ভারতে কাজ পাইয়ে দেয়ার আশ্বাসে বাংলাদেশ-ভারত সীমান্ত দিয়ে নারী ও শিশু পাচারের প্রবণতা বেড়েছে। বিএসএফ ও বিজিবির কড়া নজরদারি সত্ত্বেও, পাচারকারীরা সু-কৌশলে তাদের মানবপাচার কার্যক্রম অব্যাহত রেখেছে। সম্প্রতি ভারতের পশ্চিমবঙ্গের শিলিগুড়ি থেকে একটি পাচারকারী গ্রুপের কয়েকজন সদস্যকে আটক করা হয়েছে। সেখান থেকে পাঁচ বাংলাদেশি নারী উদ্ধার হয়েছেন।
বাংলাদেশ এবং ভারতের মধ্যে প্রায় সাড়ে ৪ হাজার কিলোমিটার সীমান্ত রয়েছে। এর মধ্যে সুরক্ষিত সীমান্ত প্রায় ৩ হাজার কিলোমিটার, আর বাকি অংশ নদী এবং অরক্ষিত সীমান্ত। মূলত এই নদী এবং অরক্ষিত সীমান্তের নিরাপত্তার ফাঁকগলে প্রতিবেশী দুই দেশের মধ্যে প্রতিদিন ঘটছে নারী ও শিশু পাচারের মতো ঘটনা।
বাংলাদেশের সীমান্তবর্তী জেলাগুলো থেকে ভারতের মুম্বাই, দিল্লি এবং চেন্নাইয়ে কাজ পাইয়ে দেয়ার নামে নিয়ে আসা হচ্ছে গ্রামের সাধারণ নারীদের। সীমান্তরক্ষীদের চোখ ফাঁকি দিয়ে ভারতীয় সীমানায় পা রাখার পরই দালালদের খপ্পরে পড়েন এসব নারীরা। মুহূর্তেই হাত বদল হয়ে ভারতের বিভিন্ন রাজ্যের ‘রেড জোন’ বা নিষিদ্ধপল্লিতে তারা বিক্রি হয়ে যান।
সম্প্রতি শিলিগুড়ির নিউ-জলপাইগুড়ি স্টেশন এলাকা থেকে তিন ভারতীয় পাচারকারীকে গ্রেফতারের পর গোয়েন্দাদের কাছে যে তথ্য উঠে এসেছে, তা রীতিমতো বিস্ময়কর।
জিজ্ঞাসাবাদে পুলিশ জানতে পারে, উদ্ধার হওয়া বাংলাদেশিরা দেশটির সীমান্তবর্তী বিভিন্ন এলাকার বাসিন্দা এবং দরিদ্র শ্রেণির। ভারতের মুম্বাই, দিল্লি ও চেন্নাইয়ে ফ্ল্যাট বাড়িতে কাজ পাইয়ে দেয়ার কথা বলে তাদের নিয়ে আসা হয়। আটক পাচারকারীরাও স্বীকার করে, কাজের টোপ দিয়ে নিয়ে আসা হলেও ওই নারীদের নিষিদ্ধপল্লিতে বিক্রি করে দেয়ার পরিকল্পনা ছিল তাদের।
সংশ্লিষ্টরা মনে করেন, সমাজের পিছিয়ে পড়া নারী ও শিশুদের টাকার লোভ দেখিয়ে সীমান্ত দিয়ে পাচার করে নিয়ে আসা হয়। পরে বিক্রি করে দেয়া হয় ভারতীয় বিভিন্ন দালালদের কাছে। গোটা চক্রে যেমন ভারতের দালাল সিন্ডিকেট রয়েছে, তেমনি রয়েছে বাংলাদেশি দালাল চক্র।
২০১৫ থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত নারী ও শিশু পাচারে ভারতের সব রাজ্যের চেয়ে এগিয়ে ছিল পশ্চিমবঙ্গ। সংশ্লিষ্ট সূত্র বলছে, মাঝে কিছুদিন কমে গেলেও সীমান্তের বেশ কিছু রুট দিয়ে নারী ও শিশু পাচার ফের বেড়েছে।
প্রবাস টাইমে লিখুন আপনিও। প্রবাসে বাংলাদেশি কমিউনিটির নানা আয়োজন, ঘটনা-দুর্ঘটনা, প্রবাসীদের সুযোগ-সুবিধা, সমস্যা-সম্ভাবনা, সাফল্য, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের খবর, ছবি ও ভিডিও আমাদের পাঠাতে পারেন [email protected] মেইলে।
Discussion about this post