রাশিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মারিয়া জাখারোভা বুধবার এক ব্রিফিংয়ে দাবি করেন, যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত পিটার হাস অক্টোবরের শেষে বাংলাদেশে বিরোধী দলের একজন নেতার সঙ্গে বৈঠক করেছেন। বৈঠকে তারা সরকারবিরোধী আন্দোলনের পরিকল্পনা নিয়ে আলোচনা করেছেন।
রাষ্ট্রদূত পিটার হাসকে নিয়ে রাশিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্রের বক্তব্যের প্রতিক্রিয়া জানতে চাইলে ঢাকার মার্কিন দূতাবাস থেকে তাদের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্রের প্রতিক্রিয়া পাঠানো হয়।
মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্রের বরাতে প্রতিক্রিয়ায় বলা হয়, ইচ্ছাকৃতভাবে মারিয়া জাখারোভা যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রনীতি ও পিটার হাসের বিভিন্ন বৈঠক বিষয়াদি ভুলভাবে উপস্থাপন করেছেন। বাংলাদেশের কোনো রাজনৈতিক দলকে যুক্তরাষ্ট্র সমর্থন করে না। বাংলাদেশের কোনো দলকে যুক্তরাষ্ট্র অগ্রাধিকার দেয় না।
এতে আরও বলা হয়,
“বাংলাদেশের জনগণ যা চায়, আমরাও তাই চাই এবং সেটি হচ্ছে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন, যা শান্তিপূর্ণ উপায়ে অনুষ্ঠিত হবে। আমাদের ও বাংলাদেশের জনগণ উভয়ের লক্ষ্য হচ্ছে শান্তিপূর্ণ উপায়ে অবাধ, সুষ্ঠু নির্বাচন।”
মার্কিন দূতাবাসের কর্মকর্তারা সরকার, বিরোধী দল, সুশীল সমাজ এবং অন্যান্য অংশীজনদের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা করে চলবে বলেও প্রতিক্রিয়ায় জানানো হয়। এর আগে ২২ নভেম্বর রাশিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মারিয়া জাখারোভা নিয়মিত সংবাদ সম্মেলনে দাবি করেন, মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাস অক্টোবরের শেষের দিকে সরকারবিরোধী সমাবেশ আয়োজনের পরিকল্পনা নিয়ে আলোচনা করতে বিরোধী দলের একজন সদস্যের সঙ্গে দেখা করেন।
এ ধরনের কর্মকাণ্ড বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে স্থূল হস্তক্ষেপের চেয়ে কম কিছু নয় বলেও মন্তব্য করেন জাখারোভা। শুক্রবার (২৩ নভেম্বর) রুশ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় তাদের এক্স ও ফেসবুক অ্যাকাউন্টে জাখারোভার এ বক্তব্য প্রকাশ করেছে। তবে এদিন এ সংক্রান্ত আর কোনো বক্তব্য প্রকাশ করেনি মস্কো। এরপর আজ শনিবার রাশিয়ার মুখপাত্রের পুরো বক্তব্য প্রকাশ করেছে ঢাকায় রাশিয়ার দূতাবাস।
মারিয়া জাখারোভা বলেন, খবর পাওয়া যায় যে, মার্কিন রাষ্ট্রদূত ও বিরোধী দলের নেতা ওই বৈঠকে সরকারবিরোধী বড় প্রতিবাদ সমাবেশ করার বিষয়ে পরিকল্পনা করেছেন। রাষ্ট্রদূত ওই নেতাকে যুক্তরাজ্য, অস্ট্রেলিয়া ও অন্যান্য কয়েকটি দেশের পক্ষ থেকেও সহায়তা দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেন।
মুখপাত্র বলেন, যুক্তরাষ্ট্র ও এর মিত্ররা স্বচ্ছতা ও অন্তর্ভুক্তিমূলক নির্বাচন নিশ্চিত করার অজুহাতে বাংলাদেশের রাজনৈতিক প্রক্রিয়া প্রভাবিত করার চেষ্টা করছে এবং এ বিষয়টি আমরা অনেকবার বলেছি। আজ আমি আবার বিষয়টি নিয়ে কথা বলছি।
মারিয়া জাখারোভা বলেন, মার্কিন রাষ্ট্রদূতের আচরণ নগ্নভাবে ভিয়েনা কনভেনশনের লঙ্ঘন এবং এটিকে ওয়াশিংটন ও তার মিত্রদের পক্ষ থেকে একটি স্বাধীন রাষ্ট্রের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ হিসাবে বিবেচনা করা যায়।
তিনি আরও বলেন, রাশিয়ার মনে কোনও সন্দেহ নেই যে আগামী ৭ জানুয়ারির নির্বাচন বাংলাদেশ কর্তৃপক্ষ আইন অনুযায়ী, স্বাধীনভাবে এবং বিদেশিদের সহায়তা ছাড়া করতে পারবে।
প্রবাস টাইমে লিখুন আপনিও। প্রবাসে বাংলাদেশি কমিউনিটির নানা আয়োজন, ঘটনা-দুর্ঘটনা, প্রবাসীদের সুযোগ-সুবিধা, সমস্যা-সম্ভাবনা, সাফল্য, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের খবর, ছবি ও ভিডিও আমাদের পাঠাতে পারেন news@probashtime.com মেইলে।
Discussion about this post