গত মাসের ২ জুলাই ছেলের মৃত্যুর খবর পাওয়ার পর থেকে কেঁদেই চলেছেন মা ময়না খাতুন। দেড় মাস ধরে কেঁদেই যাচ্ছেন ছেলের মরদেহটা একবারের জন্য নিজ চোখে দেখতে। কাঁদতে কাঁদতে চোখের পানি শুকিয়ে গেছে তার। তবে কবে সৌদি থেকে ছেলের মরদেহ দেশে আসবে তা জানা নেই। নিহত রুবেল হোসেন শার্শা উপজেলার কায়বা ইউনিয়নের হতদরিদ্র ফারুক হোসেনের ছেলে।
পরিবারের সচ্ছলতা ফিরবে এমন আশায় যশোরের শার্শার রুবেল হোসেন সৌদিতে যান। গত ২ জুলাই দুপুরে তিনি কর্মস্থলে মারা যান। ২৭ জুলাই মরদেহ দেশে ফেরার কথা থাকলেও রুবেলের কফিনে কিশোরগঞ্জের মোজাম্মেলের মরদেহ চলে আসে। এতেই বাঁধে জটিলতা। গ্রামের বাড়িতে মরদেহ দেখার পরে তৈরি হয় নানা ধূম্রজাল।
রুবেল হোসেনের দিনমজুর মা ময়না খাতুন জানান, তার বড় ছেলে সৌদিতে যে বসের সাথে কাজ করতেন। কাজ কম পারায় সেই বস লাথি মারলে দুই তলা থেকে মুখ থুবড়ে মাটিতে পড়ে যান। এরপর লাঞ্চ ফেটে মারা যান রুবেল। এক বছর দুই মাস আগে সৌদিতে গিয়েছিলেন তিনি। এই এক বছরে মাত্র এক লাখ টাকা পাঠিয়েছেন। দেশে তার পরিবার এখনো সাড়ে চার লাখ টাকা ঋণগ্রস্ত। সেই ঋণ শোধ হওয়ার আগেই রুবেলকে লাশ হতে হলো। দায়-দেনা দিনমজুরি করে কিভাবে দেনা পরিশোধ করবেন- বা আদৌ ছেলের মরদেহ পাবেন কিনা জানা নেই ময়না খাতুনের।
নিহত রুবেলের ভগ্নিপতি শহীদুল ইসলাম জানান, গত সোমবার সকালে সৌদিতে রুবেলের বসের সাথে মোবাইলে কথা হয়েছে। তিনি জানিয়েছেন কাগজপত্র রেডি হয়ে গেছে। এ মাসের শেষের দিকে হয়তো বা মরদেহ বাংলাদেশে আসার সম্ভাবনা আছে। এমন একাধিকবার সময় নিয়েছে তারা। কিন্তু কাজ হয়না।
স্থানীয় প্রশাসনের সাথে যোগাযোগ করা হলে তারা বিষয়টি নিয়ে প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয়ে যোগাযোগ করতে পরামর্শ দেন। কিন্তু অফিস ঢাকাতে হওয়ায় দরিদ্র এই পরিবারের পক্ষে রাজধানী গিয়ে তদবির করাও সম্ভব নয়।
প্রবাস টাইমে লিখুন আপনিও। প্রবাসে বাংলাদেশি কমিউনিটির নানা আয়োজন, ঘটনা-দুর্ঘটনা, প্রবাসীদের সুযোগ-সুবিধা, সমস্যা-সম্ভাবনা, সাফল্য, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের খবর, ছবি ও ভিডিও আমাদের পাঠাতে পারেন [email protected] মেইলে।
Discussion about this post