দীর্ঘ দূরত্ব পাড়ি দিতে উড়োজাহাজ বা বিমানের কোনো বিকল্প নেই। আর শুধু সময় বাঁচাতে নয় বরং যাত্রীদের আরাম এবং নিরাপত্তার ব্যবস্থা করে বিশ্বের স্বনামধন্য সব এয়ারলাইস। যাত্রীদের আধুনিক যত সেবা রয়েছে তার সবই নিশ্চিত করে থাকে বিমান কোম্পানিগুলো। তবে মাঝে মাঝে যাত্রীসেবা রীতিমতো বিলাসিতা হয়ে দাঁড়ায়। তবে জেনে নিন বিশ্বের সবচেয়ে বিলাসবহুল ৫টি যাত্রীবিমান সম্পর্কে-
১. ইতিহাদ এয়ারওয়েজ-
সর্বোচ্চ আরামদায়ক বিমানযাত্রার জন্য যা কিছু প্রয়োজন তার সবই পাবেন ইতিহাদ এয়ারওয়েজের ‘দ্য রেসিডেন্স’ কেবিনে। এখানে ঢুকলে আপনার মনেই হবে না আপনি মাটি থেকে হাজার ফুট উপরে একটি বিমানের পেটের মধ্যে বসে আছেন। কারণ ঘুমোনো বা বিশ্রামের জন্য রয়েছে আরামদায়ক ডাবল বেডের বেডরুম, বসার জন্য আর্টচেয়ার, লিভিং রুম এবং সাওয়ার রুম। এটা ওটার জন্য সার্বক্ষণিক একজন বাটলার তো থাকছেই। সংযুক্ত আরব আমিরাতের বিমান পরিবহন সংস্থা ইতিহাদ এয়ারওয়েজের এই বিলাসবহুল কেবিন সার্ভিসের জন্য ইতিমধ্যে ওয়ার্ল্ড লিডিং এয়ারলাইন ফার্স্ট ক্লাসের খেতাব ছাড়াও বেশ কিছু ট্রাভেল অ্যাওয়ার্ডও পেয়েছে। তবে এই রেসিডেন্স কেবিনের জন্য আপনাকে গুনতে হবে বেশ মোটা অঙ্কের টাকা। নিউইয়র্ক থেকে আবুধাবি যাওয়ার টিকিটের মূল্য রাখা হয়েছে ৩০ হাজার মার্কিন ডলারেরও বেশি৷
২. সিঙ্গাপুর এয়ারলাইন্স
সিঙ্গাপুর এয়ারলাইন্সের ফার্স্ট ক্লাস স্যুট সার্ভিসটি রয়েছে শুধুমাত্র এয়ারলাইন এ ৩-৮০-৮০০ বিমানের মডেলে। এই স্যুটটির ডিজাইন করেছেন ফরাসির এক বিখ্যাত ডিজাইনার। ইতালীয় চামড়ায় মোড়ানো আরামদায়ক সিট তো রয়েছেই তাছাড়াও রয়েছে বিছানা যা পেছনের দেয়ালের সঙ্গে ফোল্ড করে রাখা যায়। আর ২৩ ইঞ্চি টিভি সেট রয়েছে সার্বক্ষণিক বিনোদনের জন্য। রয়েছে দক্ষ ও খ্যাতিমান শেফদের রান্না করা খাবারের সুব্যবস্থাও। প্রয়োজনমতো কেবিনের আলো বাতাস নিয়ন্ত্রণের সুব্যবস্থাও রয়েছে সঙ্গে অত্যাধুনিক বাথরুম। চাইলে দামি ওয়াইন বা কফিও পাবেন ইচ্ছেমতো।
৩. এমিরেটস এয়ারলাইন্স-
