বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ (বেবিচক) বিমানবন্দর উন্নয়ন ও যাত্রী নিরাপত্তা ফি বাড়ানোর প্রস্তাব করেছে। প্রস্তাবিত ফি বৃদ্ধি আগামী ১ জানুয়ারি থেকে কার্যকর হবে। এটি কার্যকর হলে যাত্রীদের আকাশভ্রমণে বাড়তি খরচ গুনতে হবে। জানা গেছে, ডলারের মূল্য বেড়ে যাওয়ায় এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে বেবিচক।
গত মাসে বেবিচকের বোর্ডসভায় নেওয়া এ সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত করতে প্রস্তাবনা আকারে বেসামরিক বিমান মন্ত্রণালয় ও অর্থ মন্ত্রণালয়ে চিঠি পাঠানো হয়েছে। বেবিচকের বোর্ডসভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, সার্কভুক্ত দেশের জন্য বিমানবন্দর উন্নয়ন ও যাত্রী নিরাপত্তা ফি ১১৯৯ টাকার স্থলে ১৫৪০ টাকা করার প্রস্তাব করা হয়েছে। অন্যান্য দেশের ক্ষেত্রে এই ফি ২০১৮ টাকার স্থলে ২৮০০ টাকা এবং অভ্যন্তরীণ যাত্রীদের ক্ষেত্রে ১৭০ টাকা থেকে বাড়িয়ে ২৫০ টাকা করার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে।
বেসরকারি একাধিক বিমান সংস্থার কর্মকর্তা গণমাধ্যমকে বলেন, বিমানবন্দরের ফি বাড়লে যাত্রীদের টিকিটের দামও বাড়াতে হবে। অর্থাৎ যাত্রীদের ভ্রমণ খরচ বাড়বে।
দেশি-বিদেশি সব এয়ারলাইন্স কর্তৃক বাংলাদেশ থেকে যাত্রী ও পণ্য পরিবহনের ভাড়া আগামী ১ জানুয়ারি থেকে দেশি মুদ্রায় নির্ধারণের প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। অন্যদিকে বাংলাদেশের বিমানবন্দর ব্যবহারকারী যাত্রীদের আন্তর্জাতিক রুটে যাতায়াতের ক্ষেত্রে বিমানবন্দর উন্নয়ন ও নিরাপত্তা ফি মার্কিন ডলারে আদায় করা হচ্ছে। দুটি ক্ষেত্রে মুদ্রা ব্যবস্থাপনায় সমন্বয় আনতে মন্ত্রণালয় থেকে ফি দুটি বিদ্যমান মার্কিন ডলারের পরিবর্তে বাংলাদেশি টাকায় নির্ধারণের জন্য প্রস্তাব প্রেরণের নির্দেশনা দেওয়া হয়। এরই প্রেক্ষিতে ফি বৃদ্ধির প্রস্তাবনা দিয়েছে বেবিচক।
প্রস্তাবনায় বলা হয়, সার্কভুক্ত দেশের যাত্রীর জন্য ২০২০ সালের আগস্টে ডলার রেট ৮৫.২০ টাকা অনুযায়ী বিমানবন্দর উন্নয়ন ফি এবং যাত্রী নিরাপত্তা ফি ছিল ৯৩৭ টাকা। ২০২৩ সালের আগস্টে ডলার রেট ১০৯ টাকা এবং ১৩ শতাংশ মুদ্রাস্ফীতির বিবেচনায় বন্দর উন্নয়ন ফি এবং যাত্রী নিরাপত্তা ফি বাংলাদেশি টাকায় হয়েছে ১১৯৯ টাকা। গড়ে প্রায় ১৩ শতাংশ মুদ্রাস্ফীতি বিবেচনায় ২০২৫ সাল পর্যন্ত এই ফি হবে ১৫৪০ টাকা। সার্কভুক্ত দেশের বাইরের যাত্রীর জন্য ২০২০ সালের আগস্টে
