পার্বত্য চট্টগ্রাম নিয়ে যেনো কমছে না ষড়যন্ত্র। জেএসএস, ইউপিডেএফ, এমএলএ, ত্রিপুরা ন্যশনাল ফ্রন্ট ইত্যাদি উপজাতীr পর, এবার মাথা চারা দিয়ে উঠেছে কুকি-চীন ন্যাশনাল ফ্রন্ট নামের আরেকটি বাহিনী। এরা চায় বাংলাদেশের একটা অংশ, ভাঙতে চায় স্বাধীন বাংলার ভূখণ্ড। কুকি-চিন, মিজো এরা হচ্ছে সাইনোভিটান উপজাতি গুর্ত। অরুনাচল বাদে সেভেন সিস্টার্সে ওরা বাস করে। ভারত ছাড়াও বড় একটি আবাস স্থল হলো বার্মিজ চীন প্রদেশের পাহাড়ী অঞ্চল। পার্বত্য জেলার সর্বোত্তরে এবং বান্দরবন জেলায় তাদের আবাস রয়েছে।
২০০৮ সালে কুকি চীন ন্যাশনাল ডেভলপমেন্ট অর্গানাইজেশন বা কেএনডিও নামে এরা যাত্রা শুরু করে। সংগঠনের প্রধান নাথান বং পড়াশোনা করেছে ঢাকা ইউনিভার্সিটিতে, কুকি-চিনভুক্ত জাতিগোষ্ঠীর পরিচিতি নিয়ে ‘দ্য বমজৌ’ বইসহ তার ছয়টি বই প্রকাশিত হয়। এ কারণে নাথান বম লেখক হিসেবে অনেকের কাছে পরিচিত। বং, পাংখুয়া, লুছাই, খুমি, ম্রো এবং খিং উপজাতিদের নিয়ে এ সংগঠন তৈরি হয়। পরে ২০১৬ সালে সংগঠনটির নাম পরিবর্তন করে রাখা হয় কু-চি চীন ন্যাশনাল ফ্রন্ট বা কেএনএফ। এদের সশস্ত্র বাহিনীর নাম কু-চি চীন ন্যাশনাল আর্মি অর্থাৎ কেএনএ। প্রথমে নাম ছিলো কু-কি চীন ন্যাশনাল ভলেনন্টিয়ার্স বা কেএনভি।
সম্প্রতি পার্বত্য চট্টগ্রামকে বিচ্ছিন্ন করে আলাদা রাজ্য গঠনের পায়তারা করছে এ সামরিক সংগঠনটি। প্রকাশ করেছি নিজস্ব পতাকা, মনগড়া মানচিত্র ও জাতীয় সঙ্গীত। সদস্যদের দেয়া হচ্ছে কঠোর কমান্ডো প্রশিক্ষণ। বান্দরবনের দুর্গম পাহাড়ি এলাকায় কু-কি চীন ন্যাশনাল ফ্রন্টের বিভিন্ন তৎপরতা ভিডিও তাদের ইউটিউব চ্যানেলে নিয়মিত আপলোড করা হয়। ভিডিও তে দেখা যায় কখনো তারা, ভারি অস্ত্র,ভারি রসৎপত্র নিয়ে সুউচ্চ পাহাড়ে উঠছে, কখনো জীবিত সাপ,বিচ্ছু, পোকামাকড় খাচ্ছে, আবার কখনোবা উচ্চস্বরে গাইছে নিজেদের জাতীয় সঙ্গীত।
কু-কি চিন ন্যাশনাল ফ্রন্ট বাহিনী সদস্যরা তাদের পোশাক, সামরিক অস্ত্রসহ যাবতীয় রসৎপত্র মিয়ানমার থেকে সংগ্রহ করা হয় বলে জানা যায়। বান্দরবন সীমান্তের ওপারে চীন নামের মিয়ানমারের যে রাজ্য রয়েছে সেখানেই তাদের মুল ঘাটি রয়েছে। যারা মিয়ানমার থেকে আলাদা হয়ে চীন রাজ্য প্রতিষ্ঠা করতে চায়। পাহাড়ি বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠন কুকি আর্মি বা কেএনএফ-এর বিষয়ে গত ১৬ অক্টোবর দেশের এক দৈনিক পত্রিকায় ‘ভূখণ্ড বিচ্ছিন্নে কুকিদের নীলনকশা’ শিরোনামে একটি অনুসন্ধানী প্রতিবেদন প্রকাশ করার পর পার্বত্য চট্টগ্রাম জুড়ে চলমান সন্ত্রাসী ও জঙ্গি কার্যক্রমের বিরুদ্ধে বিশেষ অভিযানে নামে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।
ঢাকা, কুমিল্লা ও সিলেটসহ দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে জঙ্গিবাদের জড়িয়ে নিরুদ্দেশ হওয়া তরুণরা এই কেএনএফ আস্তানায় অস্ত্র প্রশিক্ষণ নিচ্ছিল বলে সেখানে অভিযান শুরু করা হয়। তার মাঝেই কুকিদের তথা কেএনএফের ভূখণ্ড বিচ্ছিন্ন করার অপচেষ্টার তথ্যচিত্র প্রমাণসহ প্রকাশ করে দৈনিক পত্রিকার প্রতিবেদনে। এরপর আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী আরও নড়েচড়ে বসে। নতুন জঙ্গি সংগঠন ‘জামাতুল আনসার ফিল হিন্দাল শারক্বিয়ার’ ৭ জন এবং পাহাড়ি বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠনের (কেএনএফ) ৩ জনসহ মোট ১০ জনকে গ্রেফতার করেছে র্যাব। অভিযানে বিপুল পরিমাণে অস্ত্র ও গোলাবারুদ উদ্ধার করা হয়।
আরো পড়ুন:
সম্পদের লোভে নিজের মা’কে মারলেন ওমান প্রবাসী
ওমানে নিখোঁজ ব্যক্তির সন্ধানে ৫ হাজার রিয়াল পুরষ্কার ঘোষণা
ওমানের ইবরিতে গাড়ি দুর্ঘটনায় এক বাংলাদেশি প্রবাসী নিহত
বিমানের ৫ কর্মকর্তাকে গ্রেপ্তার
দালালদের খপ্পরে পড়ে অপহরণের শিকার বাংলাদেশিরা
প্রবাস টাইমে লিখুন আপনিও। প্রবাসে বাংলাদেশি কমিউনিটির নানা আয়োজন, ঘটনা-দুর্ঘটনা, প্রবাসীদের সুযোগ-সুবিধা, সমস্যা-সম্ভাবনা, সাফল্য, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের খবর, ছবি ও ভিডিও আমাদের পাঠাতে পারেন [email protected] মেইলে।
Discussion about this post