এটি সংযুক্ত আরব আমিরাতের দুবাই ভিত্তিক একটি বিমান সংস্থা। দীর্ঘদিন ধরে যাত্রীসেবায় বিশ্বস্ততা অর্জন করেছে এই এয়ারলাইনটি। এমিরেটসের এয়ার বাস এ-৩৮০ বা বোয়িং ৭৭৭ এর বেশ কিছু বিমানে রয়েছে বেশ কিছু বিলাসবহুল ফার্স্ট ক্লাস কেবিনের ব্যবস্থা। এখানে দু’ধরনের স্যুট রয়েছে। একটিতে মেঝে থেকে সিলিং পর্যন্ত দরজা লাগানোর ব্যবস্থা রয়েছে৷ সিট কাম বিছানা তো বটেই সঙ্গে রয়েছে স্পা করার সুবিধা, একটি মিনি বার, কোর ট্রাঙ্ক এবং বাড়তি মালামাল নেয়ার ব্যবস্থা। এছাড়াও ব্যক্তিগত এলইডি টিভি, কেবিনে আলো বাতাস বাড়ানোর ব্যবস্থা তো রয়েছেই। সাওয়ার নেয়ার বাড়তি ব্যবস্থাও রয়েছে এই কেবিনে। মোটকথা আপনি মেনে নিতে বাধ্য যে আপনি একটি বিলাসবহুল হোটেলে রয়েছেন। এই কেবিনে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র থেকে দুবাই যেতে গুণতে হবে ৩০ হাজার মার্কিন ডলারের চেয়েও বেশি।
৪. কাতার এয়ারওয়েজ-
কাতার এয়ারওয়েজের প্রথম শ্রেণীর কেবিন বা স্যুটের নকশা অন্যান্য প্রথম শ্রেণীর মতো হলেও এতে রয়েছে অনন্য কিছু সংযোজন। যেগুলো কাতার এয়ারওয়েজে ভ্রমণকে দিয়েছে আলাদা মাত্রা। এই বিমানের বসার সিটকে মূহুর্তেই শোয়ার বিছানায় পরিণত করা সম্ভব। রয়েছে ২৬ ইঞ্চির টিভি স্ক্রিন। খ্যাতনামা শেফদের তৈরিকৃত খাবারের ব্যবস্থাসহ রয়েছে ওয়াইফাই সুবিধা। আর হাত পা ছড়ানোর জন্য রয়েছে লাউঞ্জ। এছাড়াও রয়েছে ছোট খাটো বার। আর বিমানের ফার্স্ট ক্লাস বাথরুমও মুগ্ধ করবে আপনাকে। এই সার্ভিসের জন্য কাতার এয়ারওয়েজ ইতোমধ্যেই পেয়েছে স্কাইক্র্যাকস এর ফাইভ স্টার এয়ারলাইন অ্যাওয়ার্ড।
৫. ক্যাথে প্যাসিফিক এয়ারওয়েজ-
হংকং ভিত্তিক বিমান পরিবহন সংস্থা ক্যাথে প্যাসিফিকের ফার্স্ট ক্লাস কেবিন রয়েছে তালিকার ৫ নম্বরে। আরামদায়ক এবং বিলাসবহুল ভ্রমণ দুটোই নিশ্চিত করা হয় এই বিমানযাত্রায়। বিশাল পরিসরের কেবিনে শুয়ে বসে যেভাবে ইচ্ছে যেতে পারবেন আপনি! রয়েছে টিভি বা এলসিডি টাচস্ক্রিন যা দিয়ে কেবিনের আলো নিয়ন্ত্রণ করা যাবে ইচ্ছেমতো এবং খাবার হিসেবে ক্যাভিয়ার ও ওয়াইন তো থাকছেই। কক্ষে রয়েছে বহিরাগত ভ্রমণকারীর বসার ব্যবস্থাও। ক্যাথে প্যাসিফিকের এই সেবাটি ইতোমধ্যে পেয়েছে আন্তর্জাতিক পুরষ্কারও। আপনি যদি নিউইয়র্ক থেকে হংকং এ ডাউন ট্রিপে যেতে চান আপনাকে গুনতে হবে ২৭ হাজার মার্কিন ডলার।
প্রবাস টাইমে লিখুন আপনিও। প্রবাসে বাংলাদেশি কমিউনিটির নানা আয়োজন, ঘটনা-দুর্ঘটনা, প্রবাসীদের সুযোগ-সুবিধা, সমস্যা-সম্ভাবনা, সাফল্য, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের খবর, ছবি ও ভিডিও আমাদের পাঠাতে পারেন [email protected] মেইলে।
Discussion about this post