মহামারী করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবে ইসলামের ১৪০০ বছরের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো রমজানে কাবা শরীফ ও মসজিদে নববীতে জনসাধারণের প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে সৌদি আরব। এবছর মক্কার মসজিদ আল-হারাম ও মদিনার মসজিদে নববীতে সংক্ষিপ্ত পরিসরে তারাবি নামাজ আদায়ের অনুমতি দিয়েছেন সৌদি বাদশাহ সালমান বিন আবদুল আজিজ। মসজিদ আল-হারামের খতিব ও হারামাইন শরিফাইন প্রেসিডেন্সির প্রধান শায়েখ আবদুর রহমান আস সুদাইস বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
সউদী আরবে রমজানের চাঁদ দেখা যাওয়ার পর পূর্ব ঘোষিত সিদ্ধান্ত অনুযায়ী মসজিদুল হারাম ও মসজিদে নববীতে স্বল্প পরিসরে অর্থাৎ ১০ রাকাত তারাবি নামাজ অনুষ্ঠিত হয়েছে বৃহস্পতিবার দিবাগত রাতে (সন্ধ্যায়)।হারাম শরীফের ইমামদের পরিচালিত ফেসবুক পেজে এখবর জানানো হয়। -আল আরাবিয়া
কর্তৃপক্ষের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, ১০ রাকাত তারাবি আদায় করা হবে। তবে মুসল্লিদের মসজিদে প্রবেশের ক্ষেত্রে নিষেধাজ্ঞা বহাল থাকবে। সেক্ষেত্রে ইমাম ও মুয়াজ্জিনসহ মসজিদে কর্মরতদের নিয়ে তারাবির জামাত করা হবে। এই দুই পবিত্র মসজিদে ইতিকাফও নিষিদ্ধ করা হয়েছে। এর আগে মুসল্লিদের তারাবি, ইফতার ও ঈদের নামাজও ঘরে আদায়ের পরামর্শ দিয়েছে দেশটির কর্তৃপক্ষ।
দেশটির ধর্মবিষয়ক মন্ত্রী আব্দুল লতিফ আল-শেখ জানিয়েছেন, করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব অব্যাহত থাকলে রমজানে মসজিদে তারাবি নামাজের জামাত হবে না। তারাবি ও ঈদের নামাজ বাড়িতে পড়ার আহ্বান জানানোর পাশাপাশি কারও মৃত্যু হলে জানাজার নামাজেও বেশি মানুষের সমাগম না করার আহ্বান জানিয়েছে সৌদি ধর্ম মন্ত্রণালয়।
মন্ত্রী আব্দুল লতিফ আল-শেখ বলেছেন, জামাত নিষিদ্ধের সঙ্গে সঙ্গতি রেখে এই সতর্কতা নেওয়া হয়েছে। সে কারণে জানাজা নামাজ কবরস্থানের পাশে অনুষ্ঠিত হবে। মৃতের পরিবারের ছয় জনের বেশি এতে অংশ নিতে পারবেন না।
এদিকে, এই দুই পবিত্র মসজিদে ইফতারের সম্মিলিত বিশাল আয়োজনও বাতিল করা হয়েছে। তবে রোজাদারদের জন্য দুই মসজিদে ইফতার আয়োজনের পরিবর্তে মক্কা ও মদিনা শহরের চারদিকে ইফতারের বক্স সরবরাহ ও বিতরণ করা হবে।
করোনা মোকাবিলায় দেশটিতে চলছে অনির্দিষ্টকালের কারফিউ। খুব প্রয়োজন ছাড়া ঘর থেকে বের হওয়া থেকে বিরত থাকতে বলা হয়েছে জনগণকে। তবে সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত প্রয়োজনীয় খাদ্যদ্রব্য কিনতে বাইরে বের হতে পারবেন তারা।
পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত সৌদি আরবে তারাবি, ইফতার ও ইতেকাফসহ রমজানের বড় জমায়েত স্থগিত রাখার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। এদিকে, রমজান উপলক্ষে মিশর, আরব আমিরাত ও আলজেরিয়ায় তারাবির নামাজে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করা হয়েছে।
এর আগে, সোমবার রাতে ড. আবদুর রহমান আস সুদাইস টুইটার ও ফেসবুকে জানিয়েছিলেন, মক্কার মসজিদ আল-হারাম ও মদিনার মসজিদে নববীতে সর্বসাধারণের জন্য তারাবিসহ পাঁচ ওয়াক্ত নামাজে উপস্থিতি স্থগিত থাকবে। সৌদি স্বাস্থ্যবিষয়ক যৌথ কমিটির পরামর্শে জনস্বার্থ বিবেচনায় এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। এসময় ড. আবদুর রহমান আস সুদাইস জানান, কাবা শরিফ ও মদিনার মসজিদে নববীতে স্টাফদের নিয়ে তারাবি অনুষ্ঠিত হবে। এতে সাধারণ জনগণ উপস্থিত হতে পারবেন না।
তিনি আরো জানান, তারাবি নামাজের রাকাত সংখ্যা কমিয়ে ১০ রাকাত করা হয়েছে। ১০ রাকাত তারাবি এবং বিতর পড়া হবে। দুই জন সম্মানিত ইমাম তারাবি ও বিতর নামাজে ইমামতি করবেন। প্রথম ইমাম ৩ সালামে ৬ রাকাত নামাজ পড়াবেন। দ্বিতীয় ইমাম ২ সালামে ৪ রাকাত নামাজ, বিতরসহ সাফা তথা কুনুত (দোয়া) পড়াবেন। কুনুত তথা দোয়া সংক্ষিপ্ত আকারে অনুষ্ঠিত হওয়ার নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।
প্রবাস টাইমে লিখুন আপনিও। প্রবাসে বাংলাদেশি কমিউনিটির নানা আয়োজন, ঘটনা-দুর্ঘটনা, প্রবাসীদের সুযোগ-সুবিধা, সমস্যা-সম্ভাবনা, সাফল্য, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের খবর, ছবি ও ভিডিও আমাদের পাঠাতে পারেন [email protected] মেইলে।
Discussion about this post