উৎপাদন, নির্মাণ, বৃক্ষরোপণ, কৃষি, পরিষেবা ও রেস্তোরাঁ খাতের পাশাপাশি এবার নতুন আরও ৩টি সাবসেক্টরে বিদেশি কর্মী নেওয়ার ঘোষণা দিলো মালয়েশিয়া। ৯ ফেব্রুয়ারি দেশটির মানবসম্পদ মন্ত্রণালয়ের এক বিবৃতিতে জানানো হয়, সেবা ও কৃষি খাতের এই ৩টি নতুন সাবসেক্টরে নিয়োগকারীরা এখন থেকে বিদেশি কর্মী কোটার জন্য আবেদন করতে পারবেন। খাতগুলো হলো: লন্ড্রি, মেটাল/স্ক্র্যাপ আইটেম এবং ওয়ালেট পাখির বাসা (বার্ড নেস্ট)।
সম্প্রতি দেশটির স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সাইফুদ্দিন নাসুশন ইসমাইল জানিয়েছেন, বিদেশি জনশক্তির জন্য বিভিন্ন খাতের চাহিদা মেটানোর লক্ষ্যে এই ‘বিশেষ পরিকল্পনা’ হাতে নেওয়া হয়েছে। যার ফলে নিয়োগকর্তারা কোটা বা কর্মসংস্থানের পূর্বশর্ত পূরণ না করে তাদের সামর্থ্য ও প্রয়োজনের ভিত্তিতে বাংলাদেশসহ ১৫টি উৎস দেশ থেকে বিদেশি কর্মী নিতে পারবেন।
এদিকে, বিদেশি কর্মী নিয়োগে তৃতীয়পক্ষ তথা এজেন্ট হস্তক্ষেপ বন্ধের ঘোষণা দিয়েছেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী আনোয়ার ইবরাহিম। ফ্রি মালয়েশিয়া টুডের খবরে বলা হয়, নেপাল থেকে কর্মী মালয়েশিয়ায় আসতে খরচ যেখানে সর্বোচ্চ ৩ হাজার ৭০০ রিঙ্গিত, সেখানে বাংলাদেশি ও ইন্দোনেশিয়ান কর্মীদের গুণতে হয় ২০ থেকে ২৫ হাজার রিঙ্গিত। গত ৮ ফেব্রুয়ারি মন্ত্রীসভা বৈঠকে এ বিষয়ে তীব্র অসন্তোষ প্রকাশ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘এমনটা আর হতে পারে না। এটা আধুনিক দাসত্বের পর্যায়ে পড়ে। এটি বন্ধ করতে হবে।’ দেশটির শ্রমবাজারে এমন বড় ধরনের পরিবর্তনে আসার আলো দেখছেন অভিবাসন বিশেষজ্ঞরা।
মালেয়শিয়ার প্রধানমন্ত্রী এ বিষয়ে তীব্র অসন্তোষ প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, ‘এমনটা আর হতে পারে না। এটা আধুনিক দাসত্বের পর্যায়ে পড়ে। এটি বন্ধ করতে হবে।’ ফ্রি মালয়েশিয়া টুডে বলেছে, মালয়েশিয়ায় কাজ করতে চাওয়া বিদেশি কর্মীদের জন্য দ্বিগুণ-তিনগুণ খরচের জন্য রিক্রুটিং এজেন্টদের দায় রয়েছে। ইচ্ছেমাফিক ফি আদায়ের কারণে বিদেশি কর্মীদের মালয়েশিয়া আসতে প্রায়ই উচ্চ সুদে ঋণ নিতে হয়। এমনকি এজেন্টদের মাধ্যমে নিয়োগের ফি প্রদানের জন্য তাদের জমিও বন্ধক রাখতে বাধ্য করা হয়।
তবে এ নিয়ে আনোয়ার ইবরাহিমের সরকার এবার কঠোরই হতে যাচ্ছে। এরইমধ্যে তার প্রমাণ পাওয়া গেছে কয়েকটি ঘটনায়। বেশ কয়েকটি স্থানীয় দস্তানা প্রস্তুতকারক কোম্পানি তাদের বর্তমান এবং প্রাক্তন বিদেশি কর্মীদের কাছ থেকে নেয়া অতিরিক্ত নিয়োগ ফি ফেরত দিয়েছে।
এর আগে মালয় সরকারের কঠোর মনোভাবের কথা জানিয়েছিলেন তৎকালীন মানবসম্পদ মন্ত্রী এম সারাভানান। গত বছরের ফেব্রুয়ারিতে তিনি নিয়োগকর্তাদের তৃতীয়পক্ষ তথা এজেন্টের মাধ্যমে বিদেশি কর্মী নিয়োগ না দিয়ে সরাসরি মানবসম্পদ মন্ত্রণালয়ে আবেদন করতে বলেছিলেন।
২০২৮ সালে সারাভানানের পূর্বসূরি এম কুলাসেগারনও মানবসম্পদ মন্ত্রণালয় নিয়োগকারী এজেন্টদের ভূমিকা পর্যালোচনা করা হবে বলে জানিয়েছিলেন। মালয়েশিয়ায় বিদেশি কর্মী নিয়োগের জন্য ওয়ান স্টপ সেন্টার (ওএসসি) গত ডিসেম্বর থেকে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অধীনে নিয়ে আসা হয়েছে। আনোয়ার ইবরাহিমের আগের সরকার ওএসসিকে মানবসম্পদ মন্ত্রণালয়ের অধীনে নিয়েছিল। মাত্র ছয় মাস পরই বর্তমান সরকার তা আবার আগের মতো স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অধীনে নিয়ে আসে।
https://www.youtube.com/watch?v=CLkjCco1oa0&t=83s
প্রবাস টাইমে লিখুন আপনিও। প্রবাসে বাংলাদেশি কমিউনিটির নানা আয়োজন, ঘটনা-দুর্ঘটনা, প্রবাসীদের সুযোগ-সুবিধা, সমস্যা-সম্ভাবনা, সাফল্য, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের খবর, ছবি ও ভিডিও আমাদের পাঠাতে পারেন [email protected] মেইলে।
Discussion about this post