মধ্যপ্রাচ্যের অন্যতম ধনী দেশ কুয়েত তাপমাত্রা বৃদ্ধির সাথে সাথে বসবাসের অযোগ্য হয়ে পড়ছে। দেশটিতে বিশ্বের ষষ্ঠ বৃহৎ খণিজ তেলের ভাণ্ডার রয়েছে। ২০১৬ সালের ২১ জুলাই রাজধানী কুয়েত সিটিতে বিশ্বের ইতিহাসে তৃতীয়-সর্বোচ্চ তাপমাত্রা নথিবদ্ধ করা হয়েছিল। ওই দিন শহরে তাপমাত্রা ছিল ৫৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস। ২০২১ সালে দেশজুড়ে ১৯ দিন তপমাত্রা ছিল ৫০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের বেশি। তাপমাত্রার বৃদ্ধি অব্যাহত থাকায়, এই বছর সেই রেকর্ড ভেঙে যাবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম ডেইলি স্টার ও এক্সপ্রেস এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, প্রতি বছরই মধ্যপ্রাচ্যের এই দেশের তাপমাত্রা বৃদ্ধি পাচ্ছে। সঙ্গে পাল্লা দিয়ে কমছে বার্ষিক বৃষ্টিপাত। ক্রমে শুষ্ক হয়ে উঠছে কুয়েত। বাড়ছে ধূলিঝড়ের তীব্রতা। এমন অবস্থার মধ্যে সেখানে মানুষের বাস করা প্রায় অসম্ভব হয়ে উঠছে। খবরে বলা হয়েছে, তাপমাত্রা অস্বাভাবিক পর্যায়ে পৌঁছে যাওয়ার কারণে ক্রমে শঙ্কা বাড়ছে প্রাণহানিরও। ইতোমধ্যেই কুয়েতে ঝাঁকে ঝাঁকে পাখির মৃত্যু এবং পারস্য উপসাগরে সি-হর্সদের মৃত্যুর খবর উঠে এসেছে।
তাপজনিত মৃত্যু ঠেকাতে ইতোমধ্যেই কুয়েত সিটিতে বেশকিছু পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। স্থানীয় বাসিন্দা এবং পর্যটকদের সূর্যের প্রখর রশ্মি থেকে রক্ষা করতে একটি ইন্ডোর শপিং স্ট্রিট খোলা হয়েছে। পুরো রাস্তাটিই ছাদ দিয়ে আবৃত। ভিতরে পাম গাছ এবং ইউরোপীয় শৈলির বুটিক রয়েছে। এছাড়া চলতি বছর শীতল সময়ে যাতে মানুষ তাদের প্রিয়জনদের বিদায় জানাতে পারেন সে লক্ষ্যে কুয়েত সরকার রাতেও মৃতদের দাফনের অনুমতি দিয়েছে। এই প্রথম এই ধরনের কোনও আদেশ জারি করলো দেশটি।
জলবায়ু বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন- এই হারে তাপমাত্রা বাড়তে থাকলে চলতি শতাব্দীর শেষ নাগাদ কুয়েতের তাপমাত্রা আরও অন্তত ৫.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস বেড়ে যাবে। তখন আর এদেশে বসবাসের কোনও উপায় থাকবে না। গবেষকরা আরও জানিয়েছেন, কুয়েতে আগামী কয়েক বছরে সম্ভবত ঘনঘন বন্যা, খরা, উপকূলীয় অঞ্চলে সামুদ্রিক জলোচ্ছ্বাস, ঘন ঘন বালির ঝড়, জীববৈচিত্র্যের ব্যাপক ক্ষতি, বাস্তুতন্ত্রের ধ্বংস, কৃষি উৎপাদনের ব্যাপক হ্রাস এবং বিভিন্ন রোগের প্রাদুর্ভাব দেখা দিতে পারে।
https://www.youtube.com/watch?v=oLcQusKNYGg&t=30s
প্রবাস টাইমে লিখুন আপনিও। প্রবাসে বাংলাদেশি কমিউনিটির নানা আয়োজন, ঘটনা-দুর্ঘটনা, প্রবাসীদের সুযোগ-সুবিধা, সমস্যা-সম্ভাবনা, সাফল্য, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের খবর, ছবি ও ভিডিও আমাদের পাঠাতে পারেন [email protected] মেইলে।
Discussion about this post