ডলার সংকটের কারণে আমদানিতে বিভিন্ন শর্ত দেওয়ার ফলে বৈদেশিক বাণিজ্যের ঘাটতি কিছুটা কমেছে। তবে বহির্বিশ্বের সঙ্গে দেশের সামগ্রিক লেনদেন বড় ঘাটতিতে পড়েছে। আর্থিক হিসাবে বড় ঘাটতির কারণেই এ পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে। অথচ আশানুরূপ হারে রেমিট্যান্স ও রপ্তানি আয় বাড়েনি। পাশাপাশি বিদেশি বিনিয়োগ কমে গেছে, অন্যদিকে বিনিয়োগ প্রত্যাহার বেড়েছে। এসব কারণে বিদেশি বাণিজ্যিক ঋণে ঘাটতি তৈরি হয়েছে।
৩ আগস্ট বাংলাদেশ ব্যাংক বৈদেশিক লেনদেনের চলতি হিসাবের ভারসাম্য হালনাগাদ প্রতিবেদনের তথ্য অনুযায়ী, গেল অর্থবছরে সামগ্রিক লেনদেনে ৮২২ কোটি ডলারের ঘাটতি তৈরি হয়েছে। তার আগে এ ঘাটতি ছিল ৬৬৫ কোটি ডলার।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সদ্য সমাপ্ত ২০২২-২৩ অর্থবছরে (জুলাই-জুন) ৬ হাজার ৯৪৯ কোটি মার্কিন ডলারের পণ্য আমদানি করেছে। এসময় রপ্তানি হয়েছে ৫ হাজার ২৩৪ কোটি ডলারের পণ্য। এতে করে এক হাজার ৭১৫ কোটি ৫০ লাখ ডলারের বাণিজ্য ঘাটতিতে পড়েছে বাংলাদেশ। দেশীয় মুদ্রায় যার পরিমাণ এক লাখ ৮৭ হাজার ৮৪৭ কোটি টাকা। গত অর্থবছরে আমদানি ১৫ দশমিক ৭৬ শতাংশ কমেছে, আর রপ্তানি বেড়েছে ৬ দশমিক ২৮ শতাংশ। খাত সংশ্লিষ্টরা বলছেন, রপ্তানির তুলনায় আমদানি বেশি, বিশ্ববাজারে জ্বালানিসহ সব ধরনের পণ্যের মূল্য ঊর্ধ্বমুখী ও আশানুরূপ রেমিট্যান্স রপ্তানি না আশা এবং বিদেশি বিনিয়োগ কমে যাওয়ায় বহির্বিশ্বের সঙ্গে বাণিজ্য ঘাটতিতে পড়েছে বাংলাদেশ।
বাংলাদেশ ব্যাংক বিভিন্ন ব্যাংকের কাছে গেল ২০২২-২৩ অর্থবছরের সাড়ে ১৩ বিলিয়ন ডলার বিক্রি করেছে। তার আগের অর্থবছরে বিক্রি করে আরও ৭ দশমিক ৬২ বিলিয়ন ডলার। এভাবে ডলার বিক্রির কারণে ধারাবাহিকভাবে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ কমছে। সবশেষ ২৫ জুন পর্যন্ত রিজার্ভ দাঁড়িয়েছে ৩০ দশমিক ৮৪ বিলিয়ন ডলারে।
চলতি হিসাবের ভারসাম্য
চলতি হিসাবে উদ্বৃত্ত থাকার অর্থ হলো নিয়মিত লেনদেনে দেশকে কোনো ঋণ করতে হচ্ছে না। আর ঘাটতি থাকলে সরকারকে ঋণ নিয়ে তা পূরণ করতে হয়। সে হিসেবে উন্নয়নশীল দেশের চলতি হিসাবে উদ্বৃত্ত থাকা ভালো। কিন্তু দেশে কারেন্ট অ্যাকাউন্ট ব্যালেন্স এখন ঋণাত্মক হয়েছে। সবশেষ তথ্য বলছে, গেল অর্থবছরে চলতি হিসাবে ঘাটতির পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৩৩৩ কোটি ৪০ ডলার। আগের অর্থবছরে একই সময়ে এ ঘাটতি ছিল এক হাজার ৮৬৩ কোটি ডলার।
ওভারঅল ব্যালান্স
সামগ্রিক লেনেদেনেও (ওভারঅল ব্যালান্স) বড় ঘাটতিতে পড়েছে বাংলাদেশ। গেল অর্থবছরের সামগ্রিক লেনেদেনের (ঋণাত্মক) পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৮২২ কোটি ২০ লাখ ডলার। এ সূচকটি আগের বছর একই সময় ঘাটতি ছিল ৬৬৫ কোটি ৬০ লাখ ডলার। প্রতিবেদনের তথ্য অনুযায়ী, অর্থবছরের দুই হাজার ১৬১ কোটি ডলার রেমিট্যান্স পাঠিয়েছেন প্রবাসী বাংলাদেশিরা। আগের বছর পাঠিয়েছিলেন দুই হাজার ১০৩ কোটি ডলার। প্রবৃদ্ধি ২ দশমিক ৭৫ শতাংশ।
প্রবাস টাইমে লিখুন আপনিও। প্রবাসে বাংলাদেশি কমিউনিটির নানা আয়োজন, ঘটনা-দুর্ঘটনা, প্রবাসীদের সুযোগ-সুবিধা, সমস্যা-সম্ভাবনা, সাফল্য, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের খবর, ছবি ও ভিডিও আমাদের পাঠাতে পারেন [email protected] মেইলে।
Discussion about this post