সরকার যখন নতুন শ্রমবাজার খুঁজছে তখন পুরনো বাজারে অশনিসংকেত দেখা দিয়েছে। বৈশ্বিক অর্থনৈতিক মন্দার কারণে মানুষ বিদেশমুখী হতে চাইলেও অনেকে আটকে যাচ্ছেন বিএমইটির শর্তের বেড়াজালে।
বিভিন্ন দেশের দূতাবাস থেকে সত্যায়ন করে আনতে বলায় উল্টো বাতিল হচ্ছে অনেকের ভিসা। কুয়েত, ওমান, দুবাইসহ কয়েকটি দেশে কর্মী যাওয়া আটকে গেছে, মালয়েশিয়ার বাজারে অনিশ্চয়তা কাটেনি। গড় হিসাবে গত সেপ্টেম্বরে ৩২ হাজার ও অক্টোবর মাসে ৩০ হাজার কর্মী কম গেছে। এভাবে কর্মী যাওয়া কমতে থাকলে রেমিট্যান্সে ধাক্কা কাটিয়ে ওঠা কষ্টকর হয়ে পড়বে বলে মনে করছেন ব্যাংকাররা।
জনশক্তি, কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরো (বিএমইটি) সূত্র বলছে, মধ্যপ্রাচ্যসহ বিশ্বের ১৫৮টিরও বেশি দেশে জনশক্তি রপ্তানি করে বাংলাদেশ। এ পর্যন্ত প্রায় ১ কোটি ১২ লাখ ২৫ হাজার ৯৬৯ জন মানুষের কর্মসংস্থান হয়েছে বিদেশে। যার ফলশ্রæতিতে দেশে রেমিট্যান্স হিসেবে এসেছে প্রায় ১৩ লাখ কোটি টাকা। এর মধ্যে ২০১৫ সালে এসেছে সবচেয়ে বেশি- প্রায় ১ লাখ ১৫ হাজার কোটি টাকা।
এছাড়া ২০১৭ সালে এ যাবতকালের সবচেয়ে বেশি মানুষের কর্মসংস্থান হয়েছে, যার পরিমাণ ১০ লাখেরও বেশি। ১৫৮টি দেশে বাংলাদেশের কর্মী গেলেও দক্ষ জনবলের অভাবে বাংলাদেশের বাজার ৭ থেকে ৮টি দেশেই সীমাবদ্ধ। জটিলতা কাটেনি মালয়েশিয়ার শ্রমবাজার নিয়ে। সেখানে চলছে ধরপাকড়। সবমিলিয়ে রেমিট্যান্স কমে আসায় সরকার নতুন প্রণোদনা ঘোষণা করেছে। দক্ষ ও প্রশিক্ষিত কর্মীর অভাব, রাশিয়া-ইউক্রেন এবং ইসরায়েল-ফিলিস্তিন যুদ্ধের কারণে বৈশ্বিক অর্থনৈতিক সংকটের কারণে জনশক্তি রপ্তানিতে সহসাই সুসংবাদ মিলছে না বলে মনে করছেন জনশক্তি রপ্তানি খাতের সংশ্লিষ্টরা।
জানা গেছে, বিএমইটির মহাপরিচালক পূর্বঘোষণা ছাড়াই হঠাৎ গত ১২ নভেম্বর এক নোটিসে ইউরোপের বিভিন্ন দেশসহ কুয়েতের ভিসায় সংশ্লিষ্ট দেশে বাংলাদেশ মিশনের শ্রম সচিবের সত্যায়ন ছাড়া বহির্গমন ছাড়পত্র ইস্যু বন্ধ করে দেন। বহির্গমন ছাড়পত্র বন্ধ থাকায় বিদেশ গমনেচ্ছু কর্মীদের অনেকেরই ভিসার মেয়াদ শেষ হয়ে যাচ্ছে। তড়িঘড়ি সিদ্ধান্তে ইউরোপের বিভিন্ন দেশসহ কুয়েতের বহির্গমন ছাড়পত্র ইস্যু বন্ধ থাকায় বিদেশ গমনেচ্ছু শত শত কর্মী চরম বিপাকে পড়েছেন। বিএমইটির তথ্য অনুসারে, গত ২০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত বাংলাদেশ থেকে ইতালির বিভিন্ন কর্ম খাতে প্রায় ১৪ হাজার ৪৩৪ জন কর্মী চাকরি পেয়েছেন।
