ফেসবুক লাইভে সাংবাদিক ও আওয়ামী লীগন্থী শিক্ষকদের নিয়ে হতাশার কথা জানিয়েছেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের এক ছাত্রলীগ নেত্রী। শনিবার রাত সাড়ে ১১টার দিকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে লাইভে যান মন্নুজান হল শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ফারজানা শশী। এ সময় তিনি বলেন, ‘আমাদের ভিসি ‘ওয়ান-এলেভেনের’ পরিক্ষিত নেতা। এরকম ভিসি থাকার পরেও কেন আপনারা হলের নেত্রীদেরকে কোনঠাঁসা করতে চাচ্ছেন। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগের কমিটি নেই তাই? এই সরকারের সময়ে কি কোনো নিয়োগই নেই বিশ্ববিদ্যালয়ে। বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র উপদেষ্টা, প্রক্টরিয়াল বডি, প্রক্টর, ভিসি-প্রো-ভিসি আপনারা তো সবাই আছেন। আপনারা এসব নিয়ে কথা বলছেন না কেন? আপনারা যদি আমাদের পাশে না থাকেন তাহলে আপনাদেরকে আওয়ামী পরিষদের শিক্ষক হিসেবে তো নিয়োগ দেওয়াটাই শেখ হাসিনার ভুল সিদ্ধান্ত।
সাংবাদিকদের উদ্দেশ্যে ফারজানা শশী বলেন, ‘বিগত কয়েকদিন ধরে দেখছি, সোশ্যাল মিডিয়া, টিভি চ্যানেল ও অনলাইন পোর্টালসহ সব জায়গায় বিশ্ববিদ্যালয়ের হলের ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের নিয়ে নিউজ দেখা যাচ্ছে। নিউজে এতো লাল-নীল-হলুদ রংঢং দিয়ে সাংবাদিকতা করা উচিত নয়। আপনারা ছাত্রলীগ নেত্রীদের হলে সাম্রাজ্য দ্বারা কী বুঝাচ্ছেন? সাংবাদিকতা করবেন স্মার্ট সাংবাদিকতা করেন। ছাত্রলীগের ট্যাগ লাগাতে পারলেই আপনাদের নিউজ হিট।’
তিনি আরও বলেন, ‘সাংবাদিকরা যেভাবে আমাদের পিছনে লেগে পড়েছে, এখন হাটতেও ভয় লাগে। একটা যে লিপস্টিক দিব, সেটা দিতেও ভয় হয়। লিপস্টিক দিলেও বলবেন, এই নেত্রীর টাকার উৎস কোথায়। তার মানে কি আমার মা-বাবা নাই। একটা লিপস্টিক কিনে দেওয়ার মতো ক্ষমতা আমার পিতা-মাতার নাই। লিপস্টিক বেশি দিলে আবার ব্র্যান্ড খুঁজবেন। সাংবাদিকরা কখন কী নিউজ করে দেয়, এ ভয়ে মানুষের সঙ্গে একটু জোরে কথা পর্যন্ত বলি না। তাহলে ছাত্রলীগ কি ক্ষতি করলো?’
যে দল ক্ষমতায় থাকে তারা একটু সুবিধা পায় উল্লেখ করে ফারজানা বলেন, ‘আপনারা যাকে নিয়ে কথা বলছেন, সে ওই হলের বর্তমান প্রেসিডেন্ট। ছাত্রদলের এমন অনেক শিক্ষার্থী ছিল যাদের ছাত্রত্ব ছিল না, তাও বছরের পর বছর হলে থেকেছে এবং অরাজকতা করেছে। জাসদ, বাসদ, ছাত্র মৈত্রী, ছাত্র ফেডারেশন, ছাত্রশিবির বলেন, যারা নেতৃত্বে থাকে তারা একটু সুযোগ-সুবিধা পায়। আর যেখানে আমাদের সরকার এখনো ক্ষমতায় আছেন, এটা স্বাভাবিক।’
লাইভটি দ্রুত ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ে। নানা আলোচনা-সমালোচনার পরে ভিডিওটি সরিয়ে নেন ছাত্রলীগ নেত্রী শশী। এ বিষয়ে জানতে ফারজানা শশীর মোবাইল ফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করা হলেও তার বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
এর আগে গত বৃহস্পতিবার রাতে রহমতুন্নেছা হল ছাত্রলীগের সভাপতি তামান্না আক্তার তন্বীর ছাত্রত্ব শেষ হলেও অবৈধভাবে হলে অবস্থান করায় তাকে কক্ষ ত্যাগ করার নির্দেশ দেয় হল প্রশাসন। কিন্তু নির্দেশনা অমান্য করে পরদিন বিকেলে উল্টো হল গেটে তালা দেন তামান্না ও অন্যান্য হল ছাত্রলীগের নেত্রীরা। এ ছাড়া গত ১১ সেপ্টেম্বর বিশ্ববিদ্যালয়ের বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হলে ঐশী নামে এক ছাত্রলীগ নেত্রীর রুম সিলগালা করেছে হল প্রশাসন। এসব বিষয় নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মরত সাংবাদিকরা সংবাদ প্রকাশ করায় ফারজানা শশী সাংবাদিকদের নিয়ে লাইভে এসে এসব কথা বলেন।
প্রবাস টাইমে লিখুন আপনিও। প্রবাসে বাংলাদেশি কমিউনিটির নানা আয়োজন, ঘটনা-দুর্ঘটনা, প্রবাসীদের সুযোগ-সুবিধা, সমস্যা-সম্ভাবনা, সাফল্য, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের খবর, ছবি ও ভিডিও আমাদের পাঠাতে পারেন [email protected] মেইলে।
Discussion about this post