এনআইডি আবেদনে প্রবাসীরা প্রয়োজনীয় কাগজপত্র দাখিল না করলেও তা বাতিল না করতে নির্দেশ দিয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। এক্ষেত্রে যথাযথ কাগজপত্র জমা দেওয়া সাপেক্ষে তদন্তের পর আবেদন নিষ্পত্তি করতে হবে। ইসি কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, সম্প্রতি সব উপজেলা, জেলা ও আঞ্চলিক নির্বাচন কার্যালয়ে এমন নির্দেশনা পাঠানো হয়েছে। এনআইডি অনুবিভাগের পরিচালক (নিবন্ধন ও প্রবাসী) মো. আব্দুল মমিন সরকার নির্দেশনাটি পাঠিয়েছেন।
এতে বলা হয়, সংযুক্ত আরব আমিরাতে বসবাসরত প্রবাসী বাংলাদেশি নাগরিকদের নিবন্ধন কার্যক্রম চলমান রয়েছে। যেসব প্রবাসীদের বায়োমেট্রিক কার্যক্রম সম্পন্ন করা হয়েছে তাদের আবেদনগুলো কার্ড ম্যানেজমেন্ট সিস্টেমে পাওয়া যাবে। উপজেলা/থানা/রেজিস্ট্রেশন কর্মকর্তারা আবেদনকৃত ভোটার ফরম ও সংযুক্ত দলিলাদি প্রিন্ট করে সরেজমিনে তদন্ত সম্পন্ন করবেন।
যেসব আবেদনের সঙ্গে ডকুমেন্ট সংযুক্ত করা হয়নি সেব আবেদন বাতিল না করে প্রতিবেদন ছকে ‘ডকুমেন্ট সংযুক্ত নেই’ মর্মে উল্লেখ করতে হবে। পরে ডকুমেন্ট সংযুক্ত করা হলে তদন্ত কার্যক্রম সম্পাদন করতে হবে।
আর যাদের আবেদনের সঙ্গে সংযুক্তি রয়েছে তাদের তথ্য সরেজমিন তদন্ত করে আবেদন অনুমোদন বা বাতিল করে প্রতিবেদন দ্রুত দেওয়ার জন্য বলা হয়েছে নির্দেশনায়।
জানা গেছে, সংযুক্ত আরব আমিরাত থেকে সাত হাজারের মতো প্রবাসী এনআইডি নিতে আবেদন করেছে। এদের মধ্যে অর্ধেকের বেশিভাগের আবেদন অনুমোদন হয়নি।
গত ১৮ মে সংযুক্ত আবর আমিরাতে বিদেশে প্রথম এনআইডি কার্যক্রম শুরু করে ইসি। চলতি অক্টোবরে ইতালি, সৌদি আরব ও ব্রিটেনে এ কার্যক্রম শুরু করবে সংস্থাটি। প্রবাসীদের আধিক্য রয়েছে এমন ৪০টি দেশে এ কার্যক্রম হবে।
প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের নির্দেশনা পেয়ে কে এম নূরুল হুদার নেতৃত্বাধীন কমিশন ২০১৯ সালে প্রবাসে এনআইডি সরবরাহের উদ্যোগটি হাতে নেয়। এরপর ২০২০ সালের ১২ ফেব্রুয়ারি যুক্তরাজ্য প্রবাসীদের অনলাইনের ভোটার করে নেওয়ার কার্যক্রম উদ্বোধন করে ইসি। এর আগে ২০১৯ সালের ১৮ নভেম্বর সংযুক্ত আরব আমিরাতের প্রবাসীদের মধ্যে এ কার্যক্রম শুরু করা হয়। তার আগে একই বছর ৫ নভেম্বর মালয়েশিয়ায় অবস্থারত বাংলাদেশিদের ভোটার তালিকায় অন্তর্ভুক্তি এবং স্মার্ট জাতীয় পরিচয়পত্র দেওয়ার অংশ হিসেবে অনলাইনে আবেদন নেওয়ার কার্যক্রম উদ্বোধন করা হয়। এরপর সৌদি আবর, সিঙ্গাপুর ও মালদ্বীপে থাকা বাংলাদেশিদের জন্যও এ সুযোগ চালু করা হয়।
সে সময় অনলাইনে আবেদন নিয়ে সেই আবেদন সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির উপজেলা থেকে যাচাই করে সতত্যা পেলে সংশ্লিষ্ট দেশে দূতাবাস থেকে এনআইডি সরবরাহের পরিকল্পনা ছিল। এরপর করোনা মহামারির কারণে থমকে যায় দূতাবাসের মাধ্যমে এ কার্যক্রম শুরুর পরিকল্পনা।
কাজী হাবিবুল আউয়ালের নেতৃত্বাধীন বর্তমান কমিশন দায়িত্ব নেওয়ার পর সেই কার্যক্রমকে ফের উজ্জীবিত করে। এক্ষেত্রে আগের আবেদনগুলো পাশ কাটিয়ে নতুন করে কার্যক্রম শুরু করেন তারা। ভবিষ্যতে ৪০টি দেশে এনআইডি সেবা নিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে ইসির।
প্রবাসীদের আবেদন করতে যেসব কাগজপত্র জমা দিতে হবে, সেগুলোর মধ্যে রয়েছে অনলাইন জন্ম সনদ, বৈধ বাংলাদেশি পাসপোর্টের কপি, এসএসসি/সমমানের শিক্ষা সনদ, আবেদনকারীর বাবা/মাতা/ভাই/বোন অথবা একজন রক্তের সম্পর্কীয় নিকট আত্মীয়ের (বাংলাদেশে বসবাসকারী) এনআইডি নম্বর প্রভৃতি। এছাড়া পাসপোর্ট ও জন্ম সনদের তথ্যের মধ্যে মিল থাকতে হবে।
প্রবাস টাইমে লিখুন আপনিও। প্রবাসে বাংলাদেশি কমিউনিটির নানা আয়োজন, ঘটনা-দুর্ঘটনা, প্রবাসীদের সুযোগ-সুবিধা, সমস্যা-সম্ভাবনা, সাফল্য, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের খবর, ছবি ও ভিডিও আমাদের পাঠাতে পারেন [email protected] মেইলে।
Discussion about this post