এ প্রসঙ্গে বিএমইটির অতিরিক্ত মহাপরিচালকের (প্রশিক্ষণ) আ স ম আশরাফুল ইসলাম বলেছেন, দক্ষ ও প্রশিক্ষিত কর্মীর অভাবে শ্রমবাজারে আমরা বিপাকে পড়েছি, ধাক্কা খেয়েছি। দক্ষ ও প্রশিক্ষিত কর্মী তৈরিতে সরকার মনযোগ ও গুরুত্ব দিয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এ ব্যাপারে নির্দেশনা দিয়ে প্রশিক্ষণ ছাড়া কর্মী বিদেশে না পাঠাতে বলেছেন। সেজন্য যুগের সঙ্গে তাল মিলিয়ে বিদেশ থেকে মেশিনারিজ আনা হচ্ছে। যেসব আধুনিক মেশিন দিয়ে কর্মী প্রশিক্ষিত করে বিদেশে পাঠালে সুফল মিলবে। তিনি বলেন, আগে ৪০টি উপজেলায় প্রশিক্ষণকেন্দ্র ছিল। সম্প্রতি আরো ৫০টি উপজেলায় প্রশিক্ষণকেন্দ্রের অনুমোদন দিয়েছে একনেক। আরো ৫০টি উপজেলার অনুমোদন
অপেক্ষমাণ আছে। উপজেলা পর্যায়ে প্রশিক্ষণ দিয়ে কর্মী পাঠালে বাজার বাড়বে। এখন যেভাবে প্রশিক্ষণ চলছে এর সুফল কয়েক মাস পর পাওয়া যাবে বলে তিনি মনে করেন। তবে, রিক্রুটিং এজেন্সি মালিকরা মনে করছেন অনুমোদন হলেও এসব প্রশিক্ষণকেন্দ্র চালু হতে আরো অনেক লাগবে। ভিসাপ্রার্থীদের বিদেশযাত্রায় কড়াকড়ি না কমালে বিদেশে দেশের বাজার নষ্ট হবে। অবশ্য, বিএমইটির অতিরিক্ত মহাপরিচালক (কর্মসংস্থান) এ এইচ এম আনোয়ার পাশা শ্রমবাজারের বিদ্যমান পরিস্থিতি নিয়ে কোনো কথা বলতে রাজি হননি।
বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব ইন্টারন্যাশনাল রিক্রুটিং এজেন্সি (বায়রা) মহাসচিব শামীম আহমেদ চৌধুরী নোমান বলেছেন, কর্মী যাওয়া একটি চলমান প্রক্রিয়া, তা বাড়ে এবং কমে। রেমিট্যান্স বাড়ানোর জন্য সরকার নতুন করে যে উদ্যোগ নিয়েছে তাতে ব্যাংকিং চ্যানেলে টাকা আসা বাড়লে এবং হুন্ডি বন্ধ হলে রেমিট্যান্স বাড়বে। ডলারের মূল্যবৃদ্ধি এবং যুদ্ধ পরিস্থিতির কারণে বিশ্বজুড়ে অর্থনৈতিক অস্থিরতা চলছে।
তিনি বলেন, মালয়েশিয়ার বাজারটি পলিসিগত ভুলের কারণে নষ্ট হচ্ছে। ট্রেনিং সেন্টারের নামে পাঠশালা বানালে হবে না। ল্যাব বানাতে হবে। ভালো কারিগর তৈরি করতে হবে। তিনি বলেন, বিদেশে আমাদের কর্মীর অনেক চাহিদা রয়েছে। এজন্য উপযুক্ত কর্মী তৈরি করতে হবে। ভাষা শেখাতে হবে। তাহলে সুফল মিলবে। যে দেশে যে ধরনের কর্মী প্রয়োজন সেরকম কর্মী তৈরি করলে শ্রমবাজারে গুণগত মানের পরিবর্তন আসবে। এজন্য সরকার, বিএমইটি, বায়রা, রিক্রুটিং এজেন্সি সবাইকে মিলে কাজ করতে হবে।
