গত পাঁচ দশক ধরে ফিলিস্তিনের বেশ কয়েকটি অঞ্চল দখল করে রেখেছে ইসরায়েল। এর ফলে ইসরায়েলকে কী ধরনের শাস্তির মুখোমুখি হবে, সে বিষয়ে আন্তর্জাতিক ন্যায়বিচার আদালতের (আইজিসে) মতামত জানতে জাতিসংঘে একটি প্রস্তাব উত্থাপন করা হয়েছে। প্রস্তাবটির পক্ষে যায় ৮৭ ভোট, বিপক্ষে ২৬ এবং ভোট দেয়া থেকে বিরত থাকে ৫৩টি দেশ।
জাতিসংঘের প্রস্তাবে কীভাবে এই ইসরাইলের এসব নীতি এবং এর অনুশীলন কীভাবে দখলদারত্বের আইনি অবস্থাকে প্রভাবিত করে এবং এর পরিপ্রেক্ষিতে কী ধরনের আইনি পরিস্থিতি তৈরি হতে পারে সে বিষয়েও খতিয়ে দেখে পরামর্শ দিতে অনুরোধ করা হয়েছে। এর আগে, বিশ্ব আদালত ইসরায়েল এবং ফিলিস্তিনের মধ্যে পরিস্থিতি নিয়ে সবশেষ রুল জারি করেছিল ২০০৪ সালে। সে সময় সীমান্তে ইসরাইলি কাঁটাতারের বেড়াকে অবৈধ বলে রায় ঘোষণা করেছিল বিশ্ব আদালত। তবে ইসরাইল সেই রায় প্রত্যাখ্যান করেছিল।
বিশ্ব আদালত রাষ্ট্রসমূহের বিবাদের ক্ষেত্রে রায় দিতে পারে। রাষ্ট্রসমূহ সেসব রায় মানকে বাধ্যও। তবে বিশ্ব আদালতের নিজস্ব কোনো শক্তি নেই এসব রায় বাস্তবায়নের। এর আগে, ১৯৬৭ সালের আরব ইসরাইল যুদ্ধের পর ইসরাইল ফিলিস্তিনের পশ্চিম তীর, গাজা এবং পূর্ব জেরুজালেম দখল করে নেয়। পরে ২০০৫ সালে গাজা থেকে দখল তুলে নিলেও গাজা উপত্যকাকে চারদিক থেকে বেষ্টন করে রাখে।
এদিকে, জাতিসংঘের নিযুক্ত ইসরাইলি রাষ্ট্রদূত গিলাদ এরদান জাতিসংঘের এমন উদ্যোগের পর এক বিবৃতিতে বলেছেন, ‘কোনো আন্তর্জাতিক কর্তৃপক্ষই নির্ধারণ করে দিতে পারে না যে, ইহুদি জনগণ নিজেদের ভূখণ্ডে দখলদার। তাই নৈতিকভাবে দেউলিয়া এবং রাজনৈতিকভাবে দখল হয়ে যাওয়া জাতিসংঘের বিচারিক প্রতিষ্ঠান থেকে আসা যেকোনো রায়ই অবৈধ।’
ফিলিস্তিনের পক্ষে ভোট দেওয়া যে ৮৭টি দেশ হলো- বাংলাদেশ, আলজেরিয়া, অ্যাঙ্গোলা, আর্জেন্টিনা, আর্মেনিয়া, আজারবাইজান, বাহামাস, বাহরাইন, বার্বাডোস, বেলজিয়াম, বেলিজ, বলিভিয়া, বসতওয়ানা, ব্রুনাই দারুসালাম, কম্বোডিয়া, চিলি, চীন, কলম্বিয়া, কিউবা, উত্তর কোরিয়া, জিবোতি, মিসর, এল