প্রবাসী বাংলাদেশিদের সুবিধার্থে আরও তিন দেশে জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) সেবা নিয়ে যাচ্ছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। এক্ষেত্রে সৌদি আরব, ব্রিটেন ও ইতালিতে বসবাসরত প্রবাসীরা দেশগুলোতে বসেই আবেদন করে পাবেন এনআইডি। সূত্রগুলো জানিয়েছে, অক্টোবরের প্রথম সপ্তাহে দেশ তিনটিতে নির্বাচন কমিশন ছয়টি দল পাঠাবে। এক্ষেত্রে সৌদি আরবের জেদ্দা ও রিয়াদে, ইতালির মিলান ও রোমে এবং ব্রিটেনে টিমগুলো পাঠানো হবে। প্রতিটি দলে থাকবেন মোট ৩৬ জন কর্মকর্তা। যারা সংশ্লিষ্ট দেশগুলোর দূতাবাসের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের প্রশিক্ষণ দিয়ে আসবেন।
আর এই দলের প্রস্তুতিমূলক দিনব্যাপী কর্মসূচি চলবে চলতি মাসের ২৬ তারিখ। দূতাবাসের কর্মকর্তারা প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণের পর আবেদন নিয়ে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির উপজেলার নির্বাচন কার্যালয়ে পাঠাবেন। সেখান থেকে তদন্ত প্রতিবেদন ইতিবাচক হলে সংশ্লিষ্ট দেশেই দেওয়া হবে এনআইডি। এ বিষয়ে ইসির এনআইডি অনুবিভাগের সিস্টেম ম্যানেজার মুহাম্মদ আশরাফুল হোসেন বলেন, প্রতিটি দলে একজন টেকনিক্যাল পারসন নেতৃত্ব দেবেন। তবে এটি এখনো ঠিক হয়নি। আগামী মাসের শুরুর দিকে সৌদি আরব, ইতালি ও ব্রিটেনে এই কার্যক্রম হাতে নেওয়ার কথা রয়েছে।
গত ১৮ মে সংযুক্ত আবর আমিরাতে বিদেশে প্রথম এনআইডি কার্যক্রম শুরু করে ইসি। এ পর্যন্ত এনআইডি পাওয়ার জন্য দেশটি থেকে সাত হাজারের মতো আবেদন পড়েছে। অনেকে এরইমধ্যে এনআইডি পেয়েও গেছেন। অনেক আবেদন তদন্তাধীন।
প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের নির্দেশনা পেয়ে কেএম নূরুল হুদার নেতৃত্বাধীন কমিশন ২০১৯ সালে প্রবাসে এনআইডি সরবরাহের উদ্যোগটি হাতে নেয়। এরপর ২০২০ সালের ১২ ফেব্রুয়ারি যুক্তরাজ্য প্রবাসীদের অনলাইনের ভোটার করে নেওয়ার কার্যক্রম উদ্বোধন করে ইসি।
এর আগে ২০১৯ সালের ১৮ নভেম্বর সংযুক্ত আরব আমিরাতের প্রবাসীদের মাঝে এ কার্যক্রম শুরু করা হয়। তার আগে একই বছর ৫ নভেম্বর মালয়েশিয়ায় অবস্থানরত বাংলাদেশিদের ভোটার তালিকায় অন্তর্ভুক্তি এবং স্মার্ট জাতীয় পরিচয়পত্র দেওয়ার অংশ হিসেবে অনলাইনে আবেদন নেওয়ার কার্যক্রম উদ্বোধন করা হয়। এরপর সৌদি আরব, সিঙ্গাপুর ও মালদ্বীপে থাকা বাংলাদেশিদের জন্যও এ সুযোগ চালু করা হয়।
তখন অনলাইনে আবেদন নিয়ে সেই আবেদন সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির উপজেলা থেকে যাচাই করে সত্যতা পেলে সংশ্লিষ্ট দেশে দূতাবাস থেকে এনআইডি সরবরাহের পরিকল্পনা ছিল। এরপর করোনা মহামারির কারণে থমকে যায় দূতাবাসের মাধ্যমে এ কার্যক্রম শুরুর পরিকল্পনা।
কাজী হাবিবুল আউয়ালের নেতৃত্বাধীন বর্তমান কমিশন দায়িত্ব নেওয়ার পর সেই কার্যক্রমকে ফের উজ্জীবিত করেন। এক্ষেত্রে আগের আবেদনগুলো পাশ কাটিয়ে নতুন করে কার্যক্রম শুরু করেন তারা। ভবিষ্যতে ৪০টি দেশে এনআইডি সেবা নিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে ইসির।
প্রবাসীদের আবেদন করতে যেসব কাগজপত্র জমা দিতে হবে, সেগুলোর মধ্যে রয়েছে-অনলাইন জন্মসনদ, বৈধ বাংলাদেশি পাসপোর্টের কপি, এসএসসি/সমমানের শিক্ষা সনদ, আবেদনকারীর পিতা/মাতা/ভাই/বোন অথবা একজন রক্তের সম্পর্কীয় নিকট আত্মীয়ের (বাংলাদেশে বসবাসকারী) এনআইডি নম্বর প্রভৃতি। এ ছাড়া পাসপোর্ট ও জন্ম সনদের তথ্যের মধ্যে মিল থাকতে হবে।
প্রবাস টাইমে লিখুন আপনিও। প্রবাসে বাংলাদেশি কমিউনিটির নানা আয়োজন, ঘটনা-দুর্ঘটনা, প্রবাসীদের সুযোগ-সুবিধা, সমস্যা-সম্ভাবনা, সাফল্য, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের খবর, ছবি ও ভিডিও আমাদের পাঠাতে পারেন [email protected] মেইলে।
Discussion about this post