জানা গেছে, মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোতে জনশক্তি রপ্তানিতে সংকটে পড়তে যাচ্ছে বাংলাদেশ। মধ্যপ্রাচ্যে রাজনৈতিক অস্থিরতা, অর্থনৈতিক সংকট এবং নানাবিধ সামাজিক সমস্যার কারণে মধ্যপ্রাচ্যে জনশক্তি রপ্তানি দিন দিন কমছে। এর পাশাপাশি তেলের দাম নিম্নমুখি হওয়া, কনস্ট্রাকশন খাতে চাকরির সুযোগ কমে যাওয়া, ভিসা ট্রেডিং এবং স্থানীয়দের কাজে সম্পৃক্ততার উদ্যোগ নেয়ায় মধ্যপ্রাচ্যের শ্রমবাজার বাংলাদেশিদের জন্য সংকুচিত হয়ে আসছে।
সরকারের পক্ষ থেকে নতুন নতুন বাজার খোঁজার চেষ্টা অব্যাহত থাকলেও চলমান পরিস্থিতিতে ধারণা করা হচ্ছে- সরকারের এ বছর ১২ লাখ শ্রমিক বিদেশে পাঠানোর লক্ষ্যমাত্রা পূরণ হবে না। বিএমইটির দেয়া তথ্য যাচাই করে দেখা যায়, ২০১৭ সাল থেকে ২০১৮ সালে মধ্যপ্রাচ্যে গমনের হার প্রায় অর্ধেকে নেমে এসেছে।
এদিকে ডলার বাজারে অস্থিরতার মধ্যে রেমিট্যান্স অস্বাভাবিকভাবে কমে গেছে। গত দুই বছরে কাজের জন্য দেশের বাইরে গেছেন ২০ লাখ কর্মী। দেশের বাইরে যখন প্রবাসী বাড়ছে, তখন রেমিট্যান্স কমছে দিনকে দিন। বাংলাদেশ ব্যাংকের হালনাগাদ তথ্যমতে, গত সেপ্টেম্বর মাসের পুরো সময়ে ১৩৪ কোটি ৩৬ লাখ ৬০ হাজার ডলার এসেছে, যা গত বছরের একই মাসের (সেপ্টেম্বর) তুলনায় ১৯ কোটি ৬০ লাখ ডলার কম। গত বছরের সেপ্টেম্বরে এসেছিল ১৫৩ কোটি ৯৬ লাখ ডলার।
এর মধ্যে রাষ্ট্র মালিকানাধীন ব্যাংকের মাধ্যমে এসেছে ১১ কোটি ৮৬ লাখ ৬০ হাজার ডলার, বিশেষায়িত দুই ব্যাংকের মধ্যে এক ব্যাংকে এসেছে ৩ কোটি ৫১ লাখ ডলার। বেসরকারি ব্যাংকের মাধ্যমে এসেছে ১১৮ কোটি ৪৮ লাখ ৪০ ডলার এবং বিদেশি ব্যাংকের মাধ্যমে এসেছে ৫০ লাখ ৬০ হাজার ডলার। এর আগে গত জুলাই মাসে ১৯৭ কোটি ৩০ লাখ ডলারের (১ দশমিক ৯৭ বিলিয়ন ডলার) রেমিট্যান্স পাঠিয়েছিলেন প্রবাসী বাংলাদেশিরা।
আগস্টে এসেছিল ১৫৯ কোটি ৯৪ লাখ ডলারের প্রবাসী আয়। গত জুন মাসে রেকর্ড ২১৯ কোটি ৯০ লাখ ডলার (২ দশমিক ১৯ বিলিয়ন ডলার) প্রবাসী আয় বা রেমিট্যান্স এসেছিল দেশে। একক মাস হিসেবে যেটি ছিল প্রায় তিন বছরের মধ্যে সবচেয়ে বেশি। এর আগে ২০২০ সালের জুলাই মাসে ২৫৯ কোটি ৮২ লাখ ডলারের রেকর্ড প্রবাসী আয় এসেছিল।
