মহামারী করোনায় দীর্ঘদিন দেশে আটকে পড়া প্রবাসীদের নিজ নিজ কর্মস্থল দেশে ফেরা শুরু করেছে। ইতিমধ্যেই ২৮৭ জন প্রবাসী বাংলাদেশি ইতালি ফিরেছেন। শুক্রবার (১২ জুন) বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের একটি বিশেষ চার্টার্ড ফ্লাইটে এ সকল প্রবাসী বাংলাদেশি ঢাকা হতে রোম ইন্টারন্যাশনাল ফিমিউসিনো এয়ারপোর্টে এসে পৌঁছান।
এর আগে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের চার্টার্ড বিমান শুক্রবার দুপুর সোয়া ১২টায় ২৮৭ জন ইতালি প্রবাসীকে নিয়ে ঢাকা ছেড়ে ৯ ঘণ্টা ৪৫ মিনিট টানা উড়ে ইতালি সময় বিকাল ৫টা ৩০ মিনিটে রাজধানী রোম পৌঁছে। ভেনিস প্রদেশের ভিসেন্চা প্রভেন্সির বাসিন্দা রফিকুল ইসলাম মান্না সর্দারের ব্যক্তিগত ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় প্রথমে, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও শেষের দিকে বাংলাদেশ অ্যাম্বাসি রোম এর সহযোগিতায় এসব প্রবাসী বাংলাদেশিরা ইতালি ফেরত আসেতে সক্ষম হন।
বিমানটি ইতালি পৌছার সাথে সাথে বাংলাদেশ দূতাবাসের রাষ্ট্রদূত আবদুস সোবহান সিকদার ও প্রবাসী কয়েকজন কমিউনিটি নেতৃবর্গ আগত প্রবাসীদের স্বাগত জানান এবং তাদের খোঁজ খবর নেন ও কুশল বিনিময় করেন। প্রবাসীদের অনুভূতি জানতে চাইলে তারা বলেন, বিশেষ এই ফ্লাইটের উদ্যোক্তাদের নিরলস প্রচেষ্টায় আমরা ২৮৭ জন ইতালিতে ফিরতে পেরেছি। এটি সত্যিই আনন্দের। যারা এই উদ্যোগ নিয়েছেন তাদের সকলের প্রতি ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানান তারা।
কমিউনিটি ব্যক্তিরা বলেন, করোনা পরিস্থিতিতে গত কয়েক মাস ধরে কয়েক হাজার ইতালি প্রবাসী বাংলাদেশি আটকে পড়েন বাংলাদেশে। এদের মধ্যে কারো স্টে পারমিট মেয়াদোত্তীর্ণ হয়ে গেছে, কারো আবার পরিবার ইতালিতে; তাদের ফিরিয়ে আনতে কমিউনিটি নেতাদের সহযোগিতায় বাংলাদেশ বিমানের পরিচালকের সাথে কথা বললে তিনি রাজি হন। পরে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও বাংলাদেশ দূতাবাস ইতালির সহযোগিতায় ও ইতালি সরকারের অনুমতিক্রমে চার্টার্ড ফ্লাইটে রোমে ফিরলেন ২৮৭ জন ইতালি প্রবাসী বাংলাদেশি।
এ প্রসঙ্গে রাষ্ট্রদূত আবদুস সোবহান সিকদার সকল আগত প্রবাসীদের স্বাগত জানিয়ে বলেন, ইতালি সরকারের যত নিয়ম সেগুলো সঠিকভাবে পালন করার জন্য সকলকে তিনি অনুরোধ করেন। এবং এই বিশেষ ফ্লাইটের জন্য বাংলাদেশ সরকার, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ বিমানসহ সকলকে ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানান। তাছাড়া যারা আসতে পারেন নাই, তারা আগামী ১৭ জুন আবারো বিশেষ ২য় ফ্লাইট করে আসবেন বলে আশ্বস্ত করেন।
এখন ইতালি সরকারের আইন মেনে আগত সকল যাত্রীদের ১৪ দিন বাধ্যতামূলক কোয়ারেন্টাইনে থাকতে হবে। উল্লেখ্য যে কোভিড ১৯ এর জন্যে ইউরোপের বিভিন্ন দেশ হতে বাংলাদেশে গিয়ে আটকে পরেছেন প্রায় ৩৬ হাজার বাংলাদেশী ইউরোপ প্রবাসী। যার মধ্যে প্রায় ১৫ হাজারের মতো ইতালি প্রবাসী।
আরও পড়ুনঃ ওমানে পুনরায় লকডাউন, ট্রাক চালকদের নতুন নির্দেশনা
এদিকে মধ্যপ্রাচ্য থেকে বহু বাংলাদেশী ব্যবসায়ী দেশে এসে আটকা পড়েছেন। দীর্ঘদিন দেশে থাকার কারণে ইতিমধ্যেই তাদের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান চরম হুমকির মুখে রয়েছে বলে আমাদের জানিয়েছেন। ওমান প্রবাসী ব্যবসায়ী হাজী সলিমুল্লাহ প্রবাস টাইমকে বলেন, “ওমানে আমার কোম্পানিতে শতাধিক শ্রমিক কাজ করে, দীর্ঘদিন আমি দেশে আটকে থাকাতে তাদের বেতন ঠিক মতো দিতে পারছিনা। দেশে থেকে ব্যবসা পরিচালনা করা অনেক কঠিন হয়ে পড়ছে। এমতাবস্থায় ওমানে না ফিরতে পারলে, ব্যবসা টিকিয়ে রাখা অনেক কষ্টকর হয়ে যাবে।” হাজী সলিমুল্লাহ’র মতো অনেক প্রবাসী ব্যবসায়ী দেশে এসে আটকা পরেছেন। তাদের দাবী পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে তাদেরকে ফেরত পাঠানো হউক, এতে তারা সরকারের যেকোনো নিয়ম মেনে ফেরত যেতে ইচ্ছুক বলে প্রবাস টাইমকে জানিয়েছেন।
আরও দেখুনঃ সুলতান কাবুসের সেই রহস্যময় চিঠিতে কি লেখা ছিল?
প্রবাস টাইমে লিখুন আপনিও। প্রবাসে বাংলাদেশি কমিউনিটির নানা আয়োজন, ঘটনা-দুর্ঘটনা, প্রবাসীদের সুযোগ-সুবিধা, সমস্যা-সম্ভাবনা, সাফল্য, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের খবর, ছবি ও ভিডিও আমাদের পাঠাতে পারেন [email protected] মেইলে।
Discussion about this post