ওমানে মহামারী করোনা নিয়ন্ত্রণে দেশটির সুপ্রিম কমিটি নানা পদক্ষেপ নিলেও কোনো ভাবেই কমছেনা আক্রান্তের সংখ্যা। এমতাবস্থায় কমিটির সর্বশেষ সিদ্ধান্ত অনুযায়ী আগামী ২৫-জুলাই থেকে দুই সপ্তাহের জন্য সমগ্র ওমান একসাথে লকডাউনের ঘোষণা দেওয়া হয়েছে।
এই সময়ে ওমানের মাতরাহ ও হামারিয়া এলাকাসহ দেশজুড়ে সকল কঠোর চেকপোষ্ট বসানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে সুপ্রিম কমিটি। মাতরাহ ও হামারিয়া শহরটির বাকি অংশ ঘিরে তিনটি পয়েন্টে চেকপোস্ট বসানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। সেগুলো হলো দারসাইট মোড়, ওমান হাউজের নিকট প্রবেশ স্থান ও হামরিয়া রাউন্ডএবাউড। এই পয়েন্টে যানবাহন চলাচল কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রণ করা হবে এমনটাই জানানো হয়েছে।
“সাপ্তাহিক ছুটিতে জনগণের সমাগম হওয়ার সম্ভাবনা এড়াতে কয়েক সপ্তাহ আগে সকল আন্তঃরাষ্ট্রীয় চেকপয়েন্টগুলি ২৫ জুলাই থেকে পুনরায় চালু করা হবে বলে জানিয়েছেন আরএপিপির একজন প্রবীণ কর্মকর্তা। গত ১০ এপ্রিল ওমানে প্রথম করোনা রোগী সনাক্ত হওয়ার পর থেকে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় বিভিন্ন অঞ্চলের নাগরিক ও বাসিন্দাদের জন্য পাঁচটি পরীক্ষামূলক কেন্দ্র খুলেছে। একই সাথে গোটা দেশ লকডাউনের আওতায় নিয়ে এসেছিলো।
চেকপয়েন্টগুলিতে চেক করার সময় লোকদের আইডি কার্ড এবং কোম্পানির চিঠিগুলি দেখাতে হবে। একজন বেসরকারি খাতের কর্মচারী দিলনা সুজিথ পুরো লকডাউনের সময় তার অভিজ্ঞতা বর্ণনা করতে গিয়ে জানান, “আমি প্রতিদিন ওয়াদি কবির থেকে কুরূমে যাতায়াত করি এবং আমাকে দারসাইট মোড়ের প্রধান চেকপোস্ট পেরোতে হবে যেখানে আমাকে আমার অফিস থেকে চিঠি দেখাতে বলা হয়েছিল। একই সাথে আমাকে প্রমান করতে হয়েছিলো যে আমি ওয়াদি কবিরের বাসিন্দা” সুত্রঃ ওমান ডেইলি
আরও পড়ুনঃ ওমানে করোনা পরীক্ষায় সরকারি মুল্য নির্ধারণ
এ ব্যাপারে বাংলাদেশ কমিউনিটি একজন নেতা মুক্তিযোদ্ধা নোমান মোহাম্মাদ বলেন, “২৫ তারিখের লকডাউনের ব্যাপারে এখনো কিছু অস্পষ্টতা রয়ে গেছে। সকালে ওমান অবজারভারে দেখলাম বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থানে চেকপোস্ট পুনঃ স্থাপনের মাধ্যমে মানুষের চলাচলের গতিবিধি নিয়ন্ত্রণ করবে। গতবারের লকডাউনের মত কেহ যদি জরুরী প্রয়োজনে অন্য এলাকায় যেতে হয় তাহলে তাদের কোম্পানির পক্ষ থেকে লেটার লিখে চেক পোস্টে দেখাতে হবে। আর ফেরত আসার সময় উনি যেই বাসায় থাকেন সেই এগ্রিমেন্ট দেখাতে হবে। তবে ঘণ্টা খানিক আগের ব্রেকিং নিউজে দেখলাম সন্ধ্যা সাতটা থেকে সকাল ছয়টা পর্যন্ত সম্পূর্ণভাবে গতিবিধি নিয়ন্ত্রণ করবে। এখানে দিনের বেলায় মানুষ নির্বিঘ্নে যাতায়াত এবং সাধারণ মানুষ কাজে যেতে পারবে কিনা এই ব্যাপারে কিছু বলা হয়নি। তাই আমরা খেটে খাওয়া সাধারণ মানুষ একটু চিন্তিত আছি কারণ গতবারের লকডাউনে মাতরা ডিস্ট্রিক্ট থেকে কেউ কাজে যেতে পারেনি।”
আরও পড়ুনঃ ইয়েমেনে কিডন্যাপ ৫ বাংলাদেশী ওমান প্রবাসী নাবিক
এদিকে লকডাউনের সময় ওমান থেকে বাংলাদেশগামী দুইটি বিশেষ ফ্লাইট রয়েছে, এমতাবস্থায় মাস্কাটের বাহির থেকে তাদের এয়ারপোর্টে আসতে কোনো ধরনের সমস্যা হবে কিনা অথবা লকডাউনের কারণে বিশেষ ফ্লাইটের উপর কোনো প্রভাব পরবে কিনা এ বিষয়ে ওমানে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূতের কাছে জানতে চাইলে তিনি প্রবাস টাইমকে বলেন, “আশাকরি ফ্লাইটে কোনো ধরনের প্রভাব পড়বেনা, কারণ ইতিমধ্যেই আমরা ওমান সরকার থেকে ফ্লাইটের অনুমতি পেয়েছি, সেক্ষেত্রে যারা মাস্কাটের বাহির থেকে আসবেন, তারা চেকপোস্টে ফ্লাইটের টিকেট দেখালেই হয়তো আসতে পারবেন।”
আরও দেখুনঃ ৫জন ওমান প্রবাসী বাংলাদেশী কিডন্যাপের শিকার
প্রবাস টাইমে লিখুন আপনিও। প্রবাসে বাংলাদেশি কমিউনিটির নানা আয়োজন, ঘটনা-দুর্ঘটনা, প্রবাসীদের সুযোগ-সুবিধা, সমস্যা-সম্ভাবনা, সাফল্য, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের খবর, ছবি ও ভিডিও আমাদের পাঠাতে পারেন [email protected] মেইলে।
Discussion about this post