মধ্যপ্রাচ্য বলতেই সামনে ভেসে ওঠে তেল সম্পদের অট্টালিকা। গোটা দুনিয়ার তেলের বাজার নিয়ন্ত্রণ করে মধ্যপ্রাচ্য। কিন্তু তেল সম্পদ ফুরিয়ে আসায় সামনের বছরগুলো তাদের জন্য হয়ে উঠছে কঠিন। ফলে ওমান, কাতার, সৌদি আরবসহ আরব দেশগুলোকে এখন টিকে থাকতে বিকল্প অর্থনীতির দিকে ঝুঁকতে হচ্ছে।
মাত্র দুই দশক আগেও ইরানের উর্মিয়া ছিল মধ্যপ্রাচ্যের বৃহত্তম হ্রদ এবং এখানে অবস্থিত পর্যটন কেন্দ্রের হোটেল ও রেস্তোরাঁয় প্রচুর মানুষের আনাগোনায় স্থানীয় অর্থনীতিও বেশ ভাল অবস্থায় ছিল। মার্কিন সংবাদ মাধ্যম সিএনএনের একটি প্রতিবেদনে জানা গেছে, জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে হ্রদটি শুকিয়ে লবণাক্ত সমতলভূমিতে রূপান্তরিত হচ্ছে এবং ফেরিগুলো চলতে পারছে না।
ইরানের মতো মধ্যপ্রাচ্যের অন্যান্য দেশেও একই সমস্যা দেখা দিয়েছে। বস্তুত দেশগুলোতে পানির সরবরাহ শেষ হয়ে যাচ্ছে। এই অঞ্চলটি বেশ কিছুদিন ধরে বিরামহীন খরা ও উচ্চ পর্যায়ের তাপমাত্রার মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। এ ধরনের বৈরি পরিবেশে জীবনধারণ করা প্রায় অসম্ভব। সঙ্গে জলবায়ু পরিবর্তন, পানির অব্যবস্থাপনা ও অতিরিক্ত ব্যবহার যোগ হওয়াতে ভবিষ্যতে আশংকাজনক পরিস্থিতি দেখা দিতে পারে।
ওয়াটার রিসোর্সেস ইন্সটিটিউটের (ডব্লিউআরআই) পরিচালক চার্লস আইসল্যান্ড জানান, খাদ্য উৎপাদনে আত্ননির্ভরশীলতা গড়ে তোলার উদ্দেশ্যে ইরান, ইরাক ও জর্ডানসহ কিছু মধ্যপ্রাচ্যের দেশ প্রচুর পরিমাণে ভূগর্ভস্থ পানি তুলে জমিতে সেচ দিচ্ছে। একই সঙ্গে অঞ্চলে বৃষ্টিপাতের পরিমাণও কমে গেছে।
‘বৃষ্টিপাতের মাধ্যমে যে পরিমাণ পানি ভূগর্ভে প্রবেশ করছে, তারচেয়েও অনেক বেশি পানি তারা ব্যবহার করছেন। ভূগর্ভস্থ পানির স্তর ধীরে ধীরে নিচে নেমে যাচ্ছে, কারণ সেখানে যে গতিতে পানি জমা হয় তারচেয়েও অনেক দ্রুত পানি তুলে ফেলা হচ্ছে’, জানান চার্লস।
বিশেষজ্ঞরা আশংকা করছে, বৃষ্টির পরিমাণ বাড়লেও বাড়তি গরমের কারণে পানি বাষ্প হয়ে উড়ে যাবে। এছাড়াও অতিরিক্ত বৃষ্টির কারণে মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোতে চীন, জার্মানি ও বেলজিয়ামের মতো বন্যা হতে পারে। মধ্যপ্রাচ্যে সবচেয়ে বেশি পানি সংকটে ভুগতে থাকা দেশগুলোর মধ্যে জর্ডান অন্যতম। সে দেশের মানুষ কম পানি ব্যবহার করে জীবন ধারণ করায় অভ্যস্ত হয়ে গেছে। আগামী কয়েক বছরের মধ্যে সৌদি আরবে ভূগর্ভস্থ পানিও শেষ হয়ে যাবে বলে সতর্ক করে দিয়েছেন দেশটির বিশেষজ্ঞরা।
প্রবাস টাইমে লিখুন আপনিও। প্রবাসে বাংলাদেশি কমিউনিটির নানা আয়োজন, ঘটনা-দুর্ঘটনা, প্রবাসীদের সুযোগ-সুবিধা, সমস্যা-সম্ভাবনা, সাফল্য, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের খবর, ছবি ও ভিডিও আমাদের পাঠাতে পারেন [email protected] মেইলে।
Discussion about this post