প্রবাসী রেমিট্যান্স যোদ্ধা, যাদের পাঠানো অর্থে দেশের অর্থনীতির চাকা ঘুরে, সেই রেমিট্যান্স যোদ্ধাদের পদে পদে ভোগান্তি আর হয়রানি। দালাল আর সিন্ডিকেট যেন এ সেক্টরের সাথে অঙ্গাঙ্গী জড়িত। পাসপোর্ট থেকে শুরু করে ভিসা ও মেডিক্যাল সব জাগাতেই দালালের কবলে পড়তে হয় প্রবাসীদের। সম্প্রতি বাংলাদেশ থেকে লিবিয়া শ্রমিক পাঠানোর ক্ষেত্রে এইসব দালাল সিন্ডিকেটের কারণে স্ট্যাম্পিং ভিসা প্রদানে অস্বীকৃতি জানিয়েছে ঢাকার লিবিয়া দূতাবাস। ফলে দেশটিতে কর্মী প্রেরণ প্রায় স্থগিত হয়ে পড়েছে এমন অভিযোগ জনশক্তি ব্যবসায়ীদের একমাত্র সংগঠন বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব ইন্টারন্যাশনাল রিক্রুটিং এজেন্সির (বায়রা)।
এ ব্যাপারে গত মাসে প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রী ইমরান আহমদের কাছে একটি লিখিত অভিযোগ দেয় বায়রা। অভিযোগ দেয়ার প্রায় এক মাস অতিবাহিত হওয়ার পরও মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে এ নিয়ে কার্যকর কোনো পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে কি না সে ব্যাপারে গতরাতে সংশ্লিষ্ট কারো বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
মন্ত্রীর কাছে দেয়া লিখিত অভিযোগে আরো বলা হয়, বিএমইটির তথ্য মোতাবেক দেশে বৈধ রিক্রুটিং এজেন্সির সংখ্যা ১৬৮৫টি। কিন্তু একটি দুষ্টচক্র লিবিয়ায় জনশক্তি প্রেরণের ক্ষেত্রে কিছু (১৫) এজেন্সি নিয়ে সিন্ডিকেট গঠনের প্রচেষ্টা চালাচ্ছে। ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারি মাস থেকে বাংলাদেশী কর্মীদের ক্ষেত্রে লিবিয়া সরকার অসাধারণ উদারতার ভিসা এপ্রুভাল করছে। এর ধারাবাহিকতায় সে দেশের লেবার মিনিস্ট্রি অ্যান্ড ইমিগ্রেশন ডিপার্টমেন্ট যথেষ্ট সহযোগিতা করে যাচ্ছে বলে বায়রা সভাপতি মন্ত্রীকে দেয়া চিঠিতে উল্লেখ করেন।
বায়রার দাবী, লিবিয়া সরকারের সার্বিক সহযোগিতার ফলে ত্রিপলির বাংলাদেশ দূতাবাস বিভিন্ন রিক্রুটিং এজেন্সির অনুকূলে নিয়োগকর্তা কর্তৃক ডিমান্ড লেটার, পাওয়ার অব অ্যাটর্নি, এমপ্লয়মেন্ট কন্ট্রাক্ট ও প্রয়োজনীয় কাগজপত্র সত্যায়ন করছে। কিন্তু পরিতাপের বিষয় হচ্ছে বাংলাদেশে একটি সিন্ডিকেটর বেআইনি কর্মকাণ্ড ও হস্তক্ষেপের কারণে সবকিছু ভেস্তে যেতে বসেছে।
সিন্ডিকেট সদস্যদের মাধ্যমে দূতাবাসে কর্মীদের পাসপোর্ট জমা করার বিধান করায় তাদের সাথে যোগাযোগ করলে প্রতিটি পাসপোর্টের বিপরীতে দেড় থেকে দুই লাখ টাকা দাবি করে বলছে, অন্যথায় স্ট্যাম্পিং ভিসা দেয়া হবে না। ফলে এই মুহূর্তে বিভিন্ন এজেন্সির শত শত লিবিয়াগামী কর্মীর স্ট্যাম্পিং ভিসা আটকে থাকায় লিবিয়া গমনে অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে। এর সাথে জড়িতদের আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন বায়রা সভাপতি আবুল বাশার। পাশাপাশি লিবিয়ার শ্রমবাজারে সব বৈধ রিক্রুটিং এজেন্সি যাতে সরকারি নিয়ম মেনে সিন্ডিকেটমুক্ত পরিবেশে নির্বিঘ্নে কর্মী প্রেরণ করতে পারে সে ব্যাপারে মন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করা হয়েছে।
আরো পড়ুন:
সম্পদের লোভে নিজের মা’কে মারলেন ওমান প্রবাসী
ওমানে নিখোঁজ ব্যক্তির সন্ধানে ৫ হাজার রিয়াল পুরষ্কার ঘোষণা
ওমানের ইবরিতে গাড়ি দুর্ঘটনায় এক বাংলাদেশি প্রবাসী নিহত
বিমানের ৫ কর্মকর্তাকে গ্রেপ্তার
দালালদের খপ্পরে পড়ে অপহরণের শিকার বাংলাদেশিরা
প্রবাস টাইমে লিখুন আপনিও। প্রবাসে বাংলাদেশি কমিউনিটির নানা আয়োজন, ঘটনা-দুর্ঘটনা, প্রবাসীদের সুযোগ-সুবিধা, সমস্যা-সম্ভাবনা, সাফল্য, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের খবর, ছবি ও ভিডিও আমাদের পাঠাতে পারেন [email protected] মেইলে।
Discussion about this post