ক্ষতিগ্রস্ত প্রবাসীদের সহজ শর্তে ঋণের দাবী
মহামারী করোনার প্রাদুর্ভাবে থমকে গেছে বিশ্ব অর্থনীতি। দেশের অর্থনীতির সকল সেক্টর থমকে গেলেও এই দুর্যোগময় মুহূর্তে প্রবাসীদের পাঠানো রেমিট্যান্সে রেকর্ড গড়েছে। জুলাই মাসে পাঠানো প্রবাসীদের রেমিট্যান্সের পরিমাণ পূর্বের সকল রেকর্ড ছাড়িয়েছে। প্রবাসীরা দেশের অর্থনীতিতে এতটা অবদান রাখলেও বর্তমান পরিস্থিতিতে ভালো নেই এই রেমিট্যান্স যোদ্ধারা। মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশ থেকে কর্মহীন হয়ে খালি হাতে দেশে ফেরত আসছেন প্রতিনিয়ত। তাদেরকে দেশে কর্মসংস্থানের জন্য সরকার স্বল্প সুদে ঋণ দেওয়ার ঘোষণা দিলেও ব্যাংকের কঠোর নিয়মের জালে আটকে আছে সেই ঋণ। অসহায় প্রবাসীরা বঞ্চিত হচ্ছে সরকারের দেওয়া এই ঋণ সুবিধা থেকে।
করোনার কারণে মধ্যপ্রাচ্য সহ অনেক দেশের প্রবাসী ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে কর্ম হারিয়ে শূন্য হাতে দেশে ফিরে আসছেন। বর্তমান সরকার দেশের উন্নয়নে প্রবাসীদের অবদানের কথা বিবেচনা করে ক্ষতিগ্রস্ত প্রবাসী যারা বৈধভাবে বিদেশে ছিলেন কর্ম হারিয়ে দেশে ফেরত গিয়েছে তাদের জন্য ৭শত কোটির টাকা স্বল্প সুদে প্রদানের ঘোষণা দেয়। সরকারে গৃহীত এই উদ্যোগকে স্বাধুবাদ জানায় প্রবাসীরা।
আরো পড়ুনঃ নিষ্প্রাণ ঈদ উদযাপন ওমান প্রবাসীদের
মার্চের পর থেকে যেসকল প্রবাসীরা অসুস্থ হয়ে চাকুরী হারিয়ে দেশে ফিরে গেছে তারা এই ঋণ সুবিধার আওতায় আসবে। দেশে ফেরত অনেক প্রবাসী ঋণের জন্য প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংকে যোগাযোগ করার পর ঋণ পেতে স্বল্প সুদ হলে কঠিন শর্তের কথা শুনে হতাশ হয়ে ফিরে এসেছে অনেক প্রবাসী।
চলতি বছরের মার্চ থেকে অনেক প্রবাসী দেশে ফিরে গেছে এবং আগস্ট থেকে আন্তর্জাতিক ফ্লাইট চালু হলে কুয়েত ছোটখাটো ব্যবসায়ী ও উদ্যোক্তারা দেশে ফেরার অপেক্ষায় রয়েছেন। বর্তমান পরিস্থিতিতে কর্মহীন হয়ে এক বুক আশা নিয়ে সরকারের ঘোষিত ঋণ নিয়ে কিছু একটা করে ঘুরে দাঁড়ানো চিন্তা ভাবনা করলেও ঋণ পেতে যে কঠিন শর্ত দেওয়া হয়েছে, যা অনেক প্রবাসীদের পক্ষে পূরণ করা সম্ভব হবে না।
স্বল্প সুদ হলেও কঠিন শর্তের কারণে ঋণ সুবিধা থেকে বঞ্চিত হওয়ার আশংকা করছেন প্রবাসীরা এবং ঋণ গ্রহণে শর্ত সহজ করার দাবী জানান প্রবাসীরা। করোনা মহামারী সময়ে বিশেষ ফ্লাইট ছাড়াও কুয়েত থেকে সাধারণ ক্ষমায় প্রায় পাঁচ হাজার প্রবাসী দেশে ফিরে গেছে। তাদের মধ্যে একজন নরসিংদীর জেলার বেলাব উপজলোর কাজী মোহাম্মদ শাওন।
আরো পড়ুনঃ প্রবাসীদের মরার উপর খাড়ার ঘা
প্রবাস টাইমকে কাজী মোহাম্মদ শাওন বলেন, জুন মাসের ৯ তারিখে দেশে ফিরে আসার পর সরকারের ঘোষিত ঋণের জন্য আমার পাসপোর্ট, জায়গার দলিল, খতিয়ান সহ আমার কাছে যাহা ছিল সেই সব কাগজ পত্র নিয়ে যোগাযোগ করার পর তারা আর কিছু শর্তের কথা বলে যেমন বৈধ পথে বিদেশ গমনের প্রমাণপত্র, চাকুরীর চুক্তিপত্র যেগুলো যাওয়ার পর মালিক কোম্পানির অফিসে জমা রেখে দিয়েছে। গ্যারান্টারের হালনাগাদ ট্রেড লাইসেন্সের সত্যায়িত ফটোকপি, গ্যারান্টারের স্বাক্ষরিত ৩টি চেকের পাতা, একাউন্টের ৬ মাসের ব্যাংক স্টেটমেন্ট। আমার পরিচিত কয়েকজন ব্যবসায়ী কে বললেও এইসব ডকুমেন্টস দিতে সবাই অপারগতা স্বীকার করে। কেউ আবার কাগজপত্র একটা থাকলেও আরেকটা নাই বলে ফিরিয়ে দিয়েছে। সরকার প্রবাসীদের জন্য স্বল্প সুদে ঋণ দিয়েছে ভালো, একজন প্রবাসী দীর্ঘদিন প্রবাসের থাকার পর ফিরে এসে তার পক্ষে কি এতসব কাগজপত্র জোগাড় করা সম্ভব?
কাজী মোহাম্মদ শাওনের মতো এমন শতাধিক প্রবাসীর অভিযোগ রয়েছে প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংকের এই ঋণের ব্যাপারে। সরকারের কাছে প্রবাসীদের দাবী, সহজ শর্তে প্রবাসীদের ঋণ দিয়ে তাদের কিছু একটা করে সংসার চালানোর ব্যবস্থা করে দেওয়া হউক।
আরো দেখুনঃ ওমান থেকে বিশেষ ফ্লাইটের টিকেট যেভাবে পাবেন
প্রবাস টাইমে লিখুন আপনিও। প্রবাসে বাংলাদেশি কমিউনিটির নানা আয়োজন, ঘটনা-দুর্ঘটনা, প্রবাসীদের সুযোগ-সুবিধা, সমস্যা-সম্ভাবনা, সাফল্য, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের খবর, ছবি ও ভিডিও আমাদের পাঠাতে পারেন [email protected] মেইলে।
Discussion about this post