প্রবাসী বাংলাদেশিদের ভোটার করার চিন্তা অনেক আগের হলেও এতদিন কোনো অগ্রগতি হয়নি এই উদ্যোগের। বর্তমান নির্বাচন কমিশন দায়িত্ব নেয়ার পর আলোর মুখ দেখতে যাচ্ছে উদ্যোগটি। এ ক্ষেত্রে প্রাধান্য দেয়ো হতে পারে রেমিট্যান্স যোদ্ধাদের। প্রথম দফায় সংযুক্ত আরব আমিরাতকেই বেছে নিয়েছে কমিশন। জানা গেছে, প্রবাসীদের ভোটার করতে শিগগিরই দুবাই যাচ্ছেন নির্বাচন কমিশনের (ইসি) কর্মকর্তারা। অগ্রবর্তী দল হিসেবে ১৮ মে দুবাই যাবে কারিগরি টিম। এর পর ২৬ মে প্রশাসনিক দলের সদস্যরা যাবেন বলে নির্বাচন কমিশনের সূত্র জানিয়েছে।
এ বিষয়ে ইসির জাতীয় নিবন্ধন ও প্রবাসী অধিশাখার পরিচালক মো. আব্দুল মমিন সরকার জানিয়েছেন, কমিশনের প্রতিনিধি দলের সদস্যরা দুবাইয়ে যন্ত্রপাতি স্থাপন, তথ্য সংগ্রহ এবং দায়িত্ব পালনকারীদের হাতে-কলমে প্রশিক্ষণ দেবেন। রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর কথা বিবেচনায় নিয়ে প্রবাসে নিবন্ধনের পর আবেদনগুলো দেশে আবার যাচাই-বাছাই করা হবে। এরপরই স্মার্ট কার্ড দেওয়া হবে।
আমিরাতে এ কার্যক্রমের অভিজ্ঞতা নিয়ে পর্যায়ক্রমে রেমিট্যান্স প্রবাহের আধিক্য বিবেচনায় বাংলাদেশি শ্রমিক অধ্যুষিত দেশগুলোতেও এ কার্যক্রম চালানো হবে বলে জানান তিনি।
প্রবাসী বাংলাদেশিদের ভোটার করতে এর আগে কয়েক দফা উদ্যোগ নেওয়া হয়। কিন্তু তেমন অগ্রগতি হয়নি। বর্তমান নির্বাচন কমিশন দায়িত্ব নেওয়ার পর ফের উদ্যোগটি নেওয়া হয়। এ কার্যক্রমের জন্য ৪০ কোটি টাকা বরাদ্দ রয়েছে। এই উদ্যোগের প্রথম ধাপে আরব আমিরাত যাচ্ছে ইসির একটি দল।জানা গেছে ,নির্বাচন কমিশন এই উদ্যোগ বাস্তবায়নের জন্য স্বরাষ্ট্র, পররাষ্ট্র, প্রবাসী কল্যাণ, শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়, পাসপোর্ট অধিদপ্তর এবং জনশক্তি রফতানিকারকদের সংগঠনের সঙ্গে সমন্বয় করে কাজ করবে।
সূত্র জানায়, প্রবাসীদের ভোটার করতে দূতাবাসের সহযোগিতায় ইসির কর্মকর্তারা তথ্য সংগ্রহ করে বাংলাদেশে যাচাই-বাছাই করবেন। এরপরই প্রবাসীদের ভোটার করা হবে। মিলবে স্মার্ট কার্ডও। দুবাইয়ে এই উদ্যোগ সফলভাবে বাস্তবায়ন করা গেলে পর্যায়ক্রমে অন্য দেশেও চালু করা হবে। এ ক্ষেত্রে রেমিট্যান্স যোদ্ধাদের প্রাধান্য দিয়ে মধ্যপ্রাচ্য, মালয়েশিয়া এবং সিঙ্গাপুরকে বেছে নেওয়া হতে পারে।
ইসির কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, ছয় দেশ থেকে সাড়ে ৩ হাজারেরও বেশি প্রবাসী বাংলাদেশি ভোটার নিবন্ধনের আবেদন করেছেন। তার মধ্যে মালয়েশিয়ায় প্রায় ৪০০, সৌদি আরবে ১ হাজার ৩০০, সিঙ্গাপুরে ২৬৬, সংযুক্ত আরব আমিরাতে ১ হাজার ৪০, যুক্তরাজ্যের ৭৭৪ ও মালদ্বীপের ৩৬ জনের আবেদন রয়েছে।
উল্লেখ্য, ১৯৯৮ সালে দেশের উচ্চ আদালত প্রবাসী বাংলাদেশিদের ভোটাধিকার সংবিধান স্বীকৃত বলে ঘোষণা দেয়। কিন্তু দীর্ঘ ২২ বছরেও তা বাস্তবায়ন হয়নি। বিশ্বের ১৫৭টি দেশে প্রায় কোটির ওপরে প্রবাসী বাংলাদেশি রয়েছেন।
প্রবাস টাইমে লিখুন আপনিও। প্রবাসে বাংলাদেশি কমিউনিটির নানা আয়োজন, ঘটনা-দুর্ঘটনা, প্রবাসীদের সুযোগ-সুবিধা, সমস্যা-সম্ভাবনা, সাফল্য, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের খবর, ছবি ও ভিডিও আমাদের পাঠাতে পারেন [email protected] মেইলে।
Discussion about this post