আরব বিশ্বে প্রথমবারের মত অনুষ্ঠিত হচ্ছে এবারের ফিফা বিশ্বকাপ। দুনিয়ার সবচেয়ে বড় এই আসর নিয়ে পশ্চিমাদের একের পর এক অভিযোগ লেগেই আছে। এবারের খেলায় মদপান নিষিদ্ধ, শ্রমিক মৃত্যু, মানবাধিকার লঙ্ঘনের মতো বিভিন্ন বিষয় নিয়ে বেশি আলোচনা হচ্ছে। বিশেষ করে পশ্চিমা দেশগুলো বিশ্বকাপের আয়োজক মধ্যপ্রাচ্যের দেশ কাতারের সমালোচনায় মুখর হয়েছে। ২০১০ সালে কাতারকে বিশ্বকাপ আয়োজক ঘোষণার পর থেকেই এই সমালোচনা চলছে।
পশ্চিমাদের এমন সমালোচনাকে ভালোভাবে নেননি বিশ্ব ফুটবলের নিয়ন্ত্রক সংস্থা ফিফার প্রেসিডেন্ট জিয়ান্নি ইনফান্তিনো। বিশ্বকাপ শুরুর একদিন আগে শনিবার (১৯ নভেম্বর) কাতারের রাজধানী দোহায় এক সংবাদ সম্মেলনে পশ্চিমারা ‘ভন্ডামি’ করছেন বলে অভিযোগ করেছেন তিনি।
নিজে একজন পশ্চিমা দেশের নাগরিক হলেও সত্য প্রকাশে একদমই দ্বিধা করেননি তিনি। ইউরোপের দেশ সুইজারল্যান্ডে জন্ম নেওয়া ইনফান্তিনো বলেছেন, ‘কাতারের অভিবাসী শ্রমিকদের দিকে না তাকিয়ে, পশ্চিমারা অতীত ইতিহাসে যা করেছে সে জন্য তাদের ক্ষমা চাওয়া উচিত।’
ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ান ২০২১ সালে এক প্রতিবেদনে জানিয়েছিল, বিশ্বকাপ উপলক্ষ্যে কাতারে স্টেডিয়াম বানাতে আসা বাংলাদেশ, ভারত, পাকিস্তান, শ্রীলঙ্কা এবং নেপালের ৬ হাজার ৫০০ অভিবাসী শ্রমিক মারা যান। যদিও কাতার সরকার বলেছিল, তথ্যটি পুরোপুরি সঠিক নয়। কারণ যারা মারা গেছেন তারা সবাই স্টেডিয়াম নির্মাণের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ছিলেন না।
পশ্চিমাদের সমালোচনা করে ফিফা প্রেসিডেন্ট বলেন, ‘আমাদের পশ্চিমা ও ইউরোপের দেশগুলো অনেক কিছু শিখিয়েছে। আমি ইউরোপীয়। কিন্তু গত ৩ হাজার বছর ধরে বিশ্বব্যাপী আমরা (ইউরোপীয়রা) যা করছি, কাউকে নীতি কথা বলার আগে আমাদের পরবর্তী ৩ হাজার বছর ক্ষমা চাওয়া উচিত।’
তিনি আরও বলেন, ‘যদি ইউরোপ সত্যিই এসব মানুষদের নিয়ে ভাবে, তারা বৈধ চ্যানেল তৈরি করতে পারে, যেমনটি কাতার করেছে— যার মাধ্যমে কয়েক হাজার মানুষ ইউরোপে কাজ করতে আসতে পারে।’ ফিফা বস আরও বলেন, ‘একপক্ষীয় নৈতিক শিক্ষা শুধুমাত্র ভন্ডামি। কাতার ২০১৬ সাল থেকে যেভাবে পরিবর্তিত হয়েছে সেটিকে কেন কেউ স্বীকৃতি দিচ্ছে না। আমাকে কাতারের পক্ষে কথা বলতে হবে না। কাতার নিজেই নিজেকে রক্ষা করতে পারে।’
বিশ্ব ফুটবলের নিয়ন্ত্রক সংস্থার এই প্রধান বলেন, কাতার বিশ্বকাপ হবে ফুটবলের সবচেয়ে আকর্ষণীয় বিশ্বকাপ। এছাড়া বিশ্বকাপে ফুটবল স্টেডিয়ামে অ্যালকোহল নিষিদ্ধের বিষয়টি নিয়েও কথা বলেছেন ফিফা প্রেসিডেন্ট। তিনি বলেছেন, ‘অ্যালকোহল নিষিদ্ধের সিদ্ধান্ত কাতার এবং ফিফা যৌথভাবে নিয়েছে।’
অ্যালকোহল নিষিদ্ধ নিয়ে যারা বেশি বেশি করছেন তাদেরও তীব্র সমালোচনা করেছেন ইনফান্তিনো। তিনি বলেছেন, ‘অ্যালকোহল নিষিদ্ধের বিষয়টি যদি বিশ্বকাপের জন্য অনেক বড় ইস্যু হয়, তাহলে আমি এখনই পদত্যাগ করব এবং সমুদ্র পাড়ে গিয়ে আরাম করব।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমি সবাইকে জানাতে চাই সব সিদ্ধান্ত কাতার ও ফিফা যৌথভাবে নিয়েছে। বিশ্বকাপে অনেকগুলো ফ্যান জোন থাকবে যেখানে অ্যালকোহল পাওয়া যাবে এবং সেখানে বিয়ার পান করা যাবে। আমি মনে করি দিনে মাত্র তিন ঘণ্টা (ম্যাচের সময়) বিয়ার পান না করলে আপনারা বেঁচে থাকতে পারবেন।’
আরো পড়ুন:
ওমানের জাতীয় দিবসের বাকি ২ দিন, উদযাপনে
ওমানে বিশ্বকাপের ছোঁয়া, মাস্কাটে পৌঁছেছে জার্মান
কাতার বিশ্বকাপে সেবা দিবে ৮ হাজার বাংলাদেশি
প্রবাসী কর্মীকে চাকরীচ্যুত করায় পৌনে দুই লাখ
ওমানের আল খয়েরে পুলিশের কঠোর অভিযান
প্রবাস টাইমে লিখুন আপনিও। প্রবাসে বাংলাদেশি কমিউনিটির নানা আয়োজন, ঘটনা-দুর্ঘটনা, প্রবাসীদের সুযোগ-সুবিধা, সমস্যা-সম্ভাবনা, সাফল্য, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের খবর, ছবি ও ভিডিও আমাদের পাঠাতে পারেন [email protected] মেইলে।
Discussion about this post