কোন ধরণের বিনিয়োগ না করেও রাতারাতি কোটিপতি বনে যাওয়ার সহজ যে কয়টি মাধ্যম আছে, তার মধ্যে একটি সাপ্লাই ব্যবসা। সহজ ভাষায় যার অর্থ মানুষ বেচাকেনা করা। এটি ওমান সহ মধ্যপ্রাচ্যে বেশ প্রসিদ্ধ একটি পেশা। রাস্তা থেকে শ্রমিক কুড়িয়ে বিভিন্ন কোম্পানিতে ঘণ্টা হিসেবে কাজ দেন এই পেশার লোকজন।
ওমানে খোজ নিয়ে জানাগেছে, হাজারো কর্মী তাদের মজুরি থেকে বঞ্চিত। ন্যায্য পাওনা তো দুরের কথা সারা মাস কাজ করে বেতনও ঠিক মত মেলেনা। সাপ্লাই কোম্পানি কাজের বৈধতা না থাকায় আইনানুগ কোনো ব্যবস্থাও নিতে পারেন না কর্মীরা। আর তাই এক ধরণের দাসত্বের মত বাধ্য হয়েই কাজ করতে হয়। এভাবে মাসের পর মাস বেতন আটকে রাখা হয় প্রবাসীদের। এমনও অনেক প্রবাসী আছেন, যাদের ৫ থেকে ৬ মাস পর্যন্ত বেতন দেওয়া হয়নি।
প্রবাসীরা আমাদের জানিয়েছেন, দালালের খপ্পরে পড়ে ফ্রি ভিসা নামক অবৈধ ভিসায় ওমান যেয়ে বিপাকে পরতে হয়। এই ভিসায় কাজের কোনো নিশ্চয়তা না থাকায় নিজেকেই নিজের কাজের সন্ধান করতে হয়। এর জন্য দ্বারস্থ হতে হয় সাপ্লাই কোম্পানির। তারা বিভিন্ন কোম্পানিতে চুক্তি ভিত্তিক কর্মী নিয়োগ দিয়ে থাকেন। এতে একেক জন কর্মীকে ২০০ থেকে ৩০০ রিয়ালের বিক্রি করা হলেও একজন শ্রমিক ১ থেকে দেড়শো রিয়াল মজুরী পান। বাকি অধিকাংশ রিয়াল চলে যায় সাপ্লাই কোম্পানির পকেটে। সাপ্লাই কোম্পানি গুলো আবার সরাসরি শ্রমিকের একাউন্টে টাকা না দিয়ে তাদের আরবাব অর্থাৎ ওমানি স্পন্সরের একাউন্টে দিচ্ছে, এখান থেকে একটা অংশ কমিশন বাবদ রেখে দিচ্ছেন ওমানি মালিক। এভাবেই কমিশন ভাব হয়ে নাম মাত্র একটা অংশ পান প্রবাসীরা। তাও মাসের পর মাস ঘুরতে হয় অনেকের ক্ষেত্রে।
এতে দেখা যায়, কাঠ ফাটা গরমে সারা মাস কাজ করে একজন শ্রমিক যে অর্থ পান, তার চেয়ে দ্বিগুণ অর্থ নিচ্ছে সাপ্লাই কোম্পানি। এক্ষেত্রে শ্রমিকদের অধিকার চরমভাবে ক্ষুণ্ণ হচ্ছে বলে দাবী প্রবাসীদের। এদিকে, ফ্রি ভিসার আইনগত কোন ভিত্তি না থাকায় আইনের দ্বারস্থ হতে পারেন না প্রবাসীরা। ফলে, নীরবে নিভৃতে এভাবেই শোষণের শিকার হচ্ছেন প্রবাসীরা। আধুনিক যুগে এসেও শ্রমিকদের সাথে এমন আচরণ নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছে অভিবাসন বিশেষজ্ঞরা। এ ব্যাপারে সরকারের আরো দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করা উচিত বলেও মত তাদের।
প্রবাস টাইমে লিখুন আপনিও। প্রবাসে বাংলাদেশি কমিউনিটির নানা আয়োজন, ঘটনা-দুর্ঘটনা, প্রবাসীদের সুযোগ-সুবিধা, সমস্যা-সম্ভাবনা, সাফল্য, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের খবর, ছবি ও ভিডিও আমাদের পাঠাতে পারেন [email protected] মেইলে।
Discussion about this post