দালালদের খপ্পরে পড়ে দেশে এবং বিদেশে সকল স্থানেই নানাভাবে হয়রানির এবং নির্যাতনের শিকার হচ্ছে বাংলাদেশিরা, আবার নির্যাতনের সেই ভিডিও পরিবারের কাছে পাঠিয়ে দালালরা হাতিয়ে নিচ্ছে ১০ থেকে ৫০ লাখ টাকা। সম্প্রতি দক্ষিণ আফ্রিকায় মানবপাচার ও অপহরণের দুটি মামলার তদন্ত শেষে বাংলাদেশি প্রতিনিধি দল বলছে, দুই শতাধিক বাংলাদেশি এসব অপরাধে জড়িত।
গত বছরের ডিসেম্বরে দক্ষিণ আফ্রিকা প্রবাসী রেজাউলকে অপহরণ করে নির্যাতনের ভিডিও পাঠানো হয় পরিবারের কাছে দাবি করা হয় ৩০ লাখ টাকা মুক্তিপণ। ১০ লাখ টাকা মুক্তিপণ দিয়েও মেলেনি রেজাউলের মুক্তি। রেজাউলকে হত্যার পর মরদেহ পুড়িয়ে দেয় অপহরণকারীরা। দিনদুপুরে দেশটিতে অপহরণের শিকার হচ্ছেন প্রবাসীরা। সিসি ক্যামেরার ফুটেজে এক বাংলাদেশিকে অপহরণ করে নিয়ে যেতে দেখা যায়। পরে অপহরণের শিকার ওই প্রবাসীকে আটকে রেখে নির্মম নির্যাতন করা হয়। পরিবারের কাছ থেকে মুক্তিপণ হিসেবে দাবি করা হয় লাখ লাখ টাকা।
বৈধ ভিসার ব্যবস্থা না থাকায় প্রতিবছর অনেক শ্রমিক অবৈধভাবে সাউথ আফ্রিকায় যাচ্ছেন। ১০ থেকে ১৫ লাখ টাকায় অন-এরাইভাল ভিসায় সেদেশে পাঠাচ্ছে একাধিক দালালচক্র। চট্টগ্রাম থেকে দুবাই হয়ে নাইরোবি, ইথিওপিয়া বা মোজাম্বিক হয়ে সাউথ আফ্রিকার সীমান্ত পার করা হয়। এক প্রবাসী বলেন, আমরা এখানে কিডন্যাপে জর্জরিত। এখন কেপডাউনে হচ্ছে, এর আগে জোহানেসবার্গে কিডন্যাপ করা হতো।
চাঁদপুরের রিয়াদ ৬ লাখ টাকায় পাড়ি দেন সাউথ আফ্রিকায়। কিন্তু একই কায়দায় অপহরণ ও নির্যাতনের ভিডিও পাঠিয়ে মুক্তিপণ দাবি করে অপহরণকারীরা। বিষয়টি গোয়েন্দা পুলিশকে জানায় পরিবার। এরপরই বাংলাদেশে পাচারকারী চক্রের সদস্যরা ধরা পড়ে পুলিশের কাছে। গোয়েন্দা পুলিশ বলছে, তাদের একটি প্রতিনিধি দল একমাস আগে গিয়েছিলেন দেশটিতে। এসব অপরাধে জড়িত ২০৭ জনের তালিকা পুলিশকে দিয়েছে ইন্টারপোল।
ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ওয়ারি বিভাগ) উপকমিশনার মুহাম্মদ আশরাফ হোসেন বলেন, বাংলাদেশ থেকে কিছু প্রবাসী সেখানে গিয়ে নিজেকে কুলাঙ্গার হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেছে। তারা অপর বাংলাদেশি ভাই, যারা কষ্ট করে সেখানে স্বালবম্বী হয়েছেন, তাদের কাছ থেকে টাকা-পয়সা নেয়ার জন্য দক্ষিণ আফ্রিকার নিগ্রোদের সঙ্গে একত্র হয়ে সার্কেল তৈরি করেছেন।
নির্যাতনের ঘটনা গোপন রাখেন প্রবাসীরা, এমন দাবি করে বাংলাদেশি হাইকমিশনার নূর-ই-হেলাল সাইফুর রহমান বলছেন, যারা আমাদের কাছে আসে না, তাদের জন্য আমাদের পক্ষে কিছু করা সম্ভব না। যদি আমাদের কাছে অভিযোগ নিয়ে আসে, মামলা করার পর তখনই কিছু করা সম্ভব। কেননা কোনো অভিযোগ না থাকলে পুলিশও কিছু করে না। অপহরণ বন্ধে ইন্টারপোলের সহায়তায় কাজ করছে গোয়েন্দা পুলিশ।
আরো পড়ুন:
বাংলাদেশের উন্নয়নের প্রশংসায় সৌদি মন্ত্রী
আমিরাতে ক্ষুদ্র ব্যবসায় বিনিয়োগে আগ্রহী হচ্ছেন প্রবাসীরা
কুয়েতে বিশ্ব কুরআন প্রতিযোগিতায় ফাইনাল রাউন্ডে নির্বাচিত তিন
পায়ুপথে স্বর্ণ এনে বিমানবন্দরে দুই প্রবাসী গ্রেফতার
ওমান থেকে বিমানের ফ্লাইট বিপর্যয়, ভোগান্তিতে শতাধিক প্রবাসী
প্রবাস টাইমে লিখুন আপনিও। প্রবাসে বাংলাদেশি কমিউনিটির নানা আয়োজন, ঘটনা-দুর্ঘটনা, প্রবাসীদের সুযোগ-সুবিধা, সমস্যা-সম্ভাবনা, সাফল্য, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের খবর, ছবি ও ভিডিও আমাদের পাঠাতে পারেন [email protected] মেইলে।
Discussion about this post