করোনা ভাইরাসের সংক্রমণরোধে সরকার প্রথম পর্যায়ে ২৬ মার্চ থেকে ৪ এপ্রিল পর্যন্ত দেশব্যাপী সাধারণ ছুটির ঘোষণা দেয়। এরপর চার দফা সেই ছুটি বাড়িয়ে আগামী ৫ মে পর্যন্ত করা হয়। এর মূল কারণ করোনার মহামারি রোধে সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিত করা। কিন্তু চারদিকে তাকালে বোঝার উপায় নেই দেশে ‘লকডাউন’ চলছে। করোনার ঝুঁকিতে আছে দেশ। এই পরিস্থিতিতেও প্রতিদিন রীতিমতো বাজারে ভিড় জমাচ্ছে মানুষ। কেউ আসছে বাজার করতে, আবার কেউ কেউ অকারণেই ভিড় করছে। গাদাগাদি করে গায়ে গায়ে ঘেঁষে দাঁড়িয়ে পণ্য কিনছে। অন্যদেরও ঝুঁকির মধ্যে ফেলছে।
সম্প্রতি কুষ্টিয়া শহর ও বিভিন্ন উপজেলার বাজারে দেখা গেছে, মানুষ অন্য স্বাভাবিক সময়ের মতোই বাজারে ভিড় করছে। সবার মুখে মাস্ক থাকলেও সামাজিক দূরত্ব কোনোভাবেই মানা হচ্ছে না। খাদ্যসহায়তা নিতে, টিসিবি থেকে পণ্য কিনতে, ১০ টাকা কেজির চাল নিতেও মানা হচ্ছে না সামাজিক দূরত্ব। এ ছাড়া জেলার বিভিন্ন এলাকায় চলছে তামাক ক্রয়-বিক্রয়। সেখানেও সামাজিক দূরত্ব মানার কোনো নিয়মনীতি নেই। কুষ্টিয়া শহরসহ বিভিন্ন এলাকার ব্যাংকে লোকে-লোকারণ্য, দীর্ঘ লাইন দেখে মনে হচ্ছে যেন করোনা ভাইরাস সম্পর্কে কোনো মাথাব্যথাই নেই তাদের কারো।
রমজান উপলক্ষে মানুষ বাজারে বেশি ভিড় করছে। রমজানের কেনাকাটা আগেই সেরে নিচ্ছে। দোকানের বাইরে দড়ি দিয়ে ঘিরে রাখা হলেও সেটা পেরিয়ে মানুষ দোকানে চলে আসছে জানিয়ে ব্যবসায়ীরা বলছেন, আমাদের পেটের তাগিদে দোকান খোলা রাখতে হচ্ছে। তবে সরকারি ঘোষণা মোতাবেক বিকেল ৩টার মধ্যেই আমরা দোকান বন্ধ রাখি। তবুও ক্রেতারা এতটাই ভিড় করে যা দেখে মনে হয়, দেশে কোনো বিশেষ পরিস্থিতি নেই। মানুষ নিজ থেকে সচেতন না হলে সরকার নানা পদক্ষেপ নিয়েও লাভ নেই বলে তারা মন্তব্য করেন।
কুষ্টিয়ার কুমারখালী উপজেলার বাঁশগ্রাম বাজারে বৃহস্পতিবার রীতিমতো জনসমাবেশের মতো উপস্থিতি দেখা গেছে। সাপ্তাহিক ওই বাজারটিতে হাজার হাজার মানুষের উপস্থিতিই জানান দেয়, করোনা তাদের কাছে কিছুই না। ওই উপজেলা প্রশাসনের উদাসীনতার কারণেই সেখানে এতো মানুষ এক সঙ্গে জড়ো হতে পেরেছে বলে অনেকে মন্তব্য করেন।
এছাড়া ব্রিটিশ আমেরিকান টোব্যাকো (বিএটিবি), জাপান টোবাকোসহ বিভিন্ন কোম্পানির তামাক ক্রয় কেন্দ্রে সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে তামাক ক্রয় করার কথা থাকলেও মানেনি অনেকেই। তামাক চাষিদের যদি নিবন্ধন বা তালিকা থাকতো, তাহলে তালিকা ধরে কোম্পানির গাড়ি পৌঁছে যাবে কৃষকের বাড়িতে। তামাক লোড করে চলে আসবে। কোম্পানি তালিকা অনুযায়ী সরবরাহকৃত তামাকের মূল্য আপাতত ব্যাংক হিসাবে না দিয়ে মোবাইল ব্যাংকিং কার্যক্রমের মাধ্যমে অথবা নগদ পরিশোধ করা যেতে পারে। এতে ভিড় এড়িয়ে বেচাকেনা চলবে এবং করোনা সংক্রমণও রোধ করা সম্ভব হবে অনেকে মনে করছেন।
দৌলতপুর উপজেলাতেও একইভাবে সরকারি নির্দেশনা মানছে না সাধারণ মানুষ। গণমাধ্যমকর্মীদের কাছে প্রতিনিয়ত সচেতন লোকজন মোবাইল ফোনে জানাচ্ছেন, উপজেলার প্রতিটি এলাকায় সরকারি নির্দেশনা উপেক্ষা করে সবকিছুই চলছে অনেকটা স্বাভাবিকভাবে। উপজেলা প্রশাসনের সঠিক তদারকির অভাবকেই এর কারণ হিসেবে মনে করা হচ্ছে। পানের টেবিল থেকে শুরু করে কাপড়ের দোকান, কসমেটিক, স্যান্ডেলের দোকান, চায়ের দোকানসহ প্রায় সব দোকানই খোলা থাকছে।
https://www.youtube.com/watch?v=s_BPvllV0eo
প্রবাস টাইমে লিখুন আপনিও। প্রবাসে বাংলাদেশি কমিউনিটির নানা আয়োজন, ঘটনা-দুর্ঘটনা, প্রবাসীদের সুযোগ-সুবিধা, সমস্যা-সম্ভাবনা, সাফল্য, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের খবর, ছবি ও ভিডিও আমাদের পাঠাতে পারেন [email protected] মেইলে।
Discussion about this post