নিজেদের নীতি বা স্বার্থ পরিপন্থি হলেই যেকোনো দেশের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা আরোপ কিংবা আরোপের হুমকি দেয় যুক্তরাষ্ট্র– এমন অভিযোগ নতুন নয়। আর এসব নিষেধাজ্ঞার পেছনে থাকে গণতন্ত্রের অগ্রগতি না হওয়া বা মানবাধিকার লঙ্ঘনের মতো নানা অজুহাত। তারই ধারাবাহিকতায় এবার নতুন এক নিষেধাজ্ঞার ঘোষণা দিলো দেশটি।
মঙ্গলবার (৩১ অক্টোবর) মিয়ানমার জান্তানিয়ন্ত্রিত তেল-গ্যাস কোম্পানি মিয়ানমার অয়েল অ্যান্ড গ্যাস এন্টারপ্রাইজের (এমওজিই) ওপর নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। এটিই মিয়ানমারের বৈদেশিক রাজস্বের প্রধান উৎসে (রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে) যুক্তরাষ্ট্রের প্রথম সরাসরি আঘাত। খবর রয়টার্সের।
নিষেধাজ্ঞার কথা জানিয়ে মার্কিন ট্রেজারি বিভাগ জারি করা এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, আগামী ১৫ ডিসেম্বর থেকে এটি কার্যকর করা হবে।
রয়টার্স জানায়, মিয়ানমারের রাষ্ট্রীয় তেল ও গ্যাস এন্টারপ্রাইজের বেশ কিছু আর্থিক পরিষেবা নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছে যুক্তরাষ্ট্রের ট্রেজারি বিভাগ। এসব পরিষেবার মধ্যে আছে ঋণ, অ্যাকাউন্ট, বিমা, বিনিয়োগ ও অন্যান্য পরিষেবা।
মিয়ানমারের জান্তা সরকারের বৈদেশিক মুদ্রা আয়ের সবচেয়ে বড় উৎস তেল-গ্যাস। জান্তা সরকারের পরিসংখ্যান অনুসারে, ২০২২ সালের ৩১ মার্চ থেকে ছয় মাসে শুধু এই খাত থেকেই ১৭২ কোটি ডলার আয় করেছে তারা।
এর আগে, আফ্রিকার চার দেশে নতুন নিষেধাজ্ঞা ঘোষণা করে যুক্তরাষ্ট্র। ‘মানবাধিকারের চরম লঙ্ঘন’ ও ‘গণতান্ত্রিক শাসনের পথে যথাযথ অগ্রগতি’ না হওয়ায় উগান্ডা, গ্যাবন, নাইজার ও মধ্য আফ্রিকা প্রজাতন্ত্রের সঙ্গে বাণিজ্য চুক্তি বাতিল করা হয়েছে বলে জানান মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন।
সংবাদমাধ্যম টিআরটি আফ্রিকার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০০০ সালে আফ্রিকা মহাদেশের এই চারদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়ন জোরদার ও সহযোগিতা করতে আফ্রিকান গ্রোথ অ্যান্ড অপরচুনিটি অ্যাক্ট (অ্যাগোয়া) করেছিল যুক্তরাষ্ট্র। সেই চুক্তির আওতায় দেশগুলো যুক্তরাষ্ট্রের কাছ থেকে বিভিন্ন বাণিজ্যিক সুবিধা পেয়ে আসছিল। এ সুবিধার আওতায় সাব-সাহারা অঞ্চলের দেশগুলো যুক্তরাষ্ট্রে বিনা শুল্কে ১৮০০ এরও বেশি পণ্য রফতানি করতে পারত।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বলেছেন, ‘নাইজার ও গ্যাবন উভয় দেশই চলতি বছরে সেনা অভ্যুত্থানের পর বর্তমানে সামরিক শাসনের অধীন রয়েছে। তাই দুই দেশই অ্যাগোয়া চুক্তির যোগ্যতা হারিয়েছে। কারণ এই দেশ দুটি রাজনৈতিক বহুত্ববাদ ও আইনের শাসন প্রতিষ্ঠায় ধারাবাহিক অগ্রগতি দেখাতে পারেনি।’
অন্যদিকে মধ্য আফ্রিকা প্রজাতন্ত্র ও উগান্ডাকে বাণিজ্যচুক্তি থেকে বহিষ্কারের বিষয়ে বাইডেন বলেন, ‘এ দেশ দুটির সরকার আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত মানবাধিকারের মানদণ্ড চরমভাবে লঙ্ঘন করেছে।’
প্রবাস টাইমে লিখুন আপনিও। প্রবাসে বাংলাদেশি কমিউনিটির নানা আয়োজন, ঘটনা-দুর্ঘটনা, প্রবাসীদের সুযোগ-সুবিধা, সমস্যা-সম্ভাবনা, সাফল্য, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের খবর, ছবি ও ভিডিও আমাদের পাঠাতে পারেন [email protected] মেইলে।
Discussion about this post