আগামী বছর থেকে কোনো প্রকার প্লাস্টিক ব্যাগ ব্যবহার করতে পারবে না ওমানে বসবাস করা নাগরিকরা। বুধবার (২৯ এপ্রিল) দেশটির পরিবেশ ও জলবায়ু বিষয়ক মন্ত্রী মোহাম্মদ বিন সালেম বিন সাইদ আল তোবি মন্ত্রীপরিষদ বৈঠকে এই নির্দেশ জারি করেছেন। তিনি বলেন, ২০২১ সাল থেকে দেশটিতে বসবাসকারী কেউ প্লাস্টিকের শপিং ব্যাগ ব্যবহার করতে পারবেন না। পরিবেশ সংরক্ষণে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলেও জানান তিনি। নিষেধাজ্ঞার এই সিদ্ধান্তটি ২০২০ সালের ১৫ মার্চ জারি করা হয়েছিলো। সুত্রঃ ওমান অবজারভার
আরও পড়ুনঃ ওমানে খুলে দেওয়া হলো ব্যবসা প্রতিষ্ঠান
দেশটির পরিবেশ সংরক্ষণ ও দূষণ নিয়ন্ত্রণ আইন অনুচ্ছেদ ১ অনুযায়ী বলা হয়েছে যে, কোনো সংস্থা/প্রতিষ্ঠান ওমানের পরিবেশ সংরক্ষণের জন্য প্লাস্টিক শপিং ব্যাগ ব্যবহার করতে পারবে না। আর্টিকেল ২ অনুযায়ী, কোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান প্লাস্টিকের ব্যাগ ব্যবহার করলে তাকে ১০০ রিয়েল জরিমানা দিতে হবে। এবং দ্বিতীয়বার একই অপরাধে জরিমানা দ্বিগুণ হবে বলেও উল্লেখ আছে অনুচ্ছেদে।
পরিবেশ সংরক্ষণ ও দূষণ নিয়ন্ত্রণ রয়্যাল ডিক্রি ১১৪/২০০১ পাশ করে ওমান সরকার। একই সাথে পরিবেশ ও জলবায়ু বিষয়ক রয়্যাল ডিক্রি ১৮/২০০৮ আইন পাশ হয় দেশটিতে।
এদিকে ওমানে পলি ব্যাগ নিষিদ্ধ হলে এর বিকল্প ব্যাগ হিসেবে বাংলাদেশে তৈরি পচনশীল ও পরিবেশবান্ধব পাটের ব্যাগের বিপুল চাহিদা বাড়ার সম্ভাবনা রয়েছে। সেক্ষেত্রে বাংলাদেশের সাথে ওমানের পাটের ব্যাগের ব্যবসার নতুন দুয়ার উন্মোচন হতে পারে বলে মনে করছেন প্রবাসীরা।
ইতিমধ্যেই বাংলাদেশ পাটকল করপোরেশনের বৈজ্ঞানিক উপদেষ্টা ড. মোবারক আহমদ খানের তত্ত্বাবধায়নে পাইলট পর্যায়ে কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে। পচনশীল ও পরিবেশবান্ধব পলিব্যাগ তৈরির উদ্দেশে প্রথমে পাট থেকে সেলুলুজ আহরণ করা হচ্ছে। ওই সেলুলুজকে প্রক্রিয়াজাত করে অন্যান্য পরিবেশবান্ধব দ্রব্যাদির সঙ্গে কম্পোজিট করে এ ব্যাগ তৈরি করা হয়। উৎপাদিত ব্যাগে ৭০ শতাংশের বেশি পাটের সেলুলুজ বিদ্যমান।
বাংলাদেশের আবিষ্কৃত পলিথিনের বিকল্প পাটের তৈরি সোনালি ব্যাগ
এছাড়া এতে অন্য কোনো ধরনের অপচনশীল দ্রব্য ব্যবহার হয় না বিধায় এটি তিন থেকে চার মাসের মধ্যেই সম্পূর্ণরূপে মাটির সঙ্গে মিশে যায়। আবিষ্কৃত এ ব্যাগের ভারবহন ক্ষমতা পলিথিনের প্রায় দেড়গুণ এবং এটি পলিথিনের মতোই স্বচ্ছ হওয়ায় খাদ্য দ্রব্যাদি ও গার্মেন্টস শিল্পের প্যাকেজিং হিসেবে ব্যবহারের ক্ষেত্রে খুবই উপযোগী।
জানাগেছে, দেশীয় কাঁচামাল ব্যবহার করায় এ ব্যাগের দাম প্রচলিত পলিথিন ব্যাগের কাছাকাছিই থাকবে। পাট দ্বারা তৈরি এই পচনশীল পলিব্যাগ সমস্যা সমাধানে কার্যকরী ভূমিকা রাখতে পারবে। এ ধরনের প্যাকেজিংয়ের বিদেশেও ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। সার্বিক অবস্থা বিবেচনায় শিগগিরই বাণিজ্যিকভাবে এ ব্যাগ উৎপাদন করার প্রক্রিয়া শুরু হবে বলে মুঠোফোনে প্রবাস টাইমকে জানিয়েছেন বাংলাদেশ পাটকল করপোরেশনের বৈজ্ঞানিক উপদেষ্টা ড. মোবারক আহমদ খান।
https://www.youtube.com/watch?v=_2LZqIFmTp4
প্রবাস টাইমে লিখুন আপনিও। প্রবাসে বাংলাদেশি কমিউনিটির নানা আয়োজন, ঘটনা-দুর্ঘটনা, প্রবাসীদের সুযোগ-সুবিধা, সমস্যা-সম্ভাবনা, সাফল্য, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের খবর, ছবি ও ভিডিও আমাদের পাঠাতে পারেন [email protected] মেইলে।
Discussion about this post