শুধুমাত্র পরিবার প্রিয়জনকে একটু ভালো রাখার জন্য বিদেশে পাড়ি জমান অনেকেই। দেশে কর্মসংস্থান না হওয়ায় উজ্জ্বল ভবিষ্যতের আশায় বিদেশ যেয়ে কেউ লাশ হয়ে ফিরতে চান না। অথচ ভাগ্যের নির্মমতায় মাঝ পথেই থমকে যায় অনেকের জীবন। সরকারি হিসাবে গত ৩০ বছরে বিদেশে ৪৬ হাজার ৫০৩ কর্মীর মৃত্যু হয়েছে। ২০২২ সালের ৩০ নভেম্বর পর্যন্ত ৩ হাজার ২২২ জনের লাশ এসেছে। এর মধ্যে ২ হাজার ৪২২ জনের বয়স ১৯ থেকে ৪০ বছরের মধ্যে। প্রবাসে অস্বাভাবিক মৃত্যুর শিকার এসব শ্রমিকের বেশিরভাগই বয়সে তরুণ। ওমান সহ মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশে খোঁজ নিয়ে জানাগেছে, সাম্প্রতিক সময়ে প্রবাসে মারা যাওয়ার অধিকাংশই সড়ক দুর্ঘটনার শিকার। এছাড়াও প্রতিকূল পরিবেশ, অমানুষিক পরিশ্রম, অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে বসবাসের কারণেও অনেকের মৃত্যু হচ্ছে।
দেশের অর্থনীতিকে পুষ্ট করা এই প্রবাসীদের মৃত্যুর কারণ অনুসন্ধানে তেমন পদক্ষেপ দেখা যায়না। একজন কর্মী বাংলাদেশ থেকে আন্তর্জাতিক মানদণ্ডের স্বাস্থ্য পরীক্ষায় সুস্থ, সবল ও নীরোগ প্রমাণিত হয়েই বিদেশ যান। অথচ এমন তরতাজা মানুষই অকালে মারা যাচ্ছেন বিদেশে। দেশের অর্থনীতি সচল রাখা রেমিট্যান্স যোদ্ধাদের এমন মৃততে অভিবাসন বিশেষজ্ঞদের প্রশ্ন রয়েছে অনেক। প্রবাসীদের অস্বাভাবিক মৃত্যু তদন্তে সরকারের তরফ থেকেও কোনো উদ্যোগ নেই। বছরের পর বছর অস্বাভাবিক মৃত্যু বাড়তে থাকলেও তা প্রতিরোধে সক্রিয় হচ্ছে না সরকার। দেশের অর্থনীতি সচল রাখা রেমিট্যান্সের কথা ভেবে হলেও প্রবাসীদের আরও গুরুত্ব দেওয়া উচিত সরকারের এমন বক্তব্য অভিবাসন বিশেষজ্ঞদের। দায়সারাভাবে তাঁদের পরিবারকে মৃত্যুর কারণ বলে দেওয়াটা খুব অসম্মানজনক। মৃত্যুর কারণ এবং ক্ষতিপূরণ আদায়ে সরকারের আরো উদ্যোগী হওয়া উচিত বলে মনে করেন তারা।
অপরদিকে প্রবাসীরা বলছেন, অনেক প্রবাসী রাস্তা দিয়ে চলার সময় কানে হেডফোন দিয়ে রাখেন, আবার কেউ কেউ মোবাইলে গেইম খেলা অবস্থায় রাস্তা পারাপার হন। এভাবে অসচেতনতার কারণে বিদেশের মাটিতে অকালেই ঝরে যাচ্ছে অনেক তাজা প্রাণ। এর মধ্যে ট্র্যাফিক আইন না মানা এবং মোবাইল ব্যবহারকে দায়ী করছেন অনেকেই। আর তাই রাস্তায় চলাচলে আরো সাবধানতা অবলম্বনের পরামর্শ বিশেষজ্ঞদের।
প্রবাস টাইমে লিখুন আপনিও। প্রবাসে বাংলাদেশি কমিউনিটির নানা আয়োজন, ঘটনা-দুর্ঘটনা, প্রবাসীদের সুযোগ-সুবিধা, সমস্যা-সম্ভাবনা, সাফল্য, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের খবর, ছবি ও ভিডিও আমাদের পাঠাতে পারেন [email protected] মেইলে।
Discussion about this post