাট অফ বাটনের (ইএসবি) সঙ্গে ডিপোর সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে।
অন্যদিকে বেবিচকের বৈদ্যুতিক উপকেন্দ্র থেকে পদ্মা অয়েল ডিপো পর্যন্ত ভূগর্ভস্থ বৈদ্যুতিক লাইন অ্যাপ্রোন বর্ধিতকরণ এলাকা বরাবর পদ্মা অয়েল এ ডিপো পর্যন্ত গেছে। তাই অ্যাপ্রোন নির্মাণকালীন বিচ্ছিন্ন ইএসবি অবিলম্বে পুনঃসংযোগ করে ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে উড্ডয়ন ও অবতরণ বিমানে জ্বালানি সরবরাহে নিরাপত্তা ও ঝুঁকি পরিহার নিশ্চিত করা প্রয়োজন।
হাইড্রেন্ট লাইনটি ওসমানী বিমানবন্দরের জ্বালানি তেল সরবরাহের অন্যতম ব্যবস্থা জানিয়ে চিঠিতে আরও বলা হয়, হাইড্রেন্টে কোনো সমস্যা হলে বিমানবন্দরের জ্বালানি তেল সরবরাহ বন্ধসহ নানা জটিলতা তৈরি হতে পারে। এ ছাড়া ৪ নম্বর বোর্ডিং ব্রিজসংলগ্ন অ্যাপ্রোনের বর্ধিতকরণ কাজের এলাকায় হাইড্রেন্ট লাইনের ভাল্ভ চেম্বার রয়েছে। অ্যাপ্রোন বর্ধিতকরণ কাজের ফলে এই ভাল্ভ চেম্বার ব্যবহার অনুপযোগী হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।
মাটি খননের কারণে পাইপলাইন উন্মুক্ত হয়েছে। এ জন্য সতর্কতার সঙ্গে বাকি কাজ সম্পন্ন করার অনুরোধ জানিয়েছে পদ্মা অয়েল। নতুবা পাইপলাইনের লেভেল পরিবর্তন হয়ে এই লাইনে জ্বালানি তেল সরবরাহ বিঘ্নিত হবে বলে সতর্ক করেছে প্রতিষ্ঠানটি।
এ প্রসঙ্গে ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের পরিচালক হাফিজ আহমদ গণমাধ্যমকে বলেন, বিমানবন্দরের ৪ নম্বর বোর্ডিং ব্রিজসংলগ্ন এলাকায় অ্যাপ্রোন বর্ধিতকরণ কাজ চলছে। সেখানে এক্সকাভেটরের মাধ্যমে মাটি খননের সময় কেব্ল কাটা পড়েছে। এটি কোনো বড় ঘটনা নয়। হাইড্রেন্ট লাইনটি উন্মুক্ত হওয়ায় বিমানবন্দরে জ্বালানি সরবরাহেও কোনো সমস্যা হয়নি। উড়োজাহাজে জেট ফুয়েল সরবরাহ স্বাভাবিক আছে।
উল্লেখ্য, ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে জেট ফুয়েল ডিপো, পূর্ণাঙ্গ টার্মিনাল ভবন নির্মাণসহ মেগা প্রকল্পের খরচ ধরা হয় ২ হাজার ৩০৯ কোটি টাকা। প্রকল্পটি বাস্তবায়ন হলে সিলেট ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর দিয়ে বছরে ২০ লাখ যাত্রী চলাচল করতে পারবে। বর্তমানে প্রতিবছর গড়ে ৫ লাখ যাত্রী বিমানবন্দরটি ব্যবহার করছে।
প্রবাস টাইমে লিখুন আপনিও। প্রবাসে বাংলাদেশি কমিউনিটির নানা আয়োজন, ঘটনা-দুর্ঘটনা, প্রবাসীদের সুযোগ-সুবিধা, সমস্যা-সম্ভাবনা, সাফল্য, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের খবর, ছবি ও ভিডিও আমাদের পাঠাতে পারেন [email protected] মেইলে।
Discussion about this post