সম্প্রতি তরুণদের মাঝে ব্যাপক জনপ্রিয় হয়ে উঠা ভিডিওভিত্তিক সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম টিকটক। সঙ্গীত, নাচ, হাস্যরস, অভিনয়সহ নানামুখী বিষয়বস্তুতে আকর্ষণীয় ভিডিও তৈরি করে টিকটকে নিজেদের প্রকাশ করছে তরুণরা। কিন্তু এই মাধ্যমটিকে সামাজিক নৈতিকতার জন্য হুমকি হিসেবে দেখছে নেপাল সরকার।
দেশটি বলছে, জনপ্রিয় এই ভিডিও-শেয়ারিং অ্যাপের ‘অপব্যবহারে’ সামাজিক সম্প্রীতি নষ্ট হচ্ছে এবং সহযোগিতামূলক অনুভূতি বিঘ্নিত হচ্ছে। এছাড়া টিকটক নিয়ন্ত্রণ করার জন্য ক্রমবর্ধমান দাবি রয়েছে বলেও জানিয়েছে নেপাল। সোমবার (১৩ নভেম্বর) কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরার এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে।
নেপালের যোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রী রেখা শর্মা সোমবার অনুষ্ঠিত মন্ত্রিসভার বৈঠকে টিকটক নিষিদ্ধ করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। শর্মা বলেন, ধারাবাহিকভাবে সামাজিক সম্প্রীতিকে বিঘ্নিত করা এবং পারিবারিক কাঠামো ও সামাজিক সম্পর্ককে ব্যাহত করার মত কন্টেন্ট শেয়ারের জন্য টিকটকের প্ল্যাটফর্ম ব্যবহৃত হচ্ছে। তাই এটি নিষিদ্ধের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
আল জাজিরা বলছে, বিশ্বের বহু দেশেই টিকটক ইতোমধ্যেই আংশিক বা সম্পূর্ণভাবে নিষিদ্ধ করা হয়েছে। এর মধ্যে অনেক দেশই আবার নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগের কারণ দেখিয়ে এই পদক্ষেপ নিয়েছে। দক্ষিণ এশিয়ার এই দেশটির স্থানীয় মিডিয়া রিপোর্ট অনুসারে, নেপালে গত চার বছরে ১৬০০ টিরও বেশি টিকটক-সংক্রান্ত সাইবার ক্রাইম মামলা নথিভুক্ত করা হয়েছে। নেপাল টেলিকম অথরিটির প্রধান পুরুষোত্তম খানাল বলেছেন, ইন্টারনেট পরিষেবা প্রদানকারীদের অ্যাপটি বন্ধ করতে বলা হয়েছে।
বার্তাসংস্থা রয়টার্সকে খানাল বলেছেন, ‘কয়েক জায়গায় ইতিমধ্যেই বন্ধ হয়ে গেছে, আর অন্যরা সোমবার রাতে সেটি বন্ধ করে দিয়েছে।’ টিকটক অবশ্য তাৎক্ষণিকভাবে এই বিষয়ে মন্তব্য করেনি। তবে নেপালের বিরোধী নেতারা অ্যাপ নিষিদ্ধের এই পদক্ষেপের সমালোচনা করেছেন। তারা বলেছেন, এতে কার্যকারিতা পরিপক্কতা এবং দায়িত্বশীলতার অভাব রয়েছে।
নেপালের সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী এবং নেপালের কমিউনিস্ট পার্টির সিনিয়র নেতা প্রদীপ গাওয়ালি বলেছেন, ‘অন্যান্য সোশ্যাল মিডিয়াতেও অনেক অবাঞ্ছিত কন্টেন্ট রয়েছে। যা করতে হবে তা হলো- এগুলোকে নিয়ন্ত্রণ করা। সীমাবদ্ধ করে দেওয়া নয়।’
এছাড়া ক্ষমতাসীন জোটের অংশ নেপালি কংগ্রেস পার্টির নেতা গগন থাপা বলেছেন, সরকারের উদ্দেশ্য মনে হচ্ছে ‘মত প্রকাশের স্বাধীনতাকে রোধ করা’। তার দাবি, ‘যারা সোশ্যাল মিডিয়ার অপব্যবহার করে তাদের নিরুৎসাহিত করার জন্য রেগুলেশন প্রয়োজন, কিন্তু রেগুলেশনের নামে সোশ্যাল মিডিয়া বন্ধ করা সম্পূর্ণ ভুল।’
অন্যদিকে টিকটকের কন্টেন্টকে ‘অনৈতিক এবং অশ্লীল’ বলে অভিহিত করে অ্যাপটিকে দক্ষিণ এশিয়ার আরেক দেশ পাকিস্তান কমপক্ষে চারবার নিষিদ্ধ করেছে।
প্রবাস টাইমে লিখুন আপনিও। প্রবাসে বাংলাদেশি কমিউনিটির নানা আয়োজন, ঘটনা-দুর্ঘটনা, প্রবাসীদের সুযোগ-সুবিধা, সমস্যা-সম্ভাবনা, সাফল্য, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের খবর, ছবি ও ভিডিও আমাদের পাঠাতে পারেন [email protected] মেইলে।
Discussion about this post