জনশক্তি রপ্তানির সবচেয়ে বড় শ্রমবাজার সৌদি আরব থেকে প্রচুর রেমিট্যান্স আসছে। শত শত বৈধ রিক্রুটিং এজেন্সির মাধ্যমে দেশটিতে চাকরিতে যাচ্ছে নারী পুরুষ কর্মীরা। কিন্ত কতিপয় অসাধু রিক্রুটিং এজেন্সির প্রতারণার কারণে দেশটির রিয়াদে প্রবাসী বাংলাদেশিদের নিয়ে গুদাম ঘরে আটকে রাখা হচ্ছে। কাজ দেওয়া হচ্ছে না। কাজ নেই, আকামা নেই- খাবারও পাচ্ছে না নিয়মিত। প্রবাসী কর্মীদের এক বেহাল অবস্থা।
হোটেলে কাজ দেয়ার কথা থাকলেও তা মিলছে না। কাওকে কাওকে বাইরের কোম্পানীতে মাসে ১০ থেকে ৭ দিন আলগা কাজ দেয়া হলেও বেতন পাচ্ছে না এসব প্রবাসী কর্মী। বাধ্য হয়েই প্রবাসী সাকিল হোসেন বাধনের স্ত্রী সুমি গত ৫ জুলাই স্বামীর ন্যায্য অধিকারের দাবিতে কাকরাইলস্থ বিএমইটির মহাপরিচালকের কাছে লিখিত অভিযোগ পেশ করেছেন। কাজ এবং আকামা, বেতন-খাবার অথবা চার লাখ টাকার ক্ষতিপূরণ আদায় করে তাকে দেশে ফেরত আনার দাবী তার।
সৌদির রিয়াদের ৩১ নং বদিয়াস্থ গুদাম ঘরে অবরুদ্ধ প্রতারণার শিকার প্রবাসী বাংলাদেশিরা দীর্ঘ দিন যাবত মানবেতর জীবন যাপন করছে। কথা অনুযায়ী কাজ না দিয়ে অন্য কোম্পানীতে প্রবাসী কর্মীদের অঘোষিতভাবে বিক্রি করে দেয়ার অভিযোগও পাওয়া গেছে। অবরুদ্ধ কর্মীদের হোটেলে কাজ দেয়ার কথা বলে এখনো কাজ দেয়া হয়নি।
এসব প্রবাসী কর্মীরা অনাহার অনিদ্রায় দিন কাটাচ্ছেন। প্রতিদিন দু’বেলা চাল আর ২/৩ টা আলু দেয়া হচ্ছে মাত্র। আবার কেউ কেউ তা’ও পায় না। রিয়াদ থেকে অবরুদ্ধ একাধিক প্রবাসী কর্মী এ তথ্য জানিয়েছেন। চার লাখ টাকা ব্যয় করে দেশটিতে গিয়ে কাজ না পাওয়ায় চরম উৎকন্ঠায় দিনে কাটাচ্ছে এসব কর্মীদের স্বজনরা।
অবরুদ্ধ এক কর্মীর পিতা সেকান্দার গতকাল কান্নাজড়িত কন্ঠে বলেন, এতোগুলো টাকা ঋণ করে চার লাখ টাকা দিয়ে ছেলেকে বুক ভরা আশা নিয়ে আয়াত ওভারসীজের (আরএল-১৬৩৮) মাধ্যমে সউদী পাঠালাম কিন্ত তার কাজ নেই, খাওয়া নেই, আকামা নেই। সে এখন রিয়াদে মানবেতর জীবন যাপন করছে।
রিয়াদ থেকে বগুড়ার মাহফুজ, সাভারের সাকিল হোসেন বাধন, মানিকগঞ্জের ইকবাল, কুষ্টিয়ার নাদিম, সেলিম, চাঁদপুরের ইমান, মুন্সিগঞ্জের রাব্বি, নেত্রকোণার আল আমিন, সাভারের রনি, ভৈরয়ের সবুজ, মনির হোসেন রাসেল, কিশোরগঞ্জের কায়েম, টাংগাইলের রবিউল, কুষ্টিয়ার আল আমিনসহ বিপুল সংখ্যাক প্রবাসী কর্মী আয়াত ওভারসীজসহ অন্যান্য রিক্রুটিং এজেন্সির মাধ্যমে চার লাখ টাকা দিয়ে রিয়াদ গিয়ে কাজ ও আকামা না পেয়ে রাস্তায় রাস্তায় ঘুরছে। কেউ কেউ আত্মীয় স্বজন ও গ্রামের বাড়ী থেকে টাকা ধার নিয়ে দিন কাটাচ্ছে। প্রতারণার শিকার এসব প্রবাসী কর্মীদের আত্মীয় স্বজনরা অভিবাসন ব্যয়ের ঋণের অর্থ পরিশোধ করতে না পেরে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন।
প্রবাস টাইমে লিখুন আপনিও। প্রবাসে বাংলাদেশি কমিউনিটির নানা আয়োজন, ঘটনা-দুর্ঘটনা, প্রবাসীদের সুযোগ-সুবিধা, সমস্যা-সম্ভাবনা, সাফল্য, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের খবর, ছবি ও ভিডিও আমাদের পাঠাতে পারেন [email protected] মেইলে।
Discussion about this post