ডলার রেট ৮৫.২০ টাকা অনুযায়ী বিমানবন্দর উন্নয়ন ফি এবং যাত্রী নিরাপত্তা ফি ছিল ১৭০৪ টাকা। ২০২৩ সালের আগস্টে ডলার রেট ১০৯ টাকা এবং ১৩ শতাংশ মুদ্রাস্ফীতির বিবেচনায় বন্দর উন্নয়ন ফি এবং যাত্রী নিরাপত্তা ফি বাংলাদেশি টাকায় হয়েছে ২১৮০ টাকা। গড়ে প্রায় ১৩ শতাংশ মুদ্রাস্ফীতি বিবেচনায় ২০২৫ সাল পর্যন্ত এই ফি হবে ২৮০০ টাকা। আর অভ্যন্তরীণ যাত্রীর জন্য ২০২০ সালের আগস্টে ডলার রেট ৮৫.২০ টাকা অনুযায়ী বিমানবন্দর উন্নয়ন ফি এবং যাত্রী নিরাপত্তা ফি ছিল ১৭০ টাকা।
২০২৩ সালের আগস্টে ডলার রেট ১০৯ টাকা এবং ১৩ শতাংশ মুদ্রাস্ফীতির বিবেচনায় বন্দর উন্নয়ন ফি এবং যাত্রী নিরাপত্তা ফি বাংলাদেশি টাকায় হয়েছে ১৭০ টাকা। গড়ে প্রায় ১৩ শতাংশ মুদ্রাস্ফীতি বিবেচনায় ২০২৫ সাল পর্যন্ত এই ফি হবে ২৫০ টাকা।
জানা গেছে, বাংলাদেশ ব্যাংক নির্ধারিত ২৮ আগস্ট ২০২৩-এর ডলার বিনিময়মূল্য অনুযায়ী বিমানবন্দর উন্নয়ন ফি ও যাত্রী নিরাপত্তা ফি ধার্য হলে, সার্কভুক্ত দেশের যাত্রীর জন্য ফি হয় ১৪৪৫ টাকা, সার্কভুক্ত দেশের বাইরের যাত্রীর ফি হয় ৩০০০ টাকা এবং অভ্যন্তরীণ যাত্রীর ফি হয় ১৭০ টাকা।
ডলার মূল্য পর্যবেক্ষণ করলে দেখা যায় যে, ২০২১ হতে ২০২৩ সাল পর্যন্ত বছরে প্রায় ১৩ শতাংশ হারে এর মূল্য বৃদ্ধি পেয়েছে। ফি দুটি ডলারের পরিবর্তে টাকায় নির্ধারণ হলে এবং আগামীতে ডলার মূল্য বৃদ্ধি পেলে ভবিষ্যতে এ খাতে ফি আদায়ের পরিমাণ হ্রাস পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এ কারণে ভবিষ্যতে ডলারের মূল্যস্ফীতি বিবেচনায় বৃদ্ধি করা যেতে পারে। বেবিচকের বোর্ডসভায় প্রস্তাবিত হারে ফি নির্ধারণের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে ইউএস-বাংলার মহাব্যবস্থাপক (জনসংযোগ) কামরুল ইসলাম বলেন, ফি বৃদ্ধি হলে টিকিটের ভাড়াও বৃদ্ধি পাবে। এই বাড়তি টাকা যাত্রীদেরকেই বহন করতে হবে। ফলে যাত্রীদের ব্যয় বেড়ে যাবে।
প্রবাস টাইমে লিখুন আপনিও। প্রবাসে বাংলাদেশি কমিউনিটির নানা আয়োজন, ঘটনা-দুর্ঘটনা, প্রবাসীদের সুযোগ-সুবিধা, সমস্যা-সম্ভাবনা, সাফল্য, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের খবর, ছবি ও ভিডিও আমাদের পাঠাতে পারেন [email protected] মেইলে।
Discussion about this post