করোনা মহামারি ও রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের অর্থনৈতিক পরিস্থিতি খারাপ হয়েছে। বাদ যায়নি আরব বিশ্বও। ৩১ মার্চ জাতিসংঘের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, বর্তমানে আরব বিশ্বের পরিস্থিতিও বেশ নাজুক। সেখানে বাড়ছে দারিদ্র্য। লিবিয়া ও গালফ কো-অপারেশন কাউন্সিলের (জিসিসি) দেশগুলো বাদে পশ্চিম এশিয়ার এক-তৃতীয়াংশ মানুষ দরিদ্র জীবন যাপন করছে। খাদ্যমূল্য বেড়েছে অনেক।
‘সার্ভে অব ইকোনমিক অ্যান্ড সোশ্যাল ডেভেলপমেন্টস ইন দ্য আরব রিজিওন’ শীর্ষক ওই সমীক্ষায় বলা হয়, আরব দেশগুলোর ১৩ কোটি মানুষ দুর্ভিক্ষের শিকার। তারা জাতীয় দারিদ্র্যসীমার নিচে বসবাস করছে। সমীক্ষায় আশঙ্কা প্রকাশ করে বলা হয়েছে, ২০২৪ সাল নাগাদ আরব বিশ্বে দারিদ্র্য আরও বাড়বে। আগামী দুই বছরে আরব বিশ্বের মোট ৩৬ শতাংশ মানুষ দারিদ্র্যসীমার নিচে চলে যাবে। জিসিসির সদস্যদেশগুলো হচ্ছে বাহরাইন, কুয়েত, ওমান, কাতার, সৌদি আরব ও সংযুক্ত আরব আমিরাত।
সমীক্ষায় আরও বলা হয়, গত বছর বিশ্বের সবচেয়ে বেশি বেকারত্ব ছিল আরব অঞ্চলে। সেখানে বেকারত্বের হার ১২ শতাংশের বেশি। ২০২৩ সালে বেকারত্বের হার কিছুটা কমে ১১ দশমিক ৭ শতাংশে নামতে পারে। করোনা-পরবর্তী অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধার প্রচেষ্টার অংশ হিসেবে বেকারত্ব কিছুটা কমতে পারে। ধারণা করা হচ্ছে, ২০২৩ সালে আরব অঞ্চলের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ৪ শতাংশ ও ২০২৪ সালে ৩ দশমিক ৪ শতাংশ হতে পারে।
জাতিসংঘের এ সমীক্ষার শীর্ষ লেখক আহমেদ মৌম্মি বলেন, জিসিসি ও অন্য তেল রপ্তানিকারক দেশগুলো জ্বালানির উচ্চ মূল্যের কারণে সুবিধা পাবে। কিন্তু তেল আমদানিকারক দেশগুলো বিভিন্ন আর্থসামাজিক চ্যালেঞ্জের মুখে পড়বে। এর মধ্যে জ্বালানির মূল্যবৃদ্ধি, খাদ্য সরবরাহ-সংকট, পর্যটনশিল্পে ধস ও আন্তর্জাতিক সাহায্য কমে যাওয়ার মতো নানা সমস্যার মুখে পড়তে হবে দেশগুলোকে। খাদ্যপণ্যের মূল্যবৃদ্ধির কারণে ইতিমধ্যে মানবিক বিপর্যয় দেখা দিয়েছে।
মাস্কাট ডেইলির এক প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০২১ সালে আরব অঞ্চলে আনুমানিক ৫ কোটি ৩৯ লাখ মানুষ মারাত্মক খাদ্য নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে, যা ২০১০ সালের তুলনায় ৫৫ শতাংশ বেশি। এটিও আগের বছরের তুলনায় ৫০ লাখ বেশি। মাঝারি বা গুরুতর খাদ্য নিরাপত্তাহীনতাও তার ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা অব্যাহত রেখেছে, ২০২১ সালে আনুমানিক ১৫৪ দশমিক ৩ মিলিয়ন লোককে প্রভাবিত করেছে, যা আগের বছরের তুলনায় ১১ দশমিক ৬ মিলিয়ন বৃদ্ধি পেয়েছে।
প্রতিবেদন বলেছে, আরব রাজ্যগুলোর অর্ধেকেরও বেশি জনসংখ্যা ২০২০ সালে স্বাস্থ্যকর ডায়েট বহন করতে পারে নাই। আরব অঞ্চলে স্বাস্থ্যকর ডায়েটের ব্যয় ২০১৭ সাল থেকে প্রতি বছর বাড়ছে। আরব অঞ্চল এখনও বিভিন্ন ধরণের অপুষ্টিতে ভুগছে। প্রতিবেদনে তুলে ধরা হয়েছে যে সর্বশেষ উপলব্ধ অনুমানগুলো দেখায় যে, আরব অঞ্চলের প্রাপ্তবয়স্ক জনসংখ্যার ২৮ দশমিক ৮ শতাংশ (১৮ বছর বা তার বেশি) স্থূলকায় অর্থাৎ মোটা, যা বৈশ্বিক গড়ের দ্বিগুণেরও বেশি।
আরও দেখুন:
প্রবাস টাইমে লিখুন আপনিও। প্রবাসে বাংলাদেশি কমিউনিটির নানা আয়োজন, ঘটনা-দুর্ঘটনা, প্রবাসীদের সুযোগ-সুবিধা, সমস্যা-সম্ভাবনা, সাফল্য, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের খবর, ছবি ও ভিডিও আমাদের পাঠাতে পারেন [email protected] মেইলে।
Discussion about this post