দিনাজপুর জেলা শহরের ঈদগাহ বস্তি এলাকায় বাসিন্দা আফরোজা সরকার। দীর্ঘদিন ধরে এখানেই বসবাস করেন। ২০১৭ সালের ২৫ জানুয়ারি পাসপোর্ট করেছিলেন। এর মধ্যে চোখের চিকিৎসার জন্য গিয়েছিলেন ভারতের চেন্নাই শহরে। পাঁচ বছর মেয়াদি তার পাসপোর্টের মেয়াদ শেষ হয়েছে ২০২২ সালের ২৫ জানুয়ারি। ইতোমধ্যে পাসপোর্ট নবায়ন করতে গিয়ে জানতে পারলেন তিনি সৌদির জেদ্দায় আছেন।
এভাবেই নিজের সংশয়ের কথা জানাচ্ছিলেন মৃত মজিবর রহমান সরকারের স্ত্রী আফরোজা সরকার (৬৬)। এবার হজে যাওয়ার প্রস্তুতি নিলেও পাসপোর্ট জটিলতায় পড়েছেন তিনি। এ ঘটনায় সোমবার (১৩ ফেব্রুয়ারি) সকালে দিনাজপুর কোতোয়ালি থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেছেন আফরোজা সরকারের ছেলে আসফাক হোসেন সরকার। এর আগে রোববার (১২ ফেব্রুয়ারি) সকালে পাসপোর্ট নবায়ন করতে গেলে জাল পাসপোর্ট ব্যবহার করে অজ্ঞাত নারীর জেদ্দায় অবস্থানের কথা জানতে পারেন তারা।
এ বিষয়ে আফরোজা সরকারের ছেলে আসফাক হোসেন সরকার বলেন, মায়ের পাসপোর্ট নবায়ন করতে আমি দিনাজপুর আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিসে গেলে জানতে পারি, আমার মায়ের পাসপোর্ট নবায়ন করে এক নারী জেদ্দায় অবস্থান করছেন। কিন্তু আমার মা তো তখন আমার সঙ্গেই পাসপোর্ট অফিসে ছিলেন। আর আগের পাসপোর্টও আমার কাছে। তাহলে কীভাবে আরেকজন আমার মায়ের পাসপোর্ট ব্যবহার করে জেদ্দায় থাকতে পারেন? কীভাবেই বা আমার মায়ের ছবি স্বাক্ষর ছাড়াই পাসপোর্ট নবায়ন করতে পারলেন, সেটা বুঝতে পারছি না।
তিনি আরও বলেন, আগের পাসপোর্টটা ২০১৭ সালের ২৫ জানুয়ারি ইস্যু হয়েছিল, যার মেয়াদ ২০২২ সালের ২৪ জানুয়ারি শেষ হয়ে যায়। পাসপোর্ট নম্বর ছিল BN0209438। আর বর্তমান পাসপোর্টের নম্বর হলো EJ0418842। এ পাসপোর্ট নবায়ন করা হয়েছে ২০২১ সালের ২২ জুলাই, যার মেয়াদ শেষ হবে ২০২৬ সালের ২১ জুলাই। এখন আমাদের ঢাকা পাসপোর্ট অফিসে যোগাযোগ করতে বলছেন এখানকার কর্মকর্তারা। কিন্তু আমরা তো দিনাজপুর আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিসে পাসপোর্ট করেছি, ঢাকায় যাব কেন তাহলে? তারা কীভাবে পাসপোর্ট পেল, এখানে অবশ্যই এ পাসপোর্ট অফিসের অবহেলা আছে।
এ বিষয়ে দিনাজপুর আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিসের সহকারী পরিচালক আজিজুল হক বলেন, ওনাদের একাধিক পাসপোর্ট ছিল, যার কোনো একটা দিয়ে কেউ পাসপোর্ট নবায়ন করেছেন। আগের তো এমআরপি পাসপোর্ট ছিল, যেটা পুরোনো পাসপোর্ট জমা দিলে ওই তথ্য অনুযায়ী পাসপোর্ট নবায়ন করা যেত। এটা তেমন কিছু না। আমাদের এখানে বলার কিছুই নেই। তারা ঢাকা অফিসে যোগাযোগ করছেন। এটা নিয়ে হেড অফিসের সঙ্গে কথা বলতে হবে।
একাধিক পাসপোর্ট থাকার কথা অস্বীকার করে আসফাক হোসেন সরকার বলেন, আমার মায়ের একাধিক পাসপোর্ট ছিল না, নেই। ২০১৭ সালে শুধু একটাই পাসপোর্ট করা হয়েছিল, যা দিয়ে আমার মায় চোখের চিকিৎসা করাতে ভারতে গিয়েছিলেন। সেই পাসপোর্টও আমার কাছে। প্রধানমন্ত্রী দেশকে ডিজিটাল থেকে স্মার্ট করার লক্ষ্যে কাজ করছেন, সেখানে এ ধরনের জালিয়াতি মানা যায় না। আমি চাই, এটার সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হোক।
https://www.youtube.com/watch?v=CLkjCco1oa0&t=83s
প্রবাস টাইমে লিখুন আপনিও। প্রবাসে বাংলাদেশি কমিউনিটির নানা আয়োজন, ঘটনা-দুর্ঘটনা, প্রবাসীদের সুযোগ-সুবিধা, সমস্যা-সম্ভাবনা, সাফল্য, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের খবর, ছবি ও ভিডিও আমাদের পাঠাতে পারেন [email protected] মেইলে।
Discussion about this post