একাধিক ব্যাংকের পরিচালক জানিয়েছেন, ২০২০ সালে করোনার কারণে হুন্ডি বন্ধ থাকায় ব্যাংকিং চ্যানেলে সর্বোচ্চ রেমিট্যান্স এসেছিল। গত চারটি অর্থবছরের বিশ্লেষণে দেখা গেছে, ২০২০-২০২১ অর্থবছরে রেমিট্যান্সের পরিমাণ ছিল সর্বোচ্চ। ২০২২-২০২৩ অর্থবছরে ব্যাংকিং চ্যানেলে প্রবাসীরা পাঠিয়েছেন ২ হাজার ১৬১ কোটি মার্কিন ডলারের রেমিট্যান্স। এটি এ যাবতকালের মধ্যে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ। এর আগে করোনাকালীন ২০২০-২০২১ অর্থবছরে সর্বোচ্চ দুই হাজার ৪৭৭ কোটি ডলারের রেমিট্যান্স এসেছিল দেশে।
বিএমইটি সূত্র বলছে, চলতি বছরের জুন থেকে সেপ্টেম্বরের মাঝামাঝি পর্যন্ত বিশ্বের বিভিন্ন দেশে কর্মী গেছে ছয় লাখ ১৭ হাজার ৫৭৬ জন। ২০২২ সালে বাংলাদেশ থেকে দেশের বাইরে কর্মী গেছে ১১ লাখ ৩৫ হাজার ৮৭৩ জন। প্রবাসে যে হারে কর্মী গেছেন প্রবাসী আয় তার বিপরীতে অবস্থান করছে।
অন্যদিকে রেমিট্যান্স আনতে সরকারের দেয়া বিদ্যমান আড়াই শতাংশের সঙ্গে নিজস্ব তহবিল থেকে আরো আড়াই শতাংশ হারে প্রণোদনা দিচ্ছে বাণিজ্যিক ব্যাংক। নতুন সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, ব্যাংকিং চ্যানেলে রেমিট্যান্স পাঠালে প্রবাসীরা প্রতি ডলারে ১১৫ টাকা ৫০ পয়সা পাবেন, যেখানে আন্তঃব্যাংক বিনিময় হারে ডলারের দাম ১১০ টাকা ৫০ পয়সা। ব্যাংকিং ব্যবস্থায় ডলার প্রবাহ বাড়াতে প্রণোদনা দিয়ে রেমিট্যান্স আনতে ডলারের নতুন এই দর নির্ধারণ করেছে ব্যাংক নির্বাহীদের সংগঠন অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকার্স, বাংলাদেশ (এবিবি) ও বাংলাদেশ ফরেন এক্সচেঞ্জ অথরাইজড ডিলারস অ্যাসোসিয়েশন (বাফেদা)।
শ্রমবাজার অস্থিরতার মধ্যে গত ১৩ অক্টোবর শুক্রবার মালয়েশিয়ার জহুর বারু প্রদেশের গেলাং পাতাহের পাম বাগানের দুটি পৃথক স্থানে অভিযান চালিয়ে ৫৫ জন বাংলাদেশি, মিয়ানমারের ৬২ জন, ভারতীয় ২৮ জন, ইন্দোনেশীয় ২৬ জন পুরুষ ও ৫ জন নারী, পাকিস্তানি ১৬ জন, চীনা দুজন এবং একজন তিমুর দেশের অভিবাসী নাগরিককে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
সূত্র মতে, সৌদি আরবের শ্রমবাজার দীর্ঘ সাত বছর বন্ধ থাকার পর ২০১৫ সালে আবারো চালু হয়। এরপর ২০১৬ সৌদি আরবে যায় ১ লাখ ৪৩ হাজার ৯১৩ জন শ্রমিক। এরপর সবচেয়ে বেশি শ্রমিক যায় ২০১৭ সালে, যার সংখ্যা ৫ লাখ ৫১ হাজার ৩০৮ জন। তবে ২০১৭ সালের সঙ্গে ২০১৮ সালের প্রথম ৯ মাসের শ্রমিক পাঠানোর হার বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, এ বছর দেশটিতে কর্মসংস্থান কমেছে প্রায় ১ লাখ ৮০ হাজারের মতো। ২০১৭ সালের জানুয়ারি থেকে আগস্ট পর্যন্ত প্রথম ৮ মাসে যেখানে শ্রমিক গিয়েছে ৩ লাখ ৯২ হাজার ৬০২ জন; সেখানে ২০১৮ সালের প্রথম ৮ মাসে পাঠানো হয়েছে মাত্র ১ লাখ ৭২ হাজার ৩৭৯ জন শ্রমিক। ২০১৭ সালে দেশটিতে মোট কর্মসংস্থান হয়েছে ৫ লাখ ৫১ হাজার ৩০৮ জনের।
