সৌদি আরবের ইতিহাস অত্যন্ত সমৃদ্ধ। এই দেশটি ইসলামের জন্মভূমি। ৬ষ্ঠ শতাব্দীতে ইসলাম ধর্মের প্রবর্তক হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) এই দেশে জন্মগ্রহণ করেন এবং ইসলামের প্রথম রাষ্ট্র স্থাপন করেন। সৌদি আরবের নাগরিকদের শতভাগ মুসলিম। এ ছাড়া দেশটিতে প্রায় এক কোটি লোক বিদেশি কর্মী হিসেবে কাজ করে। তাদের মধ্যে ভিন্ন ধর্মের অনেক লোক রয়েছে।
সৌদি আরব মূলত ৫টি আমিরাত বা রাজ্য বিভক্ত। সেগুলো হলো নজদ, আরার, আসির, আহসা ও হেজাজ। আবদুল আজিজ ইবনে সৌদ ১৯৩২ সালে ৫টি রাজ্য নিয়ে সৌদি আরব সাম্রাজ্য প্রতিষ্ঠা করেন। ১৯০২ সালে নজদ, ১৯১৩ সালে আহসা, ১৯২১ সালে আরার, ১৯২৫ সালে হেজাজ ও ১৯৩০ সালে আসির নিজের নিয়ন্ত্রণে আনেন তিনি।
সৌদি পুরোপুরি রাজতান্ত্রিক পদ্ধতিতে পরিচালিত হয় এবং আইনের ক্ষেত্রে ইসলামি আইনের অনুসরণ করা হয়। ইসলামের দুই পবিত্র মসজিদ মসজিদুল হারাম ও মসজিদে নববির কারণে সৌদি আরবকে দুই পবিত্র মসজিদের দেশ বলা হয়। দেশটির জনসংখ্যা প্রায় সাড়ে তিন কোটি। এর মধ্যে আড়াই কোটির বেশি সৌদিয়ান। বাকিরা বিদেশি।
পৃথিবীর অন্যতম প্রধান সর্বোচ্চ তেল উৎপাদন ও রপ্তানিকারক এবং পৃথিবীর দ্বিতীয় বৃহত্তম হাইড্রোকার্বন মজুদকারী দেশ সৌদি আরব। তেলের কারণেই দেশটির অর্থনীতি যেমন বেড়েছে, তেমনই এর মানবসম্পদ উন্নয়ন সূচকও ওপরের দিকে। একমাত্র আরব দেশ হিসেবে জি-২০ প্রধান অর্থনৈতিক শক্তির সদস্য সৌদি।
পৃথিবীর চতুর্থ সর্বোচ্চ সামরিক খরচ বহনকারী দেশ সৌদি আরব। দেশটিকে মধ্যপ্রাচ্যের ক্ষমতাধর দেশ হিসেবে ধরা হয়। রাজতান্ত্রিক দেশ হওয়ায় সৌদিতে যেকোনো ধরনের রাজনৈতিক সংগঠন কিংবা জাতীয় নির্বাচন নিষিদ্ধ। ১৯৯২ সালে রাজকীয় ফরমান জারির মাধ্যমে গৃহীত মৌলিক আইন অনুযায়ী রাজাকে অবশ্যই শরিয়াহ (ইসলামি আইন) এবং পবিত্র কোরআন মেনে শাসন করতে হবে।
কোরআন এবং সুন্নাহকে সৌদি আরবের সংবিধান হিসেবে বিবেচনা করা হয়। সৌদি নাগরিকদের জীবনযাত্রার মান উন্নত। শিক্ষার হার প্রায় ৮০.৫ শতাংশ। নাগরিকরা বিলাসবহুল জীবনযাপন করেন। সরকারি পরিসংখ্যান অনুযায়ী, সৌদি আরবে অপরাধের হার প্রায় শূন্য। পোশাক পরিধানের ক্ষেত্রে ইসলামি শরিয়াহ মেনে চলা হয়।
সৌদি আরবে সমগ্র বিশ্বের ভূ-ভাগের ২০% খনিজ তেলের মজুদ রয়েছে। পরিমাণে এটি ২৬ হাজার কোটি ব্যারেল। তেল ছাড়াও গ্যাস ও স্বর্ণ খনি রয়েছে সৌদিতে। জিএনপি অনুসারে, সৌদি আরব বিশ্বের শীর্ষ ধনী দেশের একটি। উইকিপিডিয়া ও ইনসাইক্লোপিডিয়া ব্রিটানিকায় উল্লেখ রয়েছে, সৌদি আরবের নাগরিকের ৮০-৮৫ শতাংশ সুন্নি মুসলিম। এ ছাড়া ১৫-২০ শতাংশ শিয়া।
এ ছাড়া দেশটিতে অন্তত ১৮ লাখ খ্রিস্টান বাস করে, তারা সবাই বিদেশি কর্মী। এ ছাড়া সৌদি আরবে ১৫ লাখ ভারতীয় কাজ করেন। তাদের মধ্যে বেশিরভাগ মুসলিম হলেও অনেক হিন্দুও রয়েছে। সৌদি আরবে প্রকাশ্যে ইসলাম ছাড়া অন্য কোনো ধর্মপালনকে উৎসাহিত করা হয় না। এ ছাড়া অন্যান্য ধর্মের প্রচারের ওপরও কঠোরতা রয়েছে। দেশটিতে অন্য কোনো ধর্মের উপাসনালয় নেই।
প্রবাস টাইমে লিখুন আপনিও। প্রবাসে বাংলাদেশি কমিউনিটির নানা আয়োজন, ঘটনা-দুর্ঘটনা, প্রবাসীদের সুযোগ-সুবিধা, সমস্যা-সম্ভাবনা, সাফল্য, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের খবর, ছবি ও ভিডিও আমাদের পাঠাতে পারেন [email protected] মেইলে।
Discussion about this post