পরিবারে সচ্ছলতা আনতে ২০১৮ সালে সৌদি আরব যান বাহার মিয়া। ২০২১ সালের ৮ মে তিনি ছুটিতে দেশে আসেন। কিন্তু হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে আর বেরোতে পারেননি। কারণ বিমানবন্দর কাস্টমস কর্তৃপক্ষ তাঁকে সসপ্যান ও টর্চলাইটের ভেতর কাঁচা সোনা লুকিয়ে আনার অভিযোগে গ্রেপ্তার করে।
যদিও সেই সসপ্যান বা টর্চলাইট তার ছিল না। এক প্রতিবেশী সৌদি আরবে সেগুলো তাঁকে দিয়েছিলেন পরিবারের কাছে পৌঁছে দিতে। তার ভেতরে কিছু ছিল কি না, তা তিনি জানতেন না। সোনা পাচারের মামলায় বাহারকে ৯ মাস কারাগারে থাকতে হয়। এখনো তাঁর টাকা তো খরচ হচ্ছেই, মামলা বিচারাধীন থাকায় সৌদি আরবেও আর যেতে পারেননি।
বাহারের মতো অনেক প্রবাসী শ্রমিককে দেশে এসে এভাবে চোরাকারবারির তকমা পেতে হচ্ছে। বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ, পুলিশ ও কাস্টমস কর্মকর্তারা বলছেন, চোরাকারবারিরা সব সময় প্রবাসীদের টার্গেট করে। সিঙ্গাপুর, সংযুক্ত আরব আমিরাত, সৌদি আরবসহ বিভিন্ন দেশ থেকে আসা প্রবাসী শ্রমিকেরা চোরাকারবারিদের খপ্পরে পড়েন। চোরাকারবারিরা নানা কৌশলে বিভিন্ন ডিভাইস ও বৈদ্যুতিক যন্ত্রাংশের ভেতর বিশেষ কায়দায় সোনা, বিদেশি মুদ্রা ও মাদক লুকিয়ে প্রবাসীদের হাতে ধরিয়ে দেয়।
চোরাকারবারিরা প্রবাসী শ্রমিকদের প্রলোভন দেখিয়ে কিংবা অনুনয়-বিনয় করে চোরাই সামগ্রীর প্যাকেট বা পার্সেল বাড়িতে পাঠানোর কথা বলে তাদের কাছে দিয়ে দেয়। নিরীহ প্রবাসীরা জানতেই পারেন না সেসব প্যাকেটে কী আছে। দেশের বিমানবন্দরে এসে ধরা পড়ে তাঁদের জেল-জরিমানার মুখে পড়তে হয়।
এ বিষয়ে প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থানমন্ত্রী ইমরান আহমদ বলেন, প্রবাসীরা যাতে চোরাকারবারিদের খপ্পরে না পড়েন, সে জন্য দেশে ও বিদেশে অনেক কিছুই করা হয়েছে। এরপরও যদি কেউ কোনো বড় ধরনের সমস্যায় পড়েন তাহলে তাঁদের পাশে থাকবে মন্ত্রণালয়।
চোরাচালান প্রতিরোধে বিমানবন্দরে এপিবিএনও কাজ করে। এপিবিএনের এক কর্মকর্তা বলেন, ‘আমরা বুঝি, অনেকে সরল বিশ্বাসে অন্যের ব্যাগ বা পার্সেল নিয়ে আসে। কিন্তু আমাদের কিছু করার থাকে না। কারণ আইনেই রয়েছে, চোরাই পণ্য যার দখলে থাকবে তিনিই আসামি।’
প্রবাস টাইমে লিখুন আপনিও। প্রবাসে বাংলাদেশি কমিউনিটির নানা আয়োজন, ঘটনা-দুর্ঘটনা, প্রবাসীদের সুযোগ-সুবিধা, সমস্যা-সম্ভাবনা, সাফল্য, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের খবর, ছবি ও ভিডিও আমাদের পাঠাতে পারেন [email protected] মেইলে।
Discussion about this post