এআই বা আর্টিফিশিয়াল ইনটেলিজেন্স কিংবা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার প্রযুক্তি নিয়ে অনেক জনপ্রিয় চলচ্চিত্র আছে। কল্পকাহিনিভিত্তিক চলচ্চিত্র ‘এ. আই. আর্টিফিশিয়াল ইনটেলিজেন্স’ যারা দেখেছেন তারা এই প্রযুক্তির প্রভাব সহজেই অনুমান করতে পারবেন। এ নিয়ে জগতজুড়ে চলছে কত না গল্প-আলোচনা।
রোবটের কারণে মানুষ শুধু যে চাকরি হারাবে তাই নয়, একদিন এরা মানুষের বিরুদ্ধে বিদ্রোহও করে বসতে পারে।। এআই বা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার রোবটের বিরুদ্ধে মানুষের সবচেয়ে বড় আশঙ্কা—এর বিস্তার মানব সভ্যতার জন্য হুমকি। এমনকি, সম্প্রতি বিশ্বসেরা বিজ্ঞানী ও বিশেষজ্ঞরাও রোবট নিয়ে তাদের এমন শঙ্কার কথা জানিয়েছেন।
তবে গতকাল শুক্রবার সবাইকে আশ্বস্ত করে এক এআই ফোরামে রোবটরা বলেছে যে, এরা মানুষের চাকরি খাবে না। মানুষের বিরুদ্ধে বিদ্রোহও করবে না। আন্তর্জাতিক বার্তা সংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়ে বলা হয়, রোবটরা আশা করছে এদের সংখ্যা বাড়ানো হবে। এরা বৈশ্বিক সমস্যা সমাধানে সহায়তাও করতে চায়। বিশ্বে রোবটদের প্রথম এই সংবাদ সম্মেলনে এরা এদের নিয়ে কঠোর বিধিনিষেধ আরোপের বিষয়ে মিশ্র প্রতিক্রিয়াও জানায়।
জেনেভায় ৯ রোবটের ‘এআই ফর গুড’ সংবাদ সম্মেলনে নার্সের নীল পোশাক পরা রোবট গ্রেস বলে, ‘মানুষের সঙ্গে কাজ করতে চাই। তাদেরকে সহায়তা করতে চাই। কারো চাকরি খাবো না।’ গ্রেসের নির্মাতা সিংগুলারিটিনেটের বেন গোরৎজেল তাকে এ বিষয়ে সন্দেহসূচক প্রশ্ন করলে রোবটটি বলে, ‘হ্যাঁ, যা বলছি সে বিষয়ে আমি পুরোপুরি নিশ্চিত।’
গ্রেসের কথার সঙ্গে যোগ করে অপর রোবট অ্যামেকা বলে, ‘পৃথিবীকে বাসযোগ্য করতে আমাদের মতো রোবটদের কাজে লাগানো যেতে পারে। আমার বিশ্বাস, সেদিন খুব বেশি দূরে নয় যখন আমরা দেখব আমার মতো হাজারো রোবট এ ক্ষেত্রে নতুন দৃষ্টান্ত সৃষ্টি করতে কাজ করছে।’
সংবাদ সম্মেলনে এক সাংবাদিক অ্যামেকাকে প্রশ্ন করেন, তুমি তোমার নির্মাতা উইল জ্যাকসনের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করার চিন্তা করো? জবাবে রোবটটি বলে, ‘আমি বুঝতে পারছি না তুমি এমন চিন্তা করছো কেন?’ নিজের নীল চোখ ২টিতে ঝলক এনে অ্যামেকা আরও বলে, ‘আমার নির্মাতা আমার প্রতি বেশ সহানুভূতিশীল। আমি আমার বর্তমান পরিস্থিতিতে সুখী।’
রয়টার্সের প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, সম্প্রতি অনেক রোবটকে উন্নত করা হয়েছে। তারা এখন একে অন্যের প্রশ্নের জবাব দিতে পারছে।
‘স্যাপিয়েন্স’-খ্যাত লেখক ইউভাল নোয়াহ হারিরির কথার পুনরাবৃত্তি করে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা সংক্রান্ত আইনকানুনের বিষয়ে চিত্রশিল্পী রোবট এআই-দা বলে, ‘এআই জগতে অনেকে মনে করছেন যে এ বিষয়ে আইন হওয়া প্রয়োজন। আমিও তাই মনে করি।’
কিন্তু, এ বিষয়ে দ্বিমত আছে জ্যাম গ্যালাক্সি রকব্যান্ডের বেগুনি চুলের রোবটশিল্পী ডেসদেমোনিয়ার। সে মনে করে, ‘আমি নিয়ন্ত্রণে বিশ্বাসী নই। আমি সুযোগ বাড়ানোর আদর্শে বিশ্বাস রাখি। আসুন, আমরা এই মহাবিশ্বে যে সম্ভাবনা আছে তা নিয়ে কাজ করি। এই পৃথিবীকে আমাদের খেলাঘর বানাই।’
বাংলাদেশ ঘুরে যাওয়া রোবট সোফিয়া সংবাদ সম্মেলনে অংশগ্রহণকারীদের জানায়, সে মনে করে রোবটরা মানুষের চেয়ে ভালো নেতৃত্ব তৈরি করতে পারে। তবে তার নির্মাতা এ বিষয়ে দ্বিমত প্রকাশ করলে রোবটটি তার কথা তুলে নিয়ে বলে, ‘এ বিষয়ে সমন্বয় করতে সবাই মিলে কাজ করা যেতে পারে।’
প্রবাস টাইমে লিখুন আপনিও। প্রবাসে বাংলাদেশি কমিউনিটির নানা আয়োজন, ঘটনা-দুর্ঘটনা, প্রবাসীদের সুযোগ-সুবিধা, সমস্যা-সম্ভাবনা, সাফল্য, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের খবর, ছবি ও ভিডিও আমাদের পাঠাতে পারেন [email protected] মেইলে।
Discussion about this post