কুমিল্লায় আলোচিত যুবলীগ নেতা জামাল হত্যা মামলার এজাহারনামীয় ৯ জনের মধ্যে ৩ আসামিকে গ্রেপ্তার করা হলেও বাকি ৫ আসামি বিদেশে পালিয়েছেন। অপর এক আসামি দেশেই গা ঢাকা দিয়ে আছেন বলে জানা গেছে। জানা গেছে, পালিয়ে যাওয়া আসামিদের মধ্যে দায়েরকৃত হত্যা মামলার ১ নম্বর আসামি তিতাস উপজেলার জিয়ারকান্দি এলাকার মো. সুজন নেপালে, ২ নম্বর আসামি আরিফ হোসেন নেপালে, ৫ নম্বর আসামি বাদল খান সংযুক্ত আরব আমিরাতে, ৬ নম্বর আসামি শাকিল আহমেদ ভারতে এবং ৮ নম্বর আসামি অলি হাসান সৌদি আরবে পালিয়েছেন। এ মামলার ৯ নম্বর আসামি কালা মনির দেশে আত্মগোপনে রয়েছেন।
রোববার (৭ মে) দুপুরে কুমিল্লা নগরীর শাকতলায় র্যাব-১১ সিপিসি-২ কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানিয়েছেন অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল তানভীর মাহমুদ পাশা।
এর আগে গত মঙ্গলবার (২ মে) রাতে নিহত যুবলীগ নেতা জামাল হোসেনের স্ত্রী পপি আক্তার বাদী হয়ে ৯ জনের নাম উল্লেখ করে মোট ১৭ জনকে আসামি করে দাউদকান্দি মডেল থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন। ৯ আসামির মধ্যে এজাহারে বর্ণিত ৩ নম্বর আসামি তিতাস উপজেলার জিয়ারকান্দি এলাকার খুরশিদ মিয়ার ছেলে ইসমাঈল(৩৬), ৪ নম্বর আসামি তিতাস উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক এবং তিতাস উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান শাহিনুল ইসলাম ওরফে সোহেল শিকদার এবং ৭ নম্বর আসামি দাউদকান্দি উপজেলার গোপচর এলাকার মৃত বজলুর রহমানের ছেলে শাহ আলম ওরফে পা কাটা আলমকে ঢাকা এবং চট্টগ্রামের বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে গ্রেপ্তার করে র্যাব।
র্যাব-১১ এর অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল তানভীর মাহমুদ পাশা সংবাদ সম্মেলনে বলেন, বিদেশে পালিয়ে যাওয়া আসামিদের দেশের ফিরিয়ে আনার চেষ্টা চলছে। দেশে গা ঢাকা দেওয়া কালা মনিরকে দ্রুত গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় আনা হবে বলেও জানিয়েছেন তিনি।
অপরদিকে এ হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত মাইক্রোবাসের চালক সুমন হোসেনকে গ্রেপ্তার করেছে দাউদকান্দি মডেল থানা পুলিশ। এসময় হত্যাকাণ্ডে অংশ নেওয়া মাইক্রোবাস এবং বেশ কিছু আলামত জব্দ করা হয়। শনিবার (৬ মে) রাতে নারায়ণগঞ্জের মদনপুর এলাকা থেকে নারায়ণগঞ্জ জেলা পুলিশের সহযোগিতায় তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তারকৃত মাইক্রোবাসচালক সুমন হোসেন জেলার তিতাস উপজেলার লালপুর এলাকার শামসুল হকের ছেলে। ঢাকা পোস্টকে বিষয়টি নিশ্চিত করেন দাউদকান্দি মডেল থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আলমগীর হোসেন।
তিতাস উপজেলা যুবলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক জামাল হোসেন হত্যা মামলায় এখন পর্যন্ত মোট ৪ জনকে গ্রেপ্তার করেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।
প্রসঙ্গত, গত রোববার রোববার (৩০ এপ্রিল) রাত ৮টার দিকে উপজেলার গৌরীপুর পশ্চিম বাজার এলাকায় জামাল হোসেন নামের এক যুবলীগ নেতাকে বোরকা পরে গুলি করে তিন দুর্বৃত্ত। পরে তাকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। নিহত জামাল হোসেন তিতাস উপজেলার নোয়াগাঁও জিয়ারকান্দি গ্রামের ফজলুল হকের ছেলে। তিনি তিতাস উপজেলা যুবলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক।
গৌরিপুর একটি ভাড়া বাসায় থাকতেন জামাল। হত্যাকাণ্ডের দুদিন পর জামাল হোসেনের স্ত্রী বাদী হয়ে ১৭ জনকে আসামি করে দাউদকান্দি মডেল থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন।
প্রবাস টাইমে লিখুন আপনিও। প্রবাসে বাংলাদেশি কমিউনিটির নানা আয়োজন, ঘটনা-দুর্ঘটনা, প্রবাসীদের সুযোগ-সুবিধা, সমস্যা-সম্ভাবনা, সাফল্য, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের খবর, ছবি ও ভিডিও আমাদের পাঠাতে পারেন [email protected] মেইলে।
Discussion about this post