কক্সবাজারের টেকনাফ উপজেলায় দুই শিশুকে অপহরণের পর মুক্তিপণ আদায় করে পরিবারের কাছে ফিরিয়ে দেওয়া হয়েছে। শুক্রবার রাত ১২টার পর ওই শিশুদের উদ্ধার করা হয় বলে জানিয়েছে পরিবার। পরিবারের সদস্যদের দাবি, ৭০ হাজার টাকা মুক্তিপণ দেওয়ার পর শিশুদের ফেরত দিয়েছে।
অপহৃত দুই শিশু মো. সালমান হোসেন (৫) ও ওবাইদুল্লাহ(১৩)। সালমান টেকনাফ উপজেলার বাহারছড়ার মারিশবনিয়াপাড়ার বাসিন্দা সংযুক্ত আবর আমিরাত প্রবাসী হোসেন আলীর ছেলে ও ওবাইদুল্লাহ একই এলাকার মো. আলীর ছেলে। অপহৃত দুজন সম্পর্কে চাচাত ভাই।
অপহৃত দুই শিশুকে পুলিশ হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করছে। অপহৃত শিশুদের পরিবারের দাবি, অপহরণকারীরা মোবাইল ফোনের মাধ্যমে ৪ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করেছে। অপহরণকারীরা ওই দিন রাতের মধ্যে দাবি করা টাকা না দিলে তাদের মেরে ফেলার হুমকি দেয়। তাই তারা রাতের মধ্যে অপহরণকারীদের সঙ্গে দফায় দফায় যোগাযোগ করে ৭০ হাজার টাকার বিনিময়ে ছাড়িয়ে আনতে সামর্থ্য হয়েছে।
শুক্রবার সন্ধ্যায় উপজেলার বাহারছড়ার মারিশবনিয়া পাহাড়ি এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। পরে একইদিন রাত ১২টার দিকে মুক্তিপণের ৭০ হাজার টাকা দিয়ে ফিরেছে বলে তথ্যটি নিশ্চিত করেছেন বাহারছড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আমজাদ হোসেন। তিনি বলেন, অপহরণের বিষয় নিয়ে পুরো ইউনিয়নের মানুষ আতঙ্কগ্রস্ত হয়ে পড়েছেন। পাহাড়ের রোহিঙ্গা সন্ত্রাসীদের অবস্থানের কারণে একের পর এক অপহরণের ঘটনা ঘটছে।
পুলিশ সূত্র জানায়, শিশুদের জিজ্ঞাসাবাদে প্রাথমিকভাবে ঘটনাটি পূর্বপরিকল্পিত মনে হচ্ছে। বিষয়টি আমরা খতিয়ে দেখছি। এর আগেও টেকনাফের বিভিন্ন এলাকায় এ ধরনের অপহরণের ঘটনা ঘটেছিল। এর বেশির ভাগ ঘটনা সন্দেহজনক।
অপহৃত ও ফেরত আসা দুই শিশু হল- টেকনাফ উপজেলার বাহারছড়ার মারিশবনিয়াপাড়ার বাসিন্দা সংযুক্ত আবর আমিরাত প্রবাসী হোসেন আলীর ছেলে মো. সালমান (৫) ও একই এলাকার মো. আলীর ছেলে ওবাইদুল্লাহ (১৩) নামে দুজনকে অপহরণ করা হয়। অপহৃত সালমানের মামাতো ভাই হামিদ হোসেন বলেন, ৭০ হাজার টাকা মুক্তিপণ দিয়ে প্রথমে শিশু মো. সালমানকে উদ্ধার করে নিয়ে আসি।
পরে স্থানীয়দের সহযোগিতায় আমরা পাহাড়ে ছুটে যাই। পাহাড়ের ঢালুতে অপহরণকারীদের কবলে থাকা অন্য শিশু ওবাইদুল্লাহর কান্নার আওয়াজ শুনতে পেলে ধাওয়া করলে অপহরণকারীরা ওবাইদুল্লাহকে একা রেখে পালিয়ে যায়। পরে তাকেও উদ্ধার করে বিষয়টি পুলিশকে জানানো হয়।
এ প্রসঙ্গে পুলিশ ফাঁড়ি তদন্ত কেন্দ্রের পরিদর্শক মশিউর রহমান বলেন, শুক্রবার রাতে অপহৃত দুই শিশুকে পাওয়া গেছে। তাদের পরিবারের সদস্যরা জানান, তাদের ছাড়তে ৭০ হাজার টাকা মুক্তিপণ দিয়েছেন। আমরা পুরো ঘটনাটি জানতে দুই শিশুকে জিজ্ঞাসাবাদ করছি। এখনো গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পাওয়া যায়নি।
বাহারছড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আমজাদ হোসেন বলেন, অপহৃত শিশু দুটি পাওয়া গেছে। তবে মুক্তিপণ দিয়ে তারা ফিরেছে বলে পরিবারের কাছ থেকে শুনেছি।
টেকনাফ মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল হালিম বলেন, ফেরত আসা অপহৃত শিশুদের জিজ্ঞাসাবাদের পর প্রাথমিকভাবে ঘটনাটি পূর্বপরিকল্পিত মনে হচ্ছে। বিষয়টি আমরা খতিয়ে দেখছি। পরিবারের পক্ষ থেকে এখনো কোনো ধরনের অভিযোগ দেয়নি।
প্রবাস টাইমে লিখুন আপনিও। প্রবাসে বাংলাদেশি কমিউনিটির নানা আয়োজন, ঘটনা-দুর্ঘটনা, প্রবাসীদের সুযোগ-সুবিধা, সমস্যা-সম্ভাবনা, সাফল্য, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের খবর, ছবি ও ভিডিও আমাদের পাঠাতে পারেন [email protected] মেইলে।
Discussion about this post