একের পর এক চমক নিয়ে হাজির হচ্ছেন তুরস্ক। বিশ্বের একমাত্র ড্রোনবাহী যুদ্ধজাহাজ উদ্বোধন করে রীতিমত ফেলে দিয়েছেন হৈ চৈ। নির্ঘুম করে তুলেছেন পশ্চিমা যুদ্ধজাহাজ নির্মাণকারী প্রযুক্তিবিদদের।
যুদ্ধ জাহাজ নির্মাণে এ যেন এক নতুন বিস্ময় বিপ্লবের সূচনা ঘটালো প্রেসিডেন্ট এরদোয়ান প্রশাসন। পৃথিবীর প্রথম দেশ হিসেবে মনুষ্য বিহীন ড্রোনবাহী রণতরী বানিয়ে উন্মোচিত করল মুসলিম দেশগুলোর সক্ষমতা।
১০ এপ্রিল জমকালো এক আয়োজনের মধ্য দিয়ে “টিচিজি আনাদুলো” নামের ওই মনুষ্যবিহীন রনতরিটি তুরস্কের নৌ-বাহিনীর হাতে অর্পণ করে গোটা বিশ্বকে নতুন এক চমক দেন প্রেসিডেন্ট এরদোয়ান। যার দৈর্ঘ্য ২৩২ মিটার এবং প্রস্থ ৩২ মিটার।
তুর্কি প্রশাসন বলছে, এই যুদ্ধ জাহাজের রানওয়েতে যে সব ড্রোন বিমান শত্রুর ঘুম কেড়ে নেওয়ার অপেক্ষায় রয়েছে, সে অত্যাধুনিক ড্রোন বিমানও সম্পূর্ণ তুর্কি প্রযুক্তিতে তৈরি। ২৭ হাজার ৪০০ টন এই যুদ্ধ জাহাজে এতো বিপুল পরিমাণ অস্ত্র, গোলাবারুদ, খাবার মজুত করা হয়েছে যে, এটি টানা ৫০ দিন স্থলভাগের কোথাও না দাড়িয়ে সমুদ্র ভ্রমণ করতে পারবে।
জাহাজটি বিভিন্ন যুদ্ধযান, যুদ্ধ বিমান, ড্রোন, হেলিকপ্টার এবং ১ হাজার ৪০০ সৈন্য নিয়ে পাড়ি দিতে পারবে ১৪ হাজার কিলোমিটার পথ। দাম, নকশা এবং বিধ্বংসীর দিক থেকে এটিকে মার্কিন এফ-৩০ এর সাথে তুলনা করা হয়েছে বলেও জানা যায়।
রণতরীটিতে থাকা ফাইটার জেটির আদলে তৈরি হাজারো ড্রোন শত্রু রাডার ফাকি দিতেও সক্ষম বলে দাবী দেশটির। এদিকে, আন্তর্জাতিক অঙ্গনে তুমুল আলোড়ন সৃষ্টি করা এই রণতরীর সিনেমাটিক ফুটেজ মিলছে। সেখানে দেখা যাচ্ছে, দীর্ঘ রানওয়েতে সারি সারি আকারে সাজানো রয়েছে তুরস্কের অত্যাধুনিক সব হেলিকপ্টার, যুদ্ধ বিমান এবং চালক-বিহীন ড্রোন।
প্রেসিডেন্ট এরদোয়ানের জামাতা বেরাত আলবায়রাকের হাত ধরেই তুরস্ক ড্রোনের জগতে ঘটালো এক বিস্ময় বিপ্লবের। রচনা করলো বিরোধী দেশ গুলোকে স্মরণ করে দেওয়ার মতো নতুন এক গল্পের।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে চড়া গলায় ভাষণ দিয়েছেন তুর্কি প্রেসিডেন্ট এরদোয়ান। এ সময় তিনি তুরস্কের সাময়িক সক্ষমতার কথাও বিরোধী দেশ গুলোকে স্মরণ করে দেন।
সমর বিশ্লেষকরা বলছেন, প্রথম বিশ্বযুদ্ধে পরাজয় এবং তুর্কি খেলাফত ভেঙ্গে তুরস্কের যে পতন হয়েছিল, তা গত দেড় যুগে এরদোয়ানের নেতৃত্বে রিকভার করে ফেলেছে। একদিকে সব অত্যাধুনিক যুদ্ধ সরঞ্জাম আবিষ্কার অপর দিকে এরদোয়ানের সুদক্ষ কূটনীতির মাধ্যমে তুরস্ক ইতিমধ্যেই বিশ্বের অন্যতম পরাশক্তিতে পরিণত হয়েছে।
এমনকি নিজেদের সীমানা পার হয়ে সিরিয়া, ইরাক সহ মধ্যপ্রাচ্যে সংঘাতপূর্ণ দেশে তুরস্ক সামরিক অভিযান পরিচালনা করছে। পরিস্থিতি যেভাবে এগোচ্ছে, তাতে ধারনা করা হচ্ছে এরদোয়ানের নেতৃত্বে তুরস্ক আগামী কয়েক বছরের মধ্যে সুপার পাওয়ারে পরিণত হবে। তখন তুরস্কের এই সুবিশাল সামরিক বলয়ের একটা সুফল পাবে বিশ্বের বিভিন্ন অঞ্চলের নির্যাতিত মুসলিম জনগোষ্ঠী।
প্রবাস টাইমে লিখুন আপনিও। প্রবাসে বাংলাদেশি কমিউনিটির নানা আয়োজন, ঘটনা-দুর্ঘটনা, প্রবাসীদের সুযোগ-সুবিধা, সমস্যা-সম্ভাবনা, সাফল্য, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের খবর, ছবি ও ভিডিও আমাদের পাঠাতে পারেন [email protected] মেইলে।
Discussion about this post