গাজীপুরের এক মালয়েশিয়া প্রবাসীর দুই মেয়েসহ স্ত্রীকে ধর্ষণ শেষে প্রতিবন্ধী এক ছেলেসহ ৪জনকে গলা কেটে হত্যা করা হয়। এমন চাঞ্চল্যকর ঘটনা ঘটেছে গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলার জৈনাবাজার এলাকার আবদার গ্রাম। বুধবার (২২ এপ্রিল) রাতে এ ঘটনা ঘটে এবং পরেরদিন বৃহস্পতিবার বিকেলে প্রবাসীর ছোট ভাই আরিফ ওই বাড়িতে গিয়ে লাশ দেখতে পেয়ে থানায় খবর দিলে পুলিশ এসে লাশগুলো উদ্ধার করে। নিহতরা হলেন, মালয়েশিয়া প্রবাসী কাজলের স্ত্রী ফাতেমা (৩৫), তার বড় মেয়ে নুরা (১৬), ছোট মেয়ে হাওরিন (১৪) ও প্রতিবন্ধী ছেলে ফাদিল (৬)। প্রবাসীর স্ত্রী নিহত ফাতেমা একজন ইন্দোনেশিয়ার নাগরিক।
এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত কেউ গ্রেফতার হয়নি। ভয়ঙ্কর এই হত্যাকাণ্ড কেন ঘটেছে তাও উদঘাটন সম্ভব হয়নি। শুক্রবার (২৪ এপ্রিল) সকালে প্রবাসীর বাবা আবুল হোসেন বাদী হয়ে শ্রীপুর থানায় অজ্ঞাত ব্যক্তিদের আসামী করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেছেন। হত্যাকাণ্ডের খবর পেয়ে গাজীপুরের পুলিশ সুপার শামসুন্নাহার ঘটনাস্থলে যান। পরিদর্শন শেষে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, ‘তিন সন্তানসহ প্রবাসীর স্ত্রী ফাতেমা নৃশংসভাবে খুন হয়েছে। তাদের প্রত্যেককে গলা কেটে হত্যা করা হয়েছে। মৃতদেহ দেখে মনে হচ্ছে তাদেরকে হত্যা করার পূর্বে ধর্ষণ করা হয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে, বুধবার মধ্যরাতের কোন এক সময় তাদের হত্যা করা হয়েছে।’ তিনি আরও বলেন, ‘বিষয়টি আমরা খতিয়ে দেখছি। আশাকরি শিগগিরই বিস্তারিত বলতে পারব।’
স্থানীয় ইউপি সদস্য তারেক হাসান বাচ্চু জানান, প্রবাসী কাজলের বাড়ি ময়মনসিংহের পাগলা থানার লংগাইর ইউনিয়নের গোলাবাড়ী গ্রামে। কাজল জৈনাবাজারের আবদার গ্রামে জমি কিনে দোতলা বাড়ি নির্মাণ করেন। ওই বাড়ির দোতলায় কাজলের স্ত্রী তার সন্তানদের নিয়ে বসবাস করে আসছিলেন। ঐ গ্রামের এক প্রহরী জানান, হত্যাকাণ্ডের পর নিহত ফাতেমা ও তার এক কন্যার লাশ ছিলো অর্ধ উলঙ্গ। প্রবাসী কাজলের ভাতিজা নাঈম ইসলাম সাংবাদিকদের জানান, তার চাচা কাজল ১৬ বছর মালয়েশিয়ায় প্রবাস জীবন শেষে ইন্দোনেশিয়ার নাগরিক স্মৃতি ফাতেমাকে বিয়ে করে দেশে ফেরেন। দেশে তিনি কাপড়ের ব্যবসা শুরু করেন। তবে ব্যবসায় সুবিধা না করতে পেরে প্রায় ছয় বছর আগে তিনি আবারও মালয়েশিয়ায় চলে যান। সেই থেকে আবদার গ্রামের দোতলা বাড়িটি আগলে ছিলেন ফাতেমা। ভিনদেশে নৃশংসভাবে ধর্ষণ ও হত্যার শিকার হলেন ইন্দোনেশিয়ান ঐ নারী স্মৃতি ফাতেমা।
এদিকে,গাজীপুর-৩ আসনের সংসদ সদস্যইকবাল হোসেন সবুজ ঘটনাস্থল পরিদর্শন শেষে নৃশংস এই হত্যাকান্ডের রহস্য উদঘাটন ও দায়ীদের খুঁজে বের করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবী জানান। তবে তিনি এই হত্যাকান্ডকে ষড়যন্ত্রমূলক বলে মন্তব্য করেন। শ্রীপুর থানার অফিসার ইনচার্জ লিয়াকত আলী জানান, পুলিশের বিভিন্ন বিভাগের সদস্যরা বিষয়টি তদন্ত করছে। তিনি আশা প্রকাশ করে বলেন, শীঘ্রই হত্যাকাণ্ডের মোটিভ বের করতে পারবে পুলিশ।
https://www.youtube.com/watch?v=uXgcBLkLmVo
প্রবাস টাইমে লিখুন আপনিও। প্রবাসে বাংলাদেশি কমিউনিটির নানা আয়োজন, ঘটনা-দুর্ঘটনা, প্রবাসীদের সুযোগ-সুবিধা, সমস্যা-সম্ভাবনা, সাফল্য, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের খবর, ছবি ও ভিডিও আমাদের পাঠাতে পারেন [email protected] মেইলে।
Discussion about this post