২০০৮ সালে সর্বোচ্চসংখ্যক কর্মী পাঠানো সম্ভব হয়েছে সংযুক্ত আরব আমিরাতে। এর সংখ্যা ৪ লাখ ১৯ হাজার ৩৫৫ জন। সর্বশেষ ২০১২ সালে ২ লাখ ১৫ হাজার ৪৫২ জন কর্মী দেশটিতে যায়। এরপর থেকে নানা কারণে দেশটিতে কর্মী পাঠানোর হার কমে যেতে থাকে। আরব আমিরাত সরকারের নিষেধাজ্ঞার ফলে ২০১৩ সাল থেকে দেশটিতে কর্মী যাওয়া একেবারেই কমে গেছে। ২০১৭ সালের জানুয়ারি থেকে আগস্ট পর্যন্ত প্রথম ৮ মাসে দেশটিতে ২ হাজার ৯৬২ জন শ্রমিক গেলেও ২০১৮ সালের একই সময়ে গিয়েছে ২ হাজার ১৬ জন। আর দেশটিতে ২০১৭ সালে কর্মসংস্থান হয়েছে মাত্র ৪ হাজার ১৩৫ জনের।
যুদ্ধবিধ্বস্ত কুয়েত থেকে বাংলাদেশি শ্রমিকরা প্রথম দেশে ফিরতে বাধ্য হয় ১৯৯০ সালে ইরাকের আগ্রাসনের সময়ে। এরপর দ্বিতীয় দফায় ফিরতে বাধ্য হয় ২০০৩ সালে ইরাকের আরেক দফা দখল ও যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বাধীন যৌথবাহিনীর হামলার সময়ে। যুদ্ধবিধ্বস্ত কুয়েতে এরপর শ্রমবাজার অল্প বিস্তর সৃষ্টি হলেও নিষেধাজ্ঞাও এসেছে দফায় দফায়। সর্বশেষ নিষেধাজ্ঞা আসে ২০০৭ সালে। এরপর দেশটিতে লোক যাওয়ার হার একেবারেই কমে যায়। তবে ২০১৪ সালের শেষ দিকে আবারো কর্মসংস্থানের সৃষ্টি হয়েছে দেশটিতে। ২০১৭ সালে সর্বোচ্চসংখ্যক কর্মী গিয়েছে দেশটিতে।
এ বছরের প্রথম ৮ মাসের সঙ্গে গত বছরের প্রথম ৮ মাসের তুলনা করে এ তথ্য পাওয়া গেছে। ২০১৭ সালের জানুয়ারি থেকে আগস্ট পর্যন্ত ৩৫ হাজার ৪৫২ জন শ্রমিক গিয়েছে কুয়েতে। ২০১৮ সালের একই সময়ে এ সংখ্যা ২৪ হাজার ৫১৬ জন। ২০১৭ সালে দেশটিতে মোট কর্মসংস্থান হয়েছে ৪৯ হাজার ৬০৪ জনের। একই ধরনের পরিসংখ্যান পাওয়া গেছে কাতার, লেবানন, জর্ডান, বাহরাইনের ক্ষেত্রেও। পরিসংখ্যান বলছে, এসব দেশে মানুষ শ্রমবাজার সংকুচিত হওয়ায় বাংলাদেশি শ্রমিক যাওয়ার হারও কমে গেছে।
প্রবাস টাইমে লিখুন আপনিও। প্রবাসে বাংলাদেশি কমিউনিটির নানা আয়োজন, ঘটনা-দুর্ঘটনা, প্রবাসীদের সুযোগ-সুবিধা, সমস্যা-সম্ভাবনা, সাফল্য, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের খবর, ছবি ও ভিডিও আমাদের পাঠাতে পারেন [email protected] মেইলে।
Discussion about this post