গত রবিবার (১২ নভেম্বর) সিলেট থেকে লন্ডনগামী বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের একটি ফ্লাইটে এক যাত্রীর মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে। ফ্লাইটটি ছেড়ে যাওয়ার আড়াই ঘণ্টার মধ্যেই অসুস্থ হয়ে পড়েন যাত্রী শুয়াইবুর রহমান চৌধুরী। ফ্লাইট পার্সারের প্রাথমিক চিকিৎসায় কোনো সাড়া না পেয়ে তাকে মৃত বলে ধরে নেওয়া হয়।
সোমবার সিলেটের ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে লন্ডন রওনা হন বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত ব্রিটিশ নাগরিক শুয়াইবুর রহমান চৌধুরী। রবিবার ওই ফ্লাইটে ওঠার আড়াই ঘণ্টা পর তিনি অসুস্থ হন। পরে তাকে মৃত হিসেবে প্রাথমিকভাবে ঘোষণা করেন ফ্লাইট সংশ্লিষ্টরা। ফ্লাইট লগেও বিষয়টি উল্লেখ আছে।
তবে ফ্লাইটের পাইলট ওই ব্যক্তির জন্য মেডিকেল জরুরি অবস্থা ঘোষণা করে অবতরণের কোনো পদক্ষেপই নেননি। তিনি ফ্লাইট চলমান রেখে এ রকম ঘটনার আনুমানিক ৯ ঘণ্টা পর বিমানটি বিকাল ৪টা ১৬ মিনিটে (জিএমটি) হিথ্রো বিমানবন্দরে অবতরণ করান। আর ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে উড্ডয়নের ১১ ঘণ্টা ৩৭ মিনিট পর ফ্লাইটটি হিথ্রো বিমানবন্দরে পৌঁছায়।
কিন্তু নিয়ম অনুযায়ী, কোনো যাত্রী যখন রানিং বিমানে অসুস্থ হয়ে পড়বেন এবং তার মেডিকেল জরুরি অবস্থা প্রয়োজন হয় তখন মেডিকেল জরুরি অবস্থা ঘোষণা করে বিষয়টি পার্শ্ববর্তী কোনো বিমানবন্দরে জানিয়ে জরুরি অবতরণের জন্য প্রস্তুতি নিতে হয়। প্রতিটি বিমানবন্দর এ রকম পরিস্থিতিতে মেডিকেল জরুরি অবস্থার জন্য প্রস্তুত থাকে। বিমানবন্দরের পার্শ্ববর্তী হাসপাতালগুলোকে সতর্ক রাখা হয় এবং অ্যাম্বুলেন্স ও প্যারামেডিকদের বিমানবন্দরে প্রস্তুত রাখা হয়।
যাত্রী অসুস্থ হয়ে যাওয়ার পরও কাছের কোনো বিমানবন্দরে অবতরণ কেন করা হয়নি জানতে চাইলে পাইলট-ইন-কমান্ড ক্যাপ্টেন ফজল মাহমুদ একটি গণমাধ্যমকে বলেন, জরুরি অবতরণের উদ্দেশ্য হচ্ছে তাকে বাঁচানো, জানাজার ব্যবস্থা করা নয়।
আমরা যখন জানতে পারলাম ততক্ষণে তাকে মৃত বলে ধরে নেওয়া হয়েছে। ওই যাত্রীকে মৃত ঘোষণা করার জন্য সেখানে কোনো ডাক্তার ছিলেন না। ফ্লাইট পার্সারের ওপর নির্ভর করেই তাকে মৃত বলে ধরে নেওয়া হয়। পরে পার্সার যাত্রীর মরদেহটি নিয়ে একটি খালি সিটের সারিতে শুইয়ে দেয়।
ফ্লাইট লগ অনুসারে, বিমানের ওই ফ্লাইটটি ১২ নভেম্বর বাংলাদেশ সময় প্রায় সোয়া ১০টার দিকে উড্ডয়ন করে। জিএমটি/ইউটিসি অনুযায়ী সময় তখন ভোর ৪টা ১৬ মিনিট। আনুমানিক ৬টা ৫৫ ইউটিসিতে কেবিনের প্রধান ফ্লাইট পার্সার পাইলটকে একজন যাত্রী সম্পর্কে অবহিত করেন। অসুস্থ ওই যাত্রীকে অক্সিজেন দিয়ে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছিল। ৭টা ২৫ মিনিটে পার্সার তাকে মৃত বলে ধরে নেন।
বিমান সংশ্লিষ্টরা বলছেন, ফ্লাইট পার্সারদের মূলত যাত্রীদের প্রাথমিক চিকিৎসার জন্য রাখা হয়। তারা প্রশিক্ষিত তবে পেশাদার নয়। বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের লন্ডনের কান্ট্রি হেড ইরতেজা কামাল চৌধুরী বলেন, বিষয়টি নিয়ে এখনো তদন্ত করা হয়নি। হিথ্রো বিমানবন্দরে অবতরণের পর কর্তৃপক্ষ দায়িত্ব নিয়ে সংশ্লিষ্ট সবার সাক্ষাৎকার নেয়। পুলিশ ও চিকিৎসা পেশাদাররা তাদের কাজ করেছেন।
তিনি বলেন, হিথ্রো বিমানবন্দরে ফ্লাইটটি থেকে যাত্রী নামানোর আগে বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষের অনুমতি পেতে তাদের আড়াই ঘণ্টা অপেক্ষা করতে হয়েছিল।
প্রবাস টাইমে লিখুন আপনিও। প্রবাসে বাংলাদেশি কমিউনিটির নানা আয়োজন, ঘটনা-দুর্ঘটনা, প্রবাসীদের সুযোগ-সুবিধা, সমস্যা-সম্ভাবনা, সাফল্য, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের খবর, ছবি ও ভিডিও আমাদের পাঠাতে পারেন [email protected] মেইলে।
Discussion about this post