সালভাদর, গ্যাবন, গ্রেনাডা, গিনি, গিনি-বিসাউ, গায়ানা, ইন্দোনেশিয়া, ইরান, ইরাক, আয়ারল্যান্ড, জ্যামাইকা, জর্ডান, কাজাখস্তান, কুয়েত, কিরগিজস্তান, লাউস, লেবানন, লেসোতো, লিবিয়া, লুক্সেমবার্গ, মালয়েশিয়া, মালদ্বীপ, মালি, মাল্টা, মরিশানিয়া, মরিশাস, মেক্সিকো, মঙ্গোলিয়া, মরক্কো, মোজাম্বিক, নামিবিয়া, নিকারুগুয়া, নাইজেরিয়া, ওমান, পাকিস্তান, প্যারাগুয়ে, পেরু, পোল্যান্ড, পর্তুগাল, কাতার, রাশিয়া, সেন্ট কিটস-নেভিস, সেন্ট লুসিয়া, সেন্ট ভিনসেন্ট, সৌদি আরব, সেনেগাল, সিয়েরা লিয়ন, সিঙ্গাপুর, স্লোভেনিয়া, সোমালিয়া, দক্ষিণ আফ্রিকা, শ্রীলঙ্কা, সুদান, সিরিয়া, তাজিকিস্তান, ত্রিনিদাদ এন্ড টোবাগো, তিউনিসিয়া, তুর্কি, তুর্কমেনিস্তান, উগান্ডা, সংযুক্ত আরব আমিরাত, ভিয়েতনাম, ইয়েমেন, জাম্বিয়া এবং জিম্বাবুয়ে।
এদিকে ২৬টি দেশ প্রস্তাবের বিপক্ষে ভোট দিয়েছে। দেশগুলো হলো- যুক্তরাষ্ট্র, আলবেনিয়া, অস্ট্রেলিয়া, অস্ট্রিয়া, কানাডা, কোস্টারিকা, চেক রিপাবলিক, এস্তোনিয়া, জার্মানি, হাঙ্গেরি, গুয়েতেমালা, ইসরায়েল, ইতালি, কেনিয়া, লাইবেরিয়া, লিথুয়ানিয়া, মার্শাল দ্বীপপুঞ্জ, মাইক্রোওশেনিয়া, নাউরু, পালাউ, পাপুয়া নিউ গিনি, রোমানিয়া, যুক্তরাজ্য।
এ ছাড়া ৫৩টি দেশ ভোটদানে বিরত ছিল। দেশগুলো হলো- অ্যানডোরা, বেলারুশ, বসনিয়া, বুলগেরিয়া, বুরুন্ডি, ক্যামেরুন, আইভরি কোস্ট, সাইপ্রাস, ডেনমার্ক, ডমিনিকান রিপাবলিক, ইকুয়েডর, ইরিত্রি, ইথিওপিয়া, ফিজি, ফিনল্যান্ড, ফ্রান্স, জর্জিয়া, ঘানা, গ্রিস, হাইতি, হন্ডুরাস, আইসল্যান্ড, ভারত, জাপান, কিরিবাতি, লাটভিয়া, লিশচেনস্তেন, মালাই, মোনাকো, মন্তেনেগ্রো, মিয়ানমার, নেদারল্যান্ডস, নিউজিল্যান্ড, নরওয়ে, পানামা, ফিলিপাইন, দক্ষিণ কোরিয়া, মলদোভা, রুয়ান্ডা, সামোয়া, সান মারিনো, সার্বিয়া, স্লোভাকিয়া, সলোমন দ্বীপপুঞ্জ, দক্ষিণ সুদান, স্পেন, সুইডেন, সুইজারল্যান্ডস, থাইল্যান্ড, তানজানিয়া, উরুগুয়ে এবং ভানুয়াতু।
প্রবাস টাইমে লিখুন আপনিও। প্রবাসে বাংলাদেশি কমিউনিটির নানা আয়োজন, ঘটনা-দুর্ঘটনা, প্রবাসীদের সুযোগ-সুবিধা, সমস্যা-সম্ভাবনা, সাফল্য, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের খবর, ছবি ও ভিডিও আমাদের পাঠাতে পারেন [email protected] মেইলে।
Discussion about this post