কথিত স্বামীর বিরুদ্ধে জোর পূর্বক বিয়ে ও আটকে রেখে নির্যাতনের অভিযোগ এনে ধর্ষণ মামলা করেছেন এক প্রবাসী নারী। গেলো শুক্রবার রাতে যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী মোমেনা আক্তার বাদী হয়ে সোনাগাজী মডেল থানায় মামলাটি দায়ের করেন।
অভিযুক্ত মহিন উদ্দিন ফেনীর সোনাগাজী সদর ইউনিয়ন যুবলীগের সহসভাপতি এবং ওই ইউনিয়নের চরখোয়াজ গ্রামের বাসিন্দা। গত কয়েক বছর ধরে সে সোনাগাজী পৌর মেয়র ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক রফিকুল ইসলাম খোকনের ব্যাক্তিগত গাড়ি চালক হিসেবে কর্মরত রয়েছেন। মামলার পর মহিন উদ্দিনকে শুক্রবার রাত আটটার দিকে পুলিশে সোপর্দ করেছেন মেয়র খোকন।
বিয়ের কাবিননামা ও নোটারি পাবলিক কার্যালয়ের এফিডেভিটের কাগজপত্র পর্যালোচনা করে দেখা যায়, তারা উভয়ে চলতি মাসের ৮ তারিখে বিয়ে করেছেন। যদিও ঘটনাটি সাজানো বলে দাবি ভুক্তভোগীর।
মোমেনা আক্তার সোনাগাজী পৌরসভার তুলাতুলি গ্রামের মৃত মহিন আহম্মেদের মেয়ে। ১২ বছর আগে কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার চরহাজারী গ্রামের ছায়েদুল হকের ছেলে আব্দুল আউয়ালের সঙ্গে তার বিয়ে হয়। আব্দুল আউয়াল যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিক। বিয়ের পর মোমেনা স্বামীর সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্র চলে যান এবং নাগরিকত্ব লাভ করেন। তাদের ছয় বছরের একটি কন্যা সন্তান রয়েছে। অভিযুক্ত মহিন উদ্দিনও বিবাহিত, তার দুটি সন্তান রয়েছে।
অভিযোগে মোমেনা আক্তার বলেন, চলতি মাসের ৭ তারিখে দেশে ফেরার পর সন্তানকে নিয়ে ফেনীতে বোনের বাড়িতে ওঠেন। পরদিন চিকিৎসকের কাছে যাওয়ার জন্য ট্রাংক রোডে পৌঁছলে মহিন উদ্দিন তাকে কথা আছে বলে পাশের গলিতে নিয়ে যায়। ওই সময় আরও কয়েকজন তার সঙ্গে যোগ দেয়। তারা ছুরি দেখিয়ে একটি বাসায় নিয়ে কয়েকটি স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর করতে বলেন। রাজি না হলে তারা সঙ্গে থাকা মেয়েকে হত্যার হুমকি দেন। পরে প্রাণভয়ে স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর করতে বাধ্য হয় মোমেনা। এরপর ছেড়ে দিলে বাসায় গিয়ে বোনকে পুরো ঘটনা জানান।
মোমেনার অভিযোগ, গত ১৪ তারিখ ওই নারী ও সঙ্গে থাকা মেয়েকে কোর্ট বিল্ডিংয়ের সামনের রাস্তা থেকে তুলে নিয়ে ফেনীর একটি বাসাতে ৩ দিন আটকে রাখে মহিন। এসময় ওই নারীকে একাধিকবার ধর্ষণ করে তার ছবি ভুক্তভোগীর ভাই ও যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থান করা স্বামীর কাছে পাঠায়। একপর্যায়ে তার পা ধরে কান্নাকাটি করলে ওই নারীকে ছেড়ে দেয়া হয়।
তবে অভিযুক্ত মহিন উদ্দিন তার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, মোমেনা আক্তারের সঙ্গে আমার দীর্ঘদিনের প্রেমের সম্পর্ক রয়েছে। চলতি মাসের ৮ তারিখে আমরা নোটারি পাবলিক কার্যালয়ে এফিডেভিট করার পর কাবিনে স্বাক্ষর করে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হই। প্রমাণ হিসেবে কাবিননামা, নোটারি পাবলিকের এফিডেভিটের ফটোকপি ও স্বামীকে তালাক দেওয়ার ফটোকপি গনমাধ্যম কর্মীদের কাছে দেয়া হয়েছে। তিনি আরও বলেন, পরে বিষয়টি জানাজানি হলে তার সাবেক স্বামী ও দুই ভাই তাকে জিম্মি করে আমার বিরুদ্ধে মামলা করতে বাধ্য করে।
এ বিষয়ে সোনাগাজী মডেল থানার ওসি খালেদ হোসেন দাহিয়ান বলেন, অভিযুক্ত মহিন উদ্দিনকে শনিবার দুপুরে আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে। মামলার বাদীর শারীরিক পরীক্ষা শেষে জবানবন্দি গ্রহণের জন্য তাকে ফেনীর জুডিশিয়াল আদালতে নেওয়া হয়েছে।
প্রবাস টাইমে লিখুন আপনিও। প্রবাসে বাংলাদেশি কমিউনিটির নানা আয়োজন, ঘটনা-দুর্ঘটনা, প্রবাসীদের সুযোগ-সুবিধা, সমস্যা-সম্ভাবনা, সাফল্য, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের খবর, ছবি ও ভিডিও আমাদের পাঠাতে পারেন [email protected] মেইলে।
Discussion about this post