দীর্ঘ ২২ বছর পর সৌদি আরব থেকে ফিরেছেন প্রবাসী মিজানুর রহমান। বৃদ্ধ মা ফিরোজা বেগম কক্সবাজারের বাড়িতে বসে ছেলেকে দেখার জন্য অস্থির হয়ে ছিলেন। ৪২ বছর বয়সী ছেলের সঙ্গে মায়ের দেখাও হয়েছে। তবে ছেলেকে দেখার পর মা আরও অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। এই মায়ের মুখে হাসি নেই। কারণ, ছেলে ফিরেছেন ঠিকই তবে মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে একদম শূন্য হাতে।
মিজানুর রহমানের ছোট ভাই ব্যবসায়ী রেজাউল জানান, তাঁরা ছয় ভাই, এক বোন। বোনের বিয়ে হয়েছে। মিজানুর ছাড়া অন্যরা বিয়ে করে যাঁর যাঁর সংসার নিয়ে থাকছেন। বাবা আবদুল জব্বার মারা গেছেন। মা ফিরোজা বেগম থাকেন তাঁর সঙ্গে। প্রবাসী মিজানুরকে চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তিনি ভাইয়ের সঙ্গে হাসপাতালেই আছেন।
বাংলাদেশ বিমানের একটি ফ্লাইটে শুক্রবার দুপুরে ঢাকায় পৌঁছান মিজানুর। বিমানবন্দরে নামার পর তিনি এলোমেলোভাবে ঘুরছিলেন। স্বজনদের ঠিকানা বলতে পারছিলেন না। বিমানবন্দর আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়ন বেসরকারি সংস্থা ব্র্যাকের অভিবাসন কর্মসূচির সঙ্গে কথা বলে মিজানুরকে ব্র্যাকের মাইগ্রেশন সেন্টারে পাঠায়। তারপর ফেসবুকসহ বিভিন্ন মাধ্যমে যোগাযোগের পর তার পরিবারকে খুঁজে পাওয়া যায়। ভাই রেজাউল করিম ও তাঁর আত্মীয় আমির হামজা রোববার ওই মাইগ্রেশন সেন্টার থেকে মিজানুরকে নিয়ে আসেন।
রেজাউল জানালেন, মিজানুর রহমান ২০০১ সালে সৌদি আরবে গাড়িচালক হিসেবে কাজের জন্য গিয়েছিলেন। তখন যেতে খরচ হয়েছিল সাড়ে তিন লাখ টাকা। বিদেশে যাওয়ার পর দুই বছরের মতো মিজানুর রহমান পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ রেখেছিলেন। তার পর থেকে যোগাযোগ বন্ধ ছিল।
রেজাউল করিম বললেন, ‘ভাই পাসপোর্ট ছাড়া কিছুই সঙ্গে আনতে পারেননি। পায়ের যে ক্ষত, তা থেকে ক্যানসারের আশঙ্কা আছে কি না, তা নিয়েও সবাই চিন্তিত। ভাই মায়ের কাছে ফিরেছেন—একবার মনে হয় বুঝতে পারছেন, আবার মনে হয় বুঝতে পারছেন না। চিকিৎসা করে সুস্থ হলে হয়তো বুঝতে পারবেন মায়ের কাছে ফিরেছেন।’
প্রবাস টাইমে লিখুন আপনিও। প্রবাসে বাংলাদেশি কমিউনিটির নানা আয়োজন, ঘটনা-দুর্ঘটনা, প্রবাসীদের সুযোগ-সুবিধা, সমস্যা-সম্ভাবনা, সাফল্য, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের খবর, ছবি ও ভিডিও আমাদের পাঠাতে পারেন [email protected] মেইলে।
